রাজপ্রাসাদ লক্ষ করে উড়ে এল ক্ষেপণাস্ত্র, কোনও মতে প্রাণে বাঁচলেন মন্ত্রী থেকে আমলারা
ঘটনার সময় সৌদি আরবের রাজপ্রাসাদে সে দেশের সরকারের উচ্চপদস্থ আমলাদের বৈঠক চলছিল। এমনকী, এই বৈঠক শেষে একটি অনুষ্ঠানে এক মন্ত্রীও হাজির থাকার কথা ছিল।
রাজপ্রাসাদ লক্ষ করে উড়ে আসছে মৃত্যুদূত। এটা ধরে ফেলেছিল সরকারি নজরদারী বাহিনী। মুহূর্তের মধ্যে তা আকাশেই প্রতিরোধ করা হয়। এতটাই অলক্ষ্যে এই ঘটনা ঘটেছে যে অধিকাংশ মানুষই এই ঘটনার কথা জানেন না। মঙ্গলবার এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে। জানা গিয়েছে, ওমান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রটি রাজপ্রাসাদ লক্ষ করে ছোড়া হয়েছিল।
ঘটনার সময় সৌদি আরবের রাজপ্রাসাদে সে দেশের সরকারের উচ্চপদস্থ আমলাদের বৈঠক চলছিল। এমনকী, এই বৈঠক শেষে একটি অনুষ্ঠানে এক মন্ত্রীও হাজির থাকার কথা ছিল। যদিও, এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়াই দেয়নি সৌদি সরকার।
ওমানের হাউথি বিদ্রোহের সঙ্গে যুক্ত এক ব্যক্তি নিজেকে এই বিদ্রোহের মুখপাত্র বলে দাবি করেছেন, তিনি জানিয়েছেন, সৌদি আরবের রাজপ্রাসাদ আল-ইয়ামামা রাজপ্রাসাদ লক্ষ করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল। এই ক্ষেপণাস্ত্রের নিশানায় ছিলেন সৌদির বেশকিছু নেতা। সে সময় এরা রাজপ্রাসাদে উপস্থিত ছিলেন বলেও জানিয়েছেন ওই মুখপাত্র।
না সৌদি সরকার না রাজপরিবার- কেউ এই হামলা নিয়ে মুখ খোলেননি। সৌদি সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিকেশন অবশ্য টুইটার অ্যাকাউন্টে জানিয়েছে, মঙ্গলবার রিয়াধের দক্ষিণ আকাশে ইরানী-হাউথি ক্ষেপণাস্ত্র-কে চিহ্নিত করেছিল যৌথ বাহিনী।
ঘটনার সময় সৌদি রাজপ্রাসাদে ছিলেন এক সাংবাদিক। তিনি জানিয়েছেন, আচমকাই এক বিকট বিস্ফোরণের শব্দে চারিদিক কেঁপে উঠেছিল। তিনি জানিয়েছেন, এরপর তাঁর মতো আরও অনেকেই রিয়াধের উত্তর-পূর্ব আকাশে বিশাল ধোঁয়া দেখতে পায়।
চলতি বছরের ৪ নভেম্বরও রিয়াধের কিং খালদ এয়ারপোর্টের উপরে একটি ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশেই প্রতিরোধ করেছিল সরকারি বাহিনী। ওমানের হাউথি বিদ্রোহকে নির্মূল করতে গত কয়েক বছর ধরেই সৌদি সরকার আকাশপথে হামলা চালাচ্ছে। হাউথি জঙ্গিরা ওমানের রাজধানী সানা-সহ সে দেশের বেশকিছু অংশ দখল করে আছে। এই জঙ্গি আন্দোলনকে প্রতিহত করতেই উদ্যোগী সৌদি সরকার। রাষ্ট্রসংঘের পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সৌদি-র আকাশপথে হামলায় ইতিমধ্যেই ওমানে গত ৬ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ১৩৬ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এরা সকলেই সাধারণ নাগরিক। হাউথি বিদ্রোহের সঙ্গে এদের কোনও সম্পর্ক নেই।
অন্যদিকে, সৌদি সরকার দীর্ঘদিন ধরেই হাউথি-দের ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোলা-বারুদ সরবরাহের অভিযোগ আনছে ইরানের বিরুদ্ধে। এমনকী, এর ফলে রাষ্ট্রসংঘের নীতি-কেও তেহরান লঙ্ঘন করছে বলে সৌদি-র অভিযোগ। যদিও, এই অভিযোগ উড়িয়েছে ইরান।