তালিবান উত্থানে আমেরিকাকে সহায়তাকারি সোলেইমানি মার্কিনী শত্রুতে পরিণত হন
ইরাকে ছাগল চোর হিসাবেই পরিচিত ছিলেন কাশেম সোলেইমানি
ইরানের
শাসনব্যবস্থায়
গুরুত্বপূর্ণ
একজন
ব্যক্তি
জেনারেল
কাশেম
সোলেইমানি।
তিনি
এমনই
এক
ব্যক্তিত্ব
ছিলেন,
ইরানের
অনেকেই
বিশ্বাস
করতেন
যে
দেশের
সুপ্রিম
নেতা
আলি
খামেনি
তাঁকে
তাঁর
উত্তরসূরি
হিসাবে
প্রস্তুত
করেছেন।
বৃহস্পতিবারই
ইরান
সমর্থিত
শিয়া
সেনাবাহিনী
হামলা
চালায়
মার্কিন
দূতাবাসে,
চুপ
করে
না
থেকে
আমেরিকার
প্রেসিডেন্টও
নির্দেশ
দেন
সোলেইমানিকে
হত্যার।
মিত্র থেকে আমেরিকার শত্রু হলেন
ইরাকের ৪০ জন শিয়া সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্সেস (পিএমএফ) এর অন্যতম কাটাব হিজবুল্লাহের নেতা আবু মাহদী আল-মুহানদিস ও সোলাইমানির মৃত্যু এবং এই হত্যার পিছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিশ্চিত করেছে উভয় মার্কিন ও ইরান। ইরানে সোলেমানি খুবই ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি বলে পরিচিত ছিলেন। ইরানের সংবাদ চ্যানলগুলিতে তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মুখ। আমেরিকার শত্রু হওয়ার আগে, সোলেমানি আমেরিকাতে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার পর আফগানিস্তানে আমেরিকার সাফল্যে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রসঙ্গত ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আল কায়দা যাত্রীবাহি বিমান হাইজ্যাক করে হামলা চালায় আমেরিকার ওপর। তালিবান অধ্যুষিত আফগানিস্তান থেকে আল-কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেন গোটা ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সময় আমেরিকা আল-কায়দার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কার্যকরী কোনও বুদ্ধি খুঁজছিল, যা দেশে বেসামরিক সরকার গড়ে তুলবে। ঠিক সেই সময়ই আমেরিকার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় কুদস ফোর্সের প্রধান কাশেম সোলেইমানি এবং আফগানিস্তানে গড়ে ওঠে তালিবান শক্তি।
সোলেইমানির কুদস ফোর্স
কুদসের অর্থ পবিত্র। পার্সিয়ান কুদসে জেরুজালেমের একটি উল্লেখ রয়েছে, এটি ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের দ্বারা দাবি করা একটি শহর। ইরানের ইসলামিয়া বিপ্লবের সময়ই ১৯৭৯ সালে কুদস ফোর্স গঠন করা হয়। এই দলটি ততদিন পর্যন্ত ছিল যতদিন না গোটা ইরানের ওপর সুপ্রিম নেতা আয়াতোল্লা কোহমেইনির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে আসে। সোলাইমানি তাঁর বাহিনীর পুরো কাজকর্মের জন্য জবাবদিহি করেন শুধু আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে। তাই ইরানিরাও ‘কুদস্ ফোর্স'-এর সংখ্যা ও সামর্থ্য নিয়ে সামান্যই ওয়াকিবহাল । এই ‘ফোর্স'-এর সঙ্গে কাজ করছে লেবাননের হিজবুল্লাহ, ফিলিস্তিনের হামাস ও ইসলামিক জিহাদ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের ‘ফাতেমিয়ুন' আর ‘জাইনাবিয়ুন' নামের মিলিশিয়া গ্রুপ এবং ইয়েমেনের হুতিরা।
ছাগল চোর তকমা
ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় (১৯৮০-৮৮) সোলেমানি ইরানে সুনাম অর্জন করেছিলেন। তিনি একটি বিশেষ বাহিনীর অংশ ছিলেন এবং ইরাকের সাদ্দাম হুসেনের বাহিনীর উপর অনেক যুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন। বহু যুদ্ধে বিজয়ের পরে সোলেমানি তার কাঁধে ছাগল নিয়ে ফিরে আসতেন কারণ ইরাকিরা তাকে ‘ছাগল চোর' হিসাবে ডাকতেন। ১৯৯৮ সালে কুদসের প্রধান হন সোলেমানি। তিন বছর পর আল-কায়দা পাঁচটি বিমান হাইজ্যাক করে আমেরিকার ওপর হামলা চালায়। সেই সময় আল-কায়দাকে পরাস্ত করতে আমেরিকাকে সাহায্য করেন সোলেমানি।