
শূন্য কোভিড নীতিতে চিনে বাড়ছে অসন্তোষ, একাধিক শহরে শি জিনপিং বিরোধী বিক্ষোভ
ক্রমেই চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। চিনা প্রশাসনের লাল চোখকে অগ্রাহ্য করে বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ। রবিবার চিনের কয়েকটি শহরে শি জিনপিং বিরোধী বিক্ষোভ দেখা দেয়। চিনের পশ্চিমে একটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চিনের সাধারণ মানুষের অভিযোগ করোনা মহামারীর জেরে বেজিং প্রশাসনের অনমনীয় মনোভাবের জন্য এই মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে একটি বহুতলে ১০ জনের মৃত্যু হয়। চিনের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা মনে করেন, ১০ জনের মৃত্যুর জন্য চিন প্রশাসনের অনমনীয় মনোভাব দায়ী। নতুন করে চিনে করোনা মহামারীর প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। একাধিক অঞ্চলে নতুন করে চিনা প্রশাসন লকডাউন করে দিয়েছে। জিনজিয়াংয়ের ওই বহুতলে একাধিক বাড়ি করোনা মহামারীর জন্য তালাবন্ধ করে রেখেছিল চিনা প্রশাসন। যার জেরে করোনা মহামারীর সময় বাইরে বের হতে না পেরে অগ্নিদগ্ধ হয়ে সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
চিনের তিন বছর ধরে করোনা নিয়ে অনমনীয় মনোভাব সাধারণ মানুষের মনে নতুন করে বিক্ষোভের সঞ্চার করে। চাপা অসন্তোষ সাধারণ মানুষের মনে বাড়তে থাকে। সেই অসন্তোষ ভয়াবহ আকার ধারণ করে যখন অগ্নিকাণ্ডের কারণে মৃত্যু হয় সাধারণ মানুষের। চিনের সব থেকে জনবহুল শহর ও দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী সংহাইয়ের উলুমুকি রোডের ওপর সাধারণ মানুষ জড়ো হতে থাকেন শনিবার ভোর রাত থেকে। ক্রমেই জড়ো হওয়ার সাধারণ মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। রবিবার ভোরে তা বিক্ষোভের আকার ধারণ করে।
সাধারণ মানুষ চিনা সরকারের লকডাউনের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সংহাইয়ে সাধারণ মানুষের একটি ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। চিনের স্থানীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হয়েছে। বিক্ষোভরত সাধারণ মানুষ চিৎকার করতে থাকেন চিনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে শি জিনপিংয়ের উৎখাত করতে হবে। কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে উলুমুকিকে মুক্ত করতে হবে। চিন এই ধরনের বিক্ষোভ দেখতে অভ্যস্ত নয়। চিনা প্রশাসনের বিরোধিতার ফলাফল ভয়ঙ্কর শাস্তি। সেই ভয়ঙ্কর শাস্তির ভয়কে উড়িয়ে বিক্ষোভে নামেন সাধারণ মানুষ। সাংহাইয়ে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভে চিনা প্রশাসন প্রথমে খানিকটা হতবম্ব হয়ে যায়। পরে বিক্ষোভ ভাঙতে আন্দোলনরত নাগরিকদের ছত্রভঙ্গ করতে উদ্যত হন।
চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের স্বক্ষরিত শূন্য কোভিড নীতি ক্রমেই দেশের সাধারণ নাগরিকদের মনে অসন্তোষ বৃদ্ধি করছে। শূন্য কোভিড নীতিতে করোনা মহামারী রোধ করতে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়। এমনকী করোনা আক্রান্ত পরিবারের সদস্যরা যাতে বাইরে বের হতে না পারেন, বাড়িতে তালা দিয়ে রাখা হয়। চলতি বছরের শুরুর দিকে করোনা মহামারীর জেরে চিনের বাণিজ্যিক শহর সংহাইয়ে পাঁচ সপ্তাহের বেশি লকডাউন চলে। যার ফলে চিনের অর্থনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চিন থেকে অনেক বিদেশি সংস্থা নিজেদের ব্যবসা তুলে নেয়। যার জেরে সাধারণ মানুষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।