ভারতের জ্বালানি সরবরাহে বিধি-নিষেধ জারি করা উচিত নয়! জি-২০ সম্মেলনে ব্যাখ্যা দিলেন নরেন্দ্র মোদী
ভারতের জ্বালানি সরবরাহে বিধি-নিষেধ জারি করা উচিত নয়! জি-২০ সম্মেলনে ব্যাখ্যা দিলেন নরেন্দ্র মোদী
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ভারতের শক্তি সরবরাহের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ আরোপ করা উচিত নয়। পাশাপাশি বিশ্বের নেতাদের জ্বালানির বাজারে একটা স্থিতিশীল অবস্থা আনতে আবেদন করে তিনি। প্রধানমন্ত্রী ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির কথা তুলে ধরেন।
বিশ্বজুড়ে আর্থিক সঙ্কট
বালিতে জি-২০ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, গ্লোবাল সাপ্লাই চেন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এরফলে সারা বিশ্বে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের আকাল হচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। যার ফলে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্বের প্রতিটি দেশের দরিদ্র নাগরিকরা। তিনি বলেন, 'স্বীকার করতে বাধা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক সঙ্কট ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে রাষ্ট্রসংঘ। আমরা সবাই উপযুক্ত আর্থিক সংস্কার করতে ব্যর্থ হয়েছি। যার জেরে এই সঙ্কট দেখতে পাওয়া গিয়েছে।'
ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ইউক্রেনে যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানান। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রসঙ্গে টেনে আনেন। তিনি বলেন, 'গত শতাব্দীতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রভাব প্রতিটি দেশে পড়েছে। তারপর সেই সময়ের নেতারা শান্তির পথ গ্রহণ করেন। বিশ্বে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিয়ন্ত্রণে আনতে গুরুতর ভূমিকা গ্রহণ করেন। এখন আমাদের পালা। একটি নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা আমাদের গড়ে তুলতে হবে। কোভিড পরবর্তী সময়ে ভূরাজনৈতিক ও আর্থিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। আলোচনা ও সংস্কারের মাধ্যমে তা সমাধান করতে হবে।'
পরবর্তী জি-২০ সম্মেলন
পরবর্তী জি-২০ সম্মেলন ভারতে হতে চলেছে। এই প্রসঙ্গে নরেন্দ্র মোদী বলেন, 'বিশ্বে শান্তি, সম্প্রীতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, আগামী বছর বুদ্ধ ও গান্ধীর পবিত্র ভূমিতে জি-২০ সম্মেলন হবে। সেখানে আমরা বিশ্বকে শক্তিশালী শান্তির বার্তা দিতে সক্ষম হবো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত খাদ্য ও শক্তির নিরাপত্তা এবং বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবে।' ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ব্রিটেনর প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সহ জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমবারের জন্য ঋষি সুনকের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাৎ হয়। জি-২০ সম্মেলনের পাশাপাশি জো বাইডেন ও নরেন্দ্র মোদী কিছু সময়ের জন্য পৃথকভাবে বৈঠক করেন।
জি-২০ সম্মেলনে গুরুত্ব ভূ রাজনৈতিক অস্থিরতা
জি-২০ সম্মেলনে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের বিষয়টি গুরুত্ব পায়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ১ নভেম্বর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, এখন যুদ্ধের সময় নয়। জি-২০ সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। জি-২০ সম্মেলন এড়িয়ে গিয়েছন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনের সামরিক অভিযানের পর পশ্চিমি দেশগুলো নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অস্বস্তি এড়াতেই পুতিন জি-২০ সম্মেলনে উপস্থিত হয়নি। অন্যদিকে, জি-২০ সম্মলনে আলোচনার জন্য জায়গা করে নিয়েছে, আর্থিক সঙ্কট ও মুদ্রাস্ফীতি।