চিনকে কোণঠাসা করতে বাংলাদেশকে পাশে রেখে তিস্তা চুক্তি চাইছেন মোদী, রাজি হবেন কি মমতা
কেন্দ্র ও বাংলাদেশ সরকার শেষ চেষ্টা করতে চলেছে তিস্তা চুক্তি বাস্তাবায়িত করার জন্য। মমতা বারবার বলেছেন, তিস্তা চুক্তি হলে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি জল না পেয়ে শুকিয়ে যাবে। তাই তাঁকে রাজি করানোর চেষ্টা হবে।
তিস্তা জলবণ্টন চুক্তি আটকে রয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য। রাজ্যের সম্মতি না মেলায় কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের আপত্তি না থেকেও তিস্তা চুক্তি হয়নি। গতবছরে শেখ হাসিনা ভারত সফরে এসে আতিথেয়তা পেয়েছেন। তবে তিস্তার পানি পেলেন না বলে হা হুতাশ করে ফিরে গিয়েছেন। তবুও শেখ হাসিনার হাতে মমতা শাড়ি তুলে দিলেও জল নিয়ে ইতিবাচক সাড়া দেননি।
তবে এবার কেন্দ্র ও বাংলাদেশ সরকার শেষ চেষ্টা করতে চলেছে তিস্তা চুক্তি বাস্তাবায়িত করার জন্য। মমতা বারবার বলেছেন, তিস্তা চুক্তি হলে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি জল না পেয়ে শুকিয়ে যাবে। যা কোনওমতেই তিনি মেনে নেবেন না। আর তাই প্রথম থেকেই বিরোধিতা করে আসছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, নয়াদিল্লি এখন বাংলাকে রাজি করানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ সরকারকেও নাকি সেকথা জানানো হয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল সোলার অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেন্সে মোদী নাকি তিস্তা চুক্তির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা বলেছেন।
বাংলাদেশ বারবার তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে তদ্বির করছে। গ্রীষ্মের সময়ে উত্তর বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা জল না পেয়ে শুকিয়ে যায়। তিস্তা চুক্তি না হলে বাংলাদেশের সমস্যা আরও বাড়বে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একথা জানালে প্রত্যুত্তরে মোদী এই আশ্বাস দিয়েছেন।
ঘটনা হল, এবছরেই বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। তিস্তা চুক্তি তার আগে হয়ে গেলে শেখ হাসিনা সরকার ফের একবার ক্ষমতায় ফিরতে পারবে সহজেই। সেক্ষেত্রে ভারত যেমন বন্ধু হাসিনাকে ক্ষমতায় থাকতে দেখবে তেমনই বন্ধুত্বও অটুট থাকবে। মোদী সরকারের গা ছাড়া ভাবের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশকে বুঝিয়ে সেদেশে বেশ কয়েকটি প্রকল্পে কাজ করতে ঢুকে পড়েছে চিন। সেক্ষত্রে চিনকে সরিয়ে পয়লা নম্বর বন্ধুদেশের তকমা নিজেদের সঙ্গে রাখতে গেলে ভারতকে তিস্তা চুক্তির দিকে নজর ঘোরাতেই হবে। আর সেক্ষেত্রে কেন্দ্র মমতাকে কীভাবে রাজি করায় সেটাই এখন দেখার।
এবছরেই নরেন্দ্র মোদী একসঙ্গে নেপাল, ভূটান ও বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন। চিনকে কোণঠাসা করতে এই তিন বন্ধু দেশকে পাশে রাখা ভারতের জন্য বিশেষ জরুরি। নেপাল ও বাংলাদেশে চিন প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছে। এদিকে ডোকলাম এলাকায় গা জোয়ারি করে ভূটানকে চাপে রাখছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের মনজয় করতে তিস্তা চুক্তিই একমাত্র ভরসা।