দক্ষিণ চিন সাগরে ড্রাগন বাহিনীর চোখ রাঙানি, পাল্টা জবাবে আমেরিকার জুজু দেখাল ফিলিপিন্স
দক্ষিণ চিন সাগরে ক্রমেই তৈরি হচ্ছে যুদ্ধের পরিস্থিতি। দক্ষিণ চিন সাগরে ক্রমাগত মহড়া দিয়ে চলেছে চিনা বাহিনী। জানা গিয়েছে, তাইওয়ান প্রণালীর মিডিয়ান লাইন অতিক্রম করে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়াচ্ছে চিনা সেনা। শুধু তাইওয়ান নয়, দক্ষিণ চিন সাগরে আমেরিকার বন্ধু হিসাবে পরিচিত ফিলিপিন্সের উপরও চিনের রক্তচক্ষু ঘুরঘুর করছে।
ফিলিপিন্সের স্পষ্ট বার্তা
ফিলিপিন্সের স্পষ্ট বক্তব্য, যদি চিন কোনও রকম সামরিক গতিবিধি দেখা যায়, তবে ফিলিপিন্স আমেরিকার থেকে সাহায্য চাইতে এক মুহূর্তের জন্যেও পিছপা হবে না। প্রসঙ্গত, এর আগে দক্ষিণ চিন সাগরে ভারত ও আমেরিকার যৌথ টহলদারির খবরে তীব্র চাঞ্চল্য তৈরি হয় এশিয়া মহাদেশের বিশাল জলসীমায়। এই দক্ষিণ চিন সাগরকে নিজেদের এলাকা বলে দাবি করে চিন। ভারত ও দক্ষিণ চিন সাগরে আমেরিকার বন্ধু রাষ্ট্রের উপর ক্রমেই আগ্রাসন বেড়েছে চিনের।
সামরিক হুমকি বাড়িয়ে চলেছে চিন
গত কয়েক মাস ধরে এ অঞ্চলে সামরিক হুমকি বাড়িয়ে চলেছে চিন। তারা তাইওয়ান দখলে নেওয়ার পরিকল্পনা জোরদার করছে। দীর্ঘমেয়াদি প্রবণতা লক্ষ করলে দেখা যাবে, চিন ধীরে ধীরে তার সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়ে তুলছে। বিশেষত তাইওয়ানের নিকটবর্তী জলসীমা ও আকাশসীমায় তারা এ কাজ করে চলছে। তাদের দিক থেকে হুমকি বেড়েই চলছে।
দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন-চিন স্নায়ুযুদ্ধ
দক্ষিণ চিন সাগরে চলছে যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আর চিনের বর্ধিঞ্চু সামরিক শক্তি প্রদর্শন। এরই মধ্যে আমেরিকার এই পদক্ষেপে তাইওয়ানকে নিজেদের ভূ-সীমানার অংশ দাবি করা চিন ক্ষুব্ধ হয়েছে। ব্যস্ত আন্তর্জাতিক জলপথের অংশ তাইওয়ানের এই প্রণালী। এই বিষয়ে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, প্রয়োজনের তাগিদে যেকোনও দেশের জাহাজ এখানে প্রবেশ করতে পারে। আর এবার একই সুরে চিনকে হুমকি দিল ফিলিপিন্স।
দক্ষিণ চিন সাগরের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পেতে মরিয়া বেজিং
আদতে সম্পদ সমৃদ্ধ দক্ষিণ চিন সমুদ্র সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য চিন সব সময়ই নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে৷ 'ঐতিহাসিক অধিকারের' উপর ভিত্তি করে দক্ষিণ চিন সমুদ্রের উপর চিনের কর্তৃত্বকে ২০১৬ সালের সালিশির মাধ্যমে প্রত্যাখান করা হয়েছিল৷ কিন্তু তারপরও এই দক্ষিণ চিন সমুদ্রের উপর থেকে নিজেদের নজর সরায়নি চিন৷
বিপুল পরিমাণের বাণিজ্য
দক্ষিণ চিন সমুদ্র বিশ্বের ব্যস্ততম সামুদ্রিক বাণিজ্য রুট৷ এই পথ দিয়ে বার্ষিক ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়৷ যার ফলে শুধুমাত্র ক্ষুদ্র প্রতিবেশী অঞ্চলগুলির উপর নয়, একাধিক দেশগুলির উপরও এই সামুদ্রিক বাণিজ্য রুটের প্রভাব রয়েছে৷ এছাড়া পূর্ব চিন সাগরে চিনের দাবিতেও ঝামেলায় পড়েছে আমেরিকা।
একাধিক দেশের উপর প্রভাব ফেলছে চলমান অস্থিরতা
উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের সঙ্গে চিনের ইয়েলো সমুদ্র ও পূর্ব চিন সমুদ্রের অর্থনৈতিক জোনগুলি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে৷ তার উপরে চিন জাপানের সেনকাকু বা ডিয়াওইউ দ্বীপগুলির উপর কর্তৃত্ব দাবি করে৷ এই এলাকার মাধ্যমে আন্তঃঅঞ্চল ও বিশ্ব বাণিজ্য হয়৷ যার ফলে চিনের এই এলাকার উপর কর্তৃত্ব দাবি একাধিক দেশের উপর প্রভাব ফেলছে।