সিরিয়ায় রাতের অন্ধকারে রুদ্ধশ্বাস হামলায় বাগদাদিকে কিভাবে টার্গেট করে মার্কিন সেনা! প্রকাশ্যে ভিডিও
চারিদিক শুনসান। তারপর তুমুল বোমা বর্ষণ। এরপর রাতের অন্ধকারে আবছা করে দেখা যাচ্ছে বেশ কয়েকটি দৃশ্য। শুধুই নাইটভিশন ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে কালো ধোঁয়া উঠে আসছে 'টার্গেট' করা জায়গাটি থেকে। আকাশপথ থেকে তোলা ভিডিওতে সিরিয়ার মাটিতে বাগদাদির ডেরায় অভিযানের এমনই সমস্ত দৃশ্য তুলে ধরেছে মার্কিন সেনা। চরম নাটকীয় সেই অভিযানে রীতিমতো গায়ে কাঁটা দেওয়া বেশ কিছু মুহূর্ত উঠে এসেছে এই ভিডিওতে।
|
নাইট ভিশন ক্যামেরা ও বাগদাদির ডেরা
মার্কিন সেনার হেডকোয়াটার্স পেন্টাগনের তরফে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সিরিয়ার রুক্ষ মরুভূমিতে একটি জনমানবহীন জায়গায় একটি বাড়ি। সেই বাড়ি কার্যত মরুপ্রাসাদ। বাড়ির চারদিকে ঘেরা রয়েছে উঁচু পাঁচিল। সেই জায়গার সামনেই দেখা যাচ্ছে কালো কালো কিছু বিন্দু যেন হাঁটাচলা করছে। মূলত ওই 'কালো বিন্দু'ই মার্কিন সেনা।
|
কেন বাড়িটিকে নিশানা করে ধ্বংস করা হয় ?
মার্কিন সেনার দাবি, বাগদাদির বাড়িটিকে ধ্বংস করার মূল উদ্দেশ্যই ছিল যাতে তা পরবর্তীকালে কোনও পীঠস্থান হিসাবে জঙ্গিরা গড়ে তুলতে না পারে। আইএস এর মতো কুখ্য়াত জঙ্গি সংগঠনের রূপকে আলোকোজ্জ্বল যেন কেউ কিছুতেই না করতে পারে তার জন্যই আগে বাগদাদির ডেরা ধ্বংস করে মার্কিন সেনা।

তুর্কী আক্রমণ নয়, চাঁদনি রাতই সাহায্য করেছে মার্কিনিদের
পেন্টাগন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন সেনার এই হামলা নিঃসন্দেহে একটি বড় সাফল্য। তবে ,সিরিয়ায় তুর্কি হানা বা , সিরিয়া সীমান্ত থেকে মার্কিন সেনার সরে আসে তাঁদের বাড়তি মাইলেজ দেয়নি এই হামলায়। বরং রাতে চাঁদের আলো তাঁদের অনেক সূবিধা করে দিয়েছে।

শিশুদের নিয়ে সুড়ঙ্গে বাগদাদি
পেন্টাগন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ৩ শিশু নয় , ২ শিশুকে 'ঢাল' বানিয়ে সুড়ঙ্গে আত্মগোপনের ছক কষেছিল বাগদাদি। আর মার্কিন সেনার তাড়া খেয়ে একমুখ বন্ধ সুড়ঙ্গে ঢুকে শেষপর্যন্ত সুইসাইড ভেস্ট বানিয়ে আত্মহননের পথকেই বেছে নেয় এই কুখ্যাত জঙ্গি।

বাগদাদির অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি ও 'মেসেঞ্জার সিস্টেম'
মার্কিন হানার আগে তুর্কী সীমান্ত থেকে ৪ মাইল দূরে ডেরা বেঁধেছিল বাগদাদি। বহু আইএস জঙ্গিই জানতনা তাদের নেতা কোথায় থাকে। এমনই দাবি মার্কিন সেনার। কোনও মতেই বাগদাদি ইন্টারনেট ব্যবহার করত না। ফলে বাগদাদির অবস্থান সম্পর্কে জানা কঠিন হয়ে যাচ্ছিল মার্কিন সেনার পক্ষে। পরে তাঁরা জানতে পারেন, যে বাগদাদি একটি বিশেষ 'মেসেঞ্জার সিস্টেম' ব্যবহার করে সংযোগ চালাত। সেই ব্যবস্থা পনায় দূতকে ব্যবহার করা হত। অনেকটা ঠিক মধ্যযুগীয় রাজা-সম্রাটদের আমলে যা হত, সিরিয়ায় সেই ব্যবস্থাপনাই চালু করেছিল বাগদাদি।

পাল্টা আক্রমণের আশঙ্কা
মার্কিন সেনা যখন বাগদাদিকে নিশানা করতে শুরু করে, তখন তাঁরা মনে করেছিল যে পাল্টা আইএসও কোনও হামলা করবে। সেভাবেই প্রস্তুত ছিল সেনা । ধীরে ধীরে বাগদাদির এলাকার আশপাশ দিয়ে নিজেদের অবস্থানও সুরক্ষিত করছিল মার্কিন সেনা। তবে শেষমেশ কোনও পাল্টা হানা হয়নি।