মস্তিষ্কের জটিল অস্ত্রোপচারের মাঝেই বেহালায় সুর তুলছেন রোগী
মস্তিষ্কের জটিল অস্ত্রোপচারের মাঝেই বেহালায় সুর তুলছেন রোগী
চলছে মস্তিষ্কের জটিল অস্ত্রোপচার। কিন্তু ডাগমার টার্নার বেহালা বাজানো থামাননি। নাকে–মুখে নল লাগানো অবস্থাতেই তিনি বেহালায় সুর তুলে চলেছেন। লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কের অস্ত্রোপচার চলাকালীন চিকিৎসকদের নির্দেশেই তিনি বেহালা বাজাচ্ছিলেন।
অস্ত্রপচারের সময় বেহালা বাজানোর নির্দেশ চিকিৎসকদের
চিকিৎসকদের উদ্দেশ্য ছিল টিউমার অপরেশনের সময় যাতে ৫৩ বছরের পেশাগত বেহালা বাদকের সঙ্গীতের ক্ষমতা কোনওভাবে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। তাই টিউমার অস্ত্রোপচারের সময় ডাগমারকে বেহালা বাজানোর জন্য বলা হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, পরীক্ষায় ধরা পড়ে, ডাগমারের টিউমারটি রয়েছে ফ্রন্টাল লোবের ডান দিকে। চিকিৎসকরা দেখেন, বেহালা বাজানোর জন্য যখন ডাগমার তাঁর বাঁ হাতটি ব্যবহার করছেন, তখন মস্তিষ্কের যে অংশগুলি সক্রিয় হয়ে উঠছে সেগুলি টিউমারের গা-ঘেঁষা। বেহালা বাজানোর জন্য শরীরের এই অংশটি অত্যন্ত সংকটজনক হয়ে ওঠে। ক্রেডিট কার্ডের আয়তন যতটা ওই অংশগুলির সঙ্গে টিউমারের দূরত্ব ছিল ততটাই। অর্থাৎ সেটি বাদ দিতে গেলে ডাগমারের বাঁ হাতের সুক্ষ্ম শৈল্পিক গতিবিধি চিরতরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এই প্রথমবার এ ধরনের অস্ত্রোপচার
১৮ ফেব্রুয়ারি ডাগমারের বিবৃতি এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। যেখানে ডাগমার বলেন, ‘বেহালার সঙ্গে আমার আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। আমার যখন দশ বছর বয়স তখন থেকে বেহালা বাজাই আমি। আমার এই ক্ষমতা হারিয়ে যাবে এটা ভাবলেই আমার মন ভেঙে যায়।' স্নায়ু বিশেষজ্ঞ ডাঃ কেইয়ুমার্স আশকান এই সৃজনজীল পরিকল্পনাটি করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ফি বছর ৪০০-র কাছাকাছি টিউমার অপারেশন করি। সেখানে রোগীকে জাগিয়ে দেখা হয় তাঁর ভাষা ব্যবহারের ক্ষমতা অক্ষত রয়েছে কি না। কিন্তু এটা প্রথমবার যে আমরা রোগীকে কোনও বাদ্যযন্ত্র বাজানোর জন্য বললাম।'
সফল অস্ত্রোপচার
এই অস্ত্রোপচারের আগে মেডিক্যাল বিশেষজ্ঞদের একটি দল ডাগমারের মস্তিষ্কের টিউমার নিয়ে গবেষণা করেন এবং তিনি যখন বেহালা বাজাবেন তখন তাঁর মস্তিষ্কের কোন দিকটা সক্রিয় থাকবে। তবে চিকিৎসকরা টিউমারের ৯০ শতাংশের বেশি বাদ দিয়ে দিয়েছেন। আশপাশের এলাকা যেখানে তার ‘আগ্রাসনের' আঁচ টের পাওয়া যাচ্ছিল, সেগুলিও বাদ পড়েছে। তবে বেহালা ও ছড়ের সঙ্গে শিল্পীর সম্পর্কে ইতি পড়েনি। ডাগমার অস্ত্রোপচারের পরবলেন, ‘আমি খুবই আশাবাদী যে শীঘ্রই আমি অর্কেস্ট্রা দলে ফিরতে পারব।'
'ভারতের বিরোধিতা করলেই গুলি করে হত্যার আইন আনা হোক', দাবি দেশের মন্ত্রীর