১৯ বছরেরই মাদক ব্যবসায়ী, সুন্দরী নায়িকা স্ত্রী, দুবাই যাচ্ছি বলে বেরিয়েছিল বিমান ছিনতাইবাজ পলাশ
ছোট থেকে বিপথগামী। ২০১১ সালে মাদ্রাসা থেকে পাস করেই সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়েছিল পলাশ। কিন্তু, সেখানেই সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। পড়াশোনা অর্ধসমাপ্ত রেখেই ঢাকায় পাড়ি জমায় মোহম্মদ পলাশ।
ছোট থেকে বিপথগামী। ২০১১ সালে মাদ্রাসা থেকে পাস করেই সোনারগাঁও ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হয়েছিল পলাশ। কিন্তু, সেখানেই সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। পড়াশোনা অর্ধসমাপ্ত রেখেই ঢাকায় পাড়ি জমায় মোহম্মদ পলাশ আহমেদ। বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী সংস্থা রাব-এর সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশ যে মাদক ব্যবসায়ী তার প্রমাণ তাদের ডেটাবেস। কারণ, ডেটাবেসে পলাশ নামে থাকা এক ব্যক্তির আঙুলের ছাপের সঙ্গে বিমান ছিনতাই-এর ঘটনায় নিহত পলাশের আঙুলের ছাপে মিল পাওয়া গিয়েছে।
চট্টগ্রাম বিমান ছিনতাইয়ের খলনায়ক মোহম্মদ পলাশ আহমেদের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের দুধঘাটা গ্রামে। পলাশের বাবা পিয়ার জাহান সর্দার জানিয়েছেন, স্বভাব চরিত্রে বেয়াড়া প্রকৃতির ছেলে ছিলেন পলাশ। দুবাই যাবার কথা বলে ২২ ফেব্রুয়ারি বাড়ি ছেড়েছিল সে। পরিবারের সঙ্গে পলাশের সে ভাবে কোনও সম্পর্ক-ই ছিল না বলে জানিয়েছেন পিয়ার জাহান সর্দার। চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাই-এর খবরটা তাঁরা শুনেছিলেন। কিন্তু, এই ঘটনা যে তাঁদের ছেলে পলাশের ঘটানো তা গভীর রাতে জানতে পারেন। স্থানীয় থানা থেকে পলাশের ছবি শনাক্তকরণের জন্য পাঠাতেই পিয়ার জাহান সর্দার এবং তাঁর স্ত্রী রেণু বেগম ঘটনা জানতে পারেন।
ঢাকায় মাদক ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে শর্ট-ফিল্ম তৈরিও করেছিল পলাশ। এই সূত্রে পলাশের সঙ্গে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নায়িকা সিমলার পরিচয় হয়। সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতায় ১ বছর আগে সিমলাকে বিয়েও করে পলাশ।
পলাশের বাবা-মা জানিয়েছেন, পলাশের আগেও একটি বিয়ে আছে। সেই বউ-এর নাম মেখলা। সেই বিয়েতে পলাশের আড়াই বছরের একটি ছেলেও আছে। মেখলা এবং তাঁর সন্তান এখন দুধঘাটা গ্রামে পলাশের বাবা-মা-র কাছেই থাকেন। নায়িকা সিমলা-কে নিয়ে একবার দুধঘাটার গ্রামের বাড়িতেও এসেছিল পলাশ। জানিয়েছিল সিমলা-কে সে বিয়ে করছে। এতে ক্ষিপ্ত হন পলাশের বাবা-মা। তাঁরা পলাশ-কে নাকি বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। সিমলাকে নিয়ে চলে গিয়েছিল পলাশ। এরপর বহু দিন পরে পলাশ দুধঘাটায় বাড়িতে এলে সিমলাকে নিয়ে কখনও আসেনি।
পলাশের বাবা পিয়ার জাহান সর্দার জানিয়েছেন তিনি কুয়েতে থাকাকালীন বহু অর্থ বাড়িতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু, পলাশ সমস্ত অর্থই নয়ছয় করে তা মাদক ব্যবসায় লাগিয়েছে। শেষমেশ দেশে ফিরে দুধঘাটা গ্রামে একটা মুদিখানার দোকান করে সংসার চালাতে হচ্ছে পিয়ার জাহানকে।
পলাশের দেহ এখন চট্টগ্রাম মেডিক্য়াল কলেজের মর্গে আছে। তবে পিয়ার জাহান ছেলেকে দেশদ্রোহী হিসাবেই ঠাওরেছেন এবং তিনি কোনওভাবেই দেহ গ্রহণ করবেন না বলেই জানিয়ে দিয়েছেন। রবিবার বিকেলে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের ময়ূরপঙ্খী বিমান ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছিল পলাশ। কম্যান্ডো অভিযানে গুরুতর আহত হয় পলাশ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পলাশ কেন এমন কাজ করল তার কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। নায়িকা সিমলাও পলাশ-কে নিয়ে সরকারিভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।