ভারতে হয়নি, পাকিস্তান করে দেখাল, ধর্ষণের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া প্রতিবাদ পাক সংবাদ পাঠিকার
পাকিস্তান খবর সঞ্চালিকা কিরণ নাজ নিজের আট বছরের সন্তানকে নিয়ে সংবাদ সঞ্চালনা করলেন।
ধর্ষণ এখন রোজকার ঘটনা, একটা শিরোনাম চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ বাদেই ভুলে যাওয়ার মত ঘটনা। প্রতিবাদও হয় কখনও নীরব কখনও সরব। তবে পাকিস্তানে যেভাবে প্রতিবাদ হল তা নিঃসন্দেহে একেবারে ভিন্ন।
পাকিস্তান খবর সঞ্চালিকা কিরণ নাজ নিজের আট বছরের সন্তানকে নিয়ে সংবাদ সঞ্চালনা করলেন। সম্প্রতি পাকিস্তানের কসুরে ৮ বছরের এক বালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে।
পাকিস্তানি চ্যানেল সামা টিভি-র জনপ্রিয় সংবাদ সঞ্চালিকা এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদ স্বরূপ নিজের মেয়েকে নিয়ে সংবাদ পাঠ করলেন। নিজের সংবাদ পাঠের সময় চিরাচরিতভাবে নিজের পরিচয়ও এদিন দেননি কিরণ। বরং বলেন, 'আজ আমি কিরণ নাজ নই, আজ আমি একজন মা, তাই আজ আমি আমার মেয়েকে নিয়ে বসেছি। '
প্রায় দু মিনিটের কাছাকাছি সময় ধরে নিজের মনের কথা তুলে ধরেন কিরণ। যাতে আবেগের চূড়ান্ত বিস্ফোরণ ছিল। তিনি নিজের কথায় জানান, 'সবচেয়ে ছোট কফিনের ওজন সবচেয়ে বেশি, আর আজ গোটা পাকিস্তান সেরকমই একটা কফিনের চাপে জর্জরিত। '
Not often that you see a TV news anchor bring her own child to her news cast - @SAMAATV 's Kiran Naz did precisely that to make a point about how she felt as a mother in Pakistan #JusticeForZainab #Justice4Zainab pic.twitter.com/6XMXQJmfzV
— omar r quraishi (@omar_quraishi) January 10, 2018
আট বছরের শিশুর কুৎসিত মৃত্যু গোটা পাঞ্জাব প্রদেশে ঝড় তুলে দিয়েছে। এমনকি বিদ্রোহের আগুন এতটাই বেড়ে যায় যে পরিস্থিতির ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে দুজন প্রতিবাদীর মৃত্যুও হয়েছে।
ভারতের সীমান্ত থেকে অল্প দূরেই ঘটে গেছে এই মর্মান্তিক ঘটনা। মেয়েটি জানুয়ারির পাঁচ তারিখ কোচিং থেকে পড়ে ফিরছিল। সেসময়েই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। মেয়েটির মা -বাবা সেসময় সৌদি আরব তীর্থে গিয়েছিলেন। মেয়েটির আত্মীয়রা সিসিটিভি ফুটেজের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে দেন। যাতে দেখা যাচ্ছে মেয়েটির সঙ্গে একজন অচেনা মানুষের সঙ্গে রয়েছেন। বাচ্চাটিকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে।
নাজ নিজের উপস্থাপনায় এও বলেন যখন মেয়েটির মা-বাবা তাঁর লম্বা জীবনের জন্য ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছেন তখন তাঁর জীবনের শেষদিন ঘনিয়ে এল তাও এরকম নারকীয় ভাবে। নাজ জোর দিয়ে বলেছেন এটা শুধু একটি শিশুর মৃত্যু নয় গোটা সমাজের মৃত্যু।
এদিকে নিহত শিশুটির বাবা দেশে ফিরে জানিয়েছেন যতক্ষণ না সুবিচার মিলছে ততক্ষণ তিনি মেয়ের মৃতদেহ কবর দেবেন না। একবছরের কোসরের এটা ১২ তম ঘটনা। এর আগে এখানেই ২০১৫ সালে শিশু যৌনতা চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছিল। যে গ্রুপটি এই কাজ করত তারা প্রায় ২৮০ টি শিশুকে নিজেদের ক্ষতির শিকার করেছিল। পাশাপাশি ২০০৯ সাল থেকে তাদের পরিবারকে ব্ল্যাকমেল করত।