কাশ্মীর নিয়ে 'বিশেষ ছক' কষছে ইসলামাবাদ! জইশ, লস্কর, হিজবুলকে মদত দিচ্ছে ISI
রাওয়ালপিন্ডিতে অবস্থিত পাকিস্তানি গোয়েন্ডা সংস্থা আইএসআই-এর মুক্ষালয়ে ২০১৯ সালের অগাস্ট থেকেই কাশ্মীরে নাশকতামূলক হামলাকে বাস্তবায়িত করার ছক কষা হচ্ছিল। কাশ্মীরের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জইশ ই মহম্মদ, হিজবুল মুজাহিদিন এবং লস্কর ই তৈবার সঙ্গে মিলে এই ছক কষছিল পাক গোয়েন্দারা। এবং এই ছক কষার খবর প্রকাশ্যেই আসতেই ফের কাশ্মীরি বিচ্ছিনতাবাদী জঙ্গিদের পাক সরকারের মদতের তত্ত্ব প্রমাণিত হল।

আইএসআই-এর পূর্ণ মদতে ছক কষছে সংগঠনগুলি
জানা গিয়েছে পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলি আইএসআই-এর পূর্ণ মদতে বিগত এক বছরেরও বেয়সি সময় ধরে উপত্যকা জুড়ে জঙ্গি কার্যকলাপের ছক কষেছে। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের প্রতিশোধ নিতে ভারতীয় প্রতিরক্ষাবাহিনীর উপর হামলার ছক ছাড়াও আরও অনেক পরিকল্পনা করেছিল আইএসআই।

জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার হজম হচ্ছে না
মূলত, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত রদ করার সিদ্ধান্তকে বাধ্য করতেই পাকিস্তানি গোয়েন্দারা এই সব ছক কষেছিল বলে জানা গিয়েছে গোপন রিপোর্টে। এবিষয়ে ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে আইএসআই-এর সঙ্গে জইশ ই মহম্মদ এবং লস্কর ই তৈবার শীর্ষ কমান্ডারদের বৈঠকের খবর রয়েছে। এবং সেই বৈঠক রাওয়ালপিন্ডিতে আইএসআই-এর মুক্ষালয়তে কয়েক দফায় হয়েছে বলেও খবর মিলেছে। বৈঠকে হিজবুল এবং তালিবান নেতারাও ছিল বলে জানা গিয়েছে।

আইএসআই-জঙ্গি গোপন বৈঠক
জানা গিয়েছে ২০১৯ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রথমবার এহেন বৈঠক হয় আইএসআই এবং জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যে। বাহাওয়ালপুরের 'সুভান আল্লাহ' মারকাজে এই গোপন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ২০২০ সালের ৩ থেকে ৮ জানুয়ারি এবং পরবর্তীতে ১৮ জানুয়ারি ইসলামাবাদে বৈঠকে বসে পাক গোয়েন্দারা এবং জঙ্গিদের শীর্ষ নেতারা।

আইএসআই-এর সঙ্গে দেখা করে শীর্ষ জঙ্গি নেতারা
এই পুরো বিষয়টি তদারকি এবং সমন্ময় করে জইশ জঙ্গি মুফতি মহম্মদ আশগার কাশ্মীরি। বৈঠকে জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ভাই মৌলানা অম্মর, লস্করের প্রধান অপারেশনাল কমান্ডার জাকিউর রহমান লাকভি, মুফতি আবদুল রৌফ আশগার এবং আমির হাজমা উপস্থিত ছিল। জানুয়ারিতে দুই দফায় বৈঠকের পর মে মাসের ৭ তারিখ ফের বৈঠকে বসে জঙ্গি নেতা এবং আইএসআই।

অস্ত্র পাচার সহ নাশকতামূলক হামলার ছক
৭ মে-এর এই বৈঠকেই জঙ্গি নেতাদের সঙ্গে পাকিস্তানি গোয়েন্দারা অস্ত্র পাচার সহ নাশকতামূলক হামলার ছক কষার যাবতীয় পরিকল্পনা করে। এরই মাঝে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদে হিজবুল প্রধান সৈয়দ সালাউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করে জঙ্গি নেতা মুফতি মহম্মদ আশগার কাশ্মীরি।

তালিবানদের সাহায্য নিচ্ছে জঙ্গিরা
এদিকে চলতি বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি মার্কিন-তালিবান শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতেই জইশ নেতারা তালিবানি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দেয়। ভারতীয় মহাদেশে তালিবানিদের সাহায্যে আরও বিস্তীর্ণ ভাবে জঙ্গি কার্যকলাপ ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। এবং কাবুলে সুন্নি কট্টরপন্থী এই গোষ্ঠী যদি ক্ষমতায় বসে তাহলে যেন কাশ্মীরে বিচ্ছিনতাবাদীদের সাহায্য় করা হয়, তা নিয়েও আলোচনা হয় দুই পক্ষের।

আইএসআই-এর তদারকিতে প্রশিক্ষণ
এছাড়া বর্তমানে তালিবান জঙ্গিদের ঘাঁটিতে কাশ্মীরি বিচ্ছিনতাবাদীদের প্রশিক্ষণের বিষয়টি রফাদফা করা হয় এই বৈঠকগুলিতে। ডুরান্ড লাইন এলাকার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে তালিবানদের যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে, সেখানেই কাশ্মীরি যুবকদের পাঠিয়ে জেহাদের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। এবং রাওয়ালপিন্ডিতে বসে থাকা আইএসআইএ কর্তাদের তদারকিতেই এই প্রশিক্ষণ চলছে বলে জানা গিয়েছে।

'তুরুপের তাস' দলাই লামা, লাদাখ সীমান্ত সমস্যা সমাধানের চাবিকাঠি লুকিয়ে তিব্বতে