পাকিস্তানের বড় কূটনৈতিক জয়: আফগান শান্তি প্রসঙ্গে ইসলামাবাদকে অভ্যর্থনা জানাল আমেরিকা, চিন ও রাশিয়া
আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এক বড় সাফল্য পেল পাকিস্তান। প্রতিবেশী আফগানিস্তানে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে যখন তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় বসছে নানা দেশ, তখন ইসলামাবাদকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যর্থনা জানাল হল সেই প্রক্রিয়াতে। যারা পাকিস্তানকে আফগান শান্তি প্রক্রিয়াতে সাদরে গ্রহণ করল তাদের মধ্যে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন এবং রাশিয়া। ২০০১ সালে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান শুরু করার পরে মার্কিন-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমি শক্তিগুলি ক্রমেই জড়িয়ে পড়েছে সেখানকার পাঁকে। সামরিক উপায়ে সেখানে কোনও সমাধান নেই বুঝে এখন শান্তি আলোচনায় বসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, খোদ তালিবানের সঙ্গেই।

"চিন, রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে পাকিস্তান আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর ব্যাপারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে," মার্কিন বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে একটি বিবৃতিতে।
আফগানিস্তান ইস্যুতে পাকিস্তানের ভূমিকা অনস্বীকার্য, বলল 'ডন'
পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত দৈনিক 'ডন' জানিয়েছে যে মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের এই বিবৃতি এটাই প্রমাণ করে যে আফগানিস্তানের ইস্যুতে পাকিস্তানের ভূমিকা উপেক্ষা কড়া যায় না কোনওমতেই।
"ইসলামাবাদের মতে, পাকিস্তানের মতো একটি দেশে যেখানে এক বড় সংখ্যক পাশতুন মানুষের বাস, তাকে আফগানিস্তানের শান্তি প্রক্রিয়াতে অন্তর্ভুক্ত করা অবশ্যই প্রয়োজন এবং আফগানিস্তানের বিষয়ে বিশ্বের বড় শক্তিগুলির পক্ষে পাকিস্তানের স্বার্থকে উপেক্ষা করা উচিত নয়," জানিয়েছে 'ডন'-এর একটি প্রতিবেদন।
পাকিস্তানের এই কূটনৈতিক জয়টি এল ইমরান খানের আমেরিকা সফরের ঠিক আগে
আরও যেটা তাৎপর্যপূর্ণ তা হচ্ছে পাকিস্তানের এই কূটনৈতিক জয়টি এল তাদের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আগামী ২২ জুলাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর ঠিক আগে। ইমরানের ওই সফরে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কথোপকথনে যে আফগানিস্তান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা হবে, সে নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বছর খানেক আগে ট্রাম্পের কণ্ঠে পাকিস্তানের নেতৃত্বের কড়া সমালোচনা এবং পাকিস্তানের জায়গায় ভারতকে আফগানিস্তানের বিষয়ে বড় ভূমিকা পালন করার আহবান শোনার পরে এ এক বড় পরিবর্তন।
পাকিস্তানের কাছে আবেদন রেখেছেন মার্কিন কর্তারা
আফগানিস্তানের তালিবানদের কাতারের রাজধানী দোহায় মার্কিন আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসার পিছনে ইসলামাবাদের ভূমিকা মেনে নিয়েছে ওয়াশিংটনের মাথা-হোতারাও। উচ্চপদস্থ মার্কিন কূটনীতিবিদ এবং সামরিক কর্তারা প্রকাশ্যে আমেরিকা-তালিবান আলোচনার প্রতি পাকিস্তানের সমর্থনকে স্বীকার করে ইসলামাবাদের প্রতি ওই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি শান্তিপ্রতিষ্ঠার জন্যে উদ্যোগী হওয়ার আবেদনও করেছেন।
গত ১০ এবং ১১ জুলাই চিনের রাজধানী বেইজিং-এ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চিন ও পাকিস্তানের প্রতিনিধিরা আফগান শান্তি প্রক্রিয়ার উপরে বৈঠক করেন।