পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের আগে ফের সেনার বিরুদ্ধে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের অভিযোগ, বিস্তারিত জানুন
পাকিস্তানি সাধারণ নির্বাচনের আগে পাক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পিএমএল-এন দলের উপর দমন পীড়নের অভিযোগ উঠলো।
আগামী ২৫ জুন তারিখে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন। সেদেশের ইতিহাসে এ এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এই প্রথম, কোনও নির্বাচিত সরকার পাঁচবছরের মেয়াদ সম্পূর্ণ করেছে এবং নির্বাচিত সরকারের হাত থেকে পরের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা বদল হবে। কিন্তু তার আগে নির্বাচনে সেনা হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। কাজেই নির্বাচনে কারা জিতবে কারা হারবে সেসব ছাপিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ হবে তা নিয়েই জল্পনা চলছে।
নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। গত শুক্রবারই বিদায়ী প্রধানমনত্রী শাহিদ আব্বাস খক্কন কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছেন। নির্বাচন চলাকালীন অস্থায়ী সরকার পরিচালনা করছেন সেদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি নাসিরুল মুলক। কিন্তু এরমধ্যেই অসামরিক রাজনীতিক ও সেনা কর্তাদের মধ্যে চাপান উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। নওয়াজ শরিফএর দল পিএমএল(এন)-এর অন্তত চারজন সাংসদ অভিযোগ করেছেন তাঁদের দল বদলানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। তবে শুধু শাসক দলের সাংসদরাই নন, সংবাদ মাধ্যমের ওপরও সেনাবাহিনীর চাপ বাড়ছে বলে জানা গিয়েছে।
পিএমএল(এন) সাংসদরা অবশ্য কোন সেনা কর্তার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগ করতে নারাজ। পাক রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর প্রভাব অনস্বীকার্য। পাকিস্তানের গঠনের পর থেকে অর্ধেকেরও বেশি সময় সেনা নিজের হাতে শাসন ক্ষমতা রেখেছে। এখনও পাক জনতার একটা বড় অংশ রাজনীতিবিদদের থেকে সেনাদের ওপরই বেশি আস্থাশীল।
বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমও সরাসরি জানিয়েছে সেনার সেন্সরশিপের শিকার হচ্ছেন তাঁরা। জনপ্রিয় একটি পাক সংবাদপত্রের দাবি, নওয়াজ শরফের একটি সাক্ষাতকার, যেখানে তিনি মুম্বই হামলায় পাক সেনার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন, সেটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সেনা নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের কাগজ বিক্রি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অনুরূপ কারণে কেবল অপারেটরদের চাপ দিয়ে বিস্তৃর্ণ এলাকায় বন্ধ করা হয়েছে একটি প্রথম সারির পাক সংবাদ চ্যানেলের সম্প্রচার। সেনা অবশ্য সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে।
একাধিক বিশ্লেষক ও পশ্চিমী কূটনীতিকও বলছেন, পাক সেনা সব সময়ই রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে। তবে এবারের যেরকম নগ্ন ভাবে তারা পিএমএল(এন)-কে কোনঠাসা করতে চাইছে, তা নজিরবিহীন। অনেকেরই দাবি পাক সেনা নওয়াজের দলকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে ইমরাণ খানের তেহরিক-ই-ইনসাফ'কে তখতে বসাতে উঠে পড়ে লেগেছে। একথা অবশ্য মানতে নারাজ ইমরাণ। যদিও পিটিআই-র জয়ের ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। তাঁর মতে এসব বলে নওয়াজ তাঁর বিরুদ্ধে চলা দুর্নীতির মামলা এড়াতে চাইছেন। পিটিআই-এর যে দুর্নীতি বিরোধী অবস্থান, তাতেই জয় আসবে তাঁর দলের, বলেই দাবি এই প্রাক্তন ক্রিকেটারের।
জানা
যাচ্ছে
নওয়াজকে
ক্ষমতাচ্যুত
করার
পর
থেকেই
যেভাবে
তিনি
বিচার
বিভাগ
ও
সেনার
সমালোচনা
শুরু
করেছেন
তাতেই
উদ্বেগ
বেড়েছে
পাক
বাহিনীর।
ক্ষমতাচ্যুত
হওয়ার
পর
তারা
আশা
করেছিল
নওয়াদের
বিরুদ্ধে
পাকি
জনতার
মনে
ক্ষোভ
জন্মাবে।
তা
তো
হয়ইনি,
উপড়ন্ত
নওয়াজ
আরও
জনপ্রিয়তা
পেয়েছেন।
এতেই
নওয়াজের
বিরুদ্ধে
উঠে
পড়ে
লেগেছে
সেনা।
কার্গিল
যুদ্ধের
সময়
নওয়াজই
প্রধানমন্ত্রী
ছিলেন।
তিনি
সেসময়
সেনার
অন্দরের
খবরাখবর
জানেন।
এর
আগে
নওয়াজ
জানিয়েছিলেন,
যুদ্ধের
যাবতীয়
পরিকল্পনা
ও
বাস্তবায়ন
করেছিলেন
তৎকালীন
সেনা
প্রধান
পারভেজ
মুশারফ।
কিন্তু
ঠিক
কি
হয়েছিল
তা
প্রকাশ
করেননি
তিনি।
এখন
তিনি
যেভাবে
এগোচ্ছেন,
তাতে
মুখ
খুললে
অনেক
বেড়ালই
বেড়িয়ে
পড়তে
পারে।
তবে
সেনার
হাতে
যা
ক্ষমতা,
তাতে
নওয়াজের
পক্ষে
কতদূর
কি
করা
সম্ভব
তাই
নিয়েই
প্রশ্ন
তুলছে
সংশ্লিষ্ট
মহল।
অনেকের
মতে,
শেষ
পর্যন্ত
হয়তো
তাঁকে
সেনার
সঙ্গে
সমঝোতার
পথে
যেতে
হতে
পারে।