আমেরিকায় মোদীর স্টাইলে জনসংযোগের প্রয়াস ইমরানের; কিন্তু নয়া পাকিস্তান-এর স্বপ্ন কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রবিবার, ২১ জুলাই, তিনদিনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ওয়াশিংটনে পা রাখেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান রবিবার, ২১ জুলাই, তিনদিনের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ওয়াশিংটনে পা রাখেন। গতবছর দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে এটাই প্রাক্তন ক্রিকেটার ইমরানের প্রথম মার্কিন সফর এবং নানা দিক থেকেই তাঁর এই আমেরিকা ভ্রমণ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
মোদী ম্যাডিসন স্কয়ারে ২০১৪ সালে এমনই জনসংযোগ করেছিলেন
কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কী ফলাফল তা সময়ে জানা গেলেও ইমরান যেভাবে তাঁর সফরের প্রথম ধাপটি গ্রহণ করলেন, তা অভিনব। এমনকি, মার্কিন রাজধানীর ক্যাপিটাল ওয়ান এরেনাতে তিনি রবিবার সেদেশের প্রবাসী পাকিস্তানিদের প্রতি যেভাবে আবেদন রাখলেন, তাতে অনেকেরই ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিউয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ারে দেওয়া বক্তৃতার কথা মনে পড়ছে। মোদী যেভাবে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের দেশের ভাবমূর্তি পুনর্গঠনে জোর দেন, ইমরানও এদিন কথা বলেন 'নয়া পাকিস্তান' প্রসঙ্গে।
"মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করেন 'নয়া পাকিস্তান' কোথায়। আমি বলি আপনাদের চোখের সামনেই তৈরী হচ্ছে নতুন পাকিস্তান," বলেন ৬৬-বছর বয়সী ইমরান।
ইমরানের সঙ্গে ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন তাঁর সরকারের এক ঝাঁক মন্ত্রী। বিদেশমন্ত্রী শাহ আহমেদ কুরেশি; প্রবাসী পাকিস্তানিদের প্রতিমন্ত্রী জুলফি বুখারি ছাড়াও ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নানা উপদেষ্টা।
পাকিস্তানে এখন দায়বদ্ধতা এড়ানো যায় না, বললেন ইমরান
'নয়া পাকিস্তান'-এর গঠন সম্পর্কে ইমরান বলেন যে আগে পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতাদের জবাবদিহি করার প্রয়োজন পড়ত না আর তাঁদের প্রশ্ন করা হলেই তাঁরা বলতেন তাঁদের প্রতিহিংসার বলি করা হচ্ছে। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন এই সংস্কৃতি এবারে বদলাচ্ছে আর এটাই নয়া পাকিস্তানের পরিচয়।
ক্রিকেটের উদাহরণও দিলেন ইমরান
ইমরান বলেন মেধা এবং দায়বদ্ধতার কারণেই গণতন্ত্র এগিয়েছে, রাজতন্ত্রের মতো ব্যবস্থা পিছিয়ে পড়েছে। তিনি এ ব্যাপারে ক্রিকেটের উদাহরণও টানেন।
ইমরান বলেন প্রতিভার দিক থেকে পাকিস্তান ক্রিকেট সবচেয়ে এগিয়ে কিন্তু যেহেতু মেধা-ভিত্তিক কোনও ব্যবস্থা সেখানে নেই, তাই সেই প্রতিভাগুলি হারিয়েই যায়। মেধার বিকাশ হয় না বলেই পাকিস্তান বিশ্বকে শাসন করতে পারে না বলে তিনি বলেন। পাশাপাশি, মেধার বিকাশ ঘটনার ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট এগিয়ে এবং সেই জন্যেই তারা ভালো জায়গায় পৌঁছেছে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেধা-ভিত্তিক ব্যবস্থারও প্রশংসা করেন।
মোদীর জনসংযোগের মতো ইমরানও যেভাবে মার্কিন সফরে 'নয়া পাকিস্তান'-এর ধারণাকে তুলে ধরে সুনাম কিনতে চেয়েছেন তা লক্ষ্যণীয়। কিন্তু সমস্যা হল, সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তানের যে দুর্নাম আন্তর্জাতিক মহলে এবং তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে যা ফাঁকফোকর, তা এই 'সফ্ট পাওয়ার' ব্যবহার করে কতটা দূর করতে পারবেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ-এর নেতা ইমরান?