হ্যারিসের পর বাইডেনের সঙ্গে মোদীর বৈঠকেও আজ পাকিস্তান ইস্যু ঝড় তুলতে পারে! কমলার বার্তায় 'সুয়ো মোটো'-র উল্লেখ
ভারতীয় সময় অনুযায়ী গতরাতেই মার্কিন মুলুকে এক ঝঁক হাইভোল্টেজ বৈঠক সম্পন্ন করেন নরেন্দ্র মোদী। সেখানে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সঙ্গে গতকালই বৈঠকে বসেন মোদী। এরপর জাপানের রাষ্ট্রনেতা ইয়োশিহিদে সুগার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি । এছাড়াও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন তিনি। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের আস্ফালন ও লাদাখে বেজিং এর আগ্রাসনের মাঝে অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের রাষ্ট্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পাকিস্তান ইস্যুতে যে মোদীর আলোচনা হয়েছে, তা বৈঠকের পর দুজনের বক্তব্যেই স্পষ্ট। এরপর এদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর। সেখানেও যে পাকিস্তান ইস্যুই বড় ভূমিকা নেবে তা বলাই বাহুল্য।
'সুয়ো মোটো'-র ডাক কমলার, নিশানায় পাকিস্তান
মোদীর সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের কণ্ঠে 'সুয়ো মোটো' শব্দের উদ্ধৃতি নিয়ে বহু আলোচনা চলছে। উল্লেখ্য, এই উদ্ধৃতি পাকিস্তানের সন্ত্রাস নিয়ে করা হয়েছে বলে জানানো হচ্ছে। মুখোমুখি আমেরিকার নব নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা হ্যারিসের সঙ্গে এই প্রথমবার সাক্ষাৎ হল মোদীর। বৈঠকের পর নিজের টুইটে কমলার ভূয়সী প্রশংসা করেন মোদী। এই আলোচনার হাত ধরে আমেরিকা ও ভারতের সম্পর্ক আরও মজবুত হতে পারে বলেও মনে করছেন তিনি। সাংস্কৃতিক যোগের মাধ্যমেই এই দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে, কমলা হ্যারিসের কণ্ঠে 'সুয়ো মোটো' শব্দের উদ্ধৃতি নিয়ে বিস্তর আলোচনার শুরু হয়েছে। কমলা হ্যারিসের কণ্ঠে বৈঠকের পরই এই শব্দ শোনা যায়। মূলত পাকিস্তানকে সন্ত্রাস দমন নিয়ে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট এই বার্তা দিয়েছেন। ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষ শ্রিংলা জানিয়েছেন, কমলার কণ্ঠে এই সুয়ো মোটো শব্দের উদ্ধৃতি পাকিস্তানকে নিশানা করেই করা হয়েছে।
বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকেও পাকিস্তান ইস্যু
এদিকে, আমেরিকার বুকে আজ মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর হাইভোল্টেজ বৈঠক রয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই বৈঠকেও পাকিস্তানের সন্ত্রাস ইস্যু নিয়ে সরব হতে পারেন মোদী। সেখানে আফহানিস্তানে তালিবান দাপটে পাকিস্তান কতটা সাহায্য করছে তা নিয়ে মোদী মুখ খুলতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডো বাইডেনর সঙ্গে এদিন করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সাক্ষাৎ হচ্ছে মোদীর। এই বৈঠকে পাকিস্তানের পাশাপাশি যে করোনা সংক্রান্ত আলোচনাও জায়গা করে নেবে তা বলাই বাহুল্য। এদিকে, এদিকে, আফগানিস্তানে হাক্কানি নেটওয়ার্কের সিরাজউদ্দিনের মন্ত্রিত্ব নিয়ে আমেরিকার অবস্থান সম্পর্কেও এই বৈঠকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
পর পর বৈঠক
এদিকে, ইতিমধ্যেই আমেরিকায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনের সঙ্গে বৈঠক করে মোদী। কোয়াড কমিটি ভূক্ত এই দেশের সঙ্গে মোদীর বৈঠক যে বেশ গুরুত্বপূর্ণ সাম্প্রতিক ইন্দো-চিন সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে জাপানের রাষ্ট্রপ্রধান ইশোহিদে সুগার সঙ্গেও উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক সম্পন্ন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এদিকে, জাপানের রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে বৈঠকটিকে ফলপ্রসূ বলে উল্লেখ করেছেন মোদী। জানা গিয়েছে, দ্বিপাক্ষিক এই বৈঠক বাণিজ্য নিয়ে করা হয়েছে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার প্রাইম মিনিস্টার স্কট মরিসন মোদীকে 'ভালো বন্ধু' হিসাবে উল্লেখ করে , সেই বৈঠকটি নিয়েও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। কোয়াডভূক্ত দেশগুলির বৈঠকের আগে এই দুটি পর পর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক যে খুবই ফলদায়ক তা মনে করছে দিল্লির কূটনৈতিক মহল। এর আগে জাপানের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে ফোনালাপে কোবিড পরিস্থিতি নিয়ে মোদীর কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছিল। তিনি কোভিড পরিস্থিতিতে জাপানকে সমস্ত রকমের সহায়তার বার্তা দিয়েছিলেন। তবে এবার কোয়াডেদশভূক্ত রাষ্ট্রের হাইভোল্টেজ বৈঠক আসন্ন। তার পরই রয়েছে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার মতো হাইভোল্টেজ বৈঠক।
আজ হাইভোল্টেজ বৈঠকে মোদী
আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে মোদীর বৈঠকে যে পাকিস্তান ইস্যু বড় মাত্রা নিচে চলেছে তা আঁচ করছে কূটনৈতিক বিশ্ব। উল্লেখ্য, ভারতের তরফ থেকে বাইডেনের সামনে যে সমস্ত তথ্য তুলে ধরা হবে, তাতে আফগানিস্তানে তালিবান শাসন রয়েছে। পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইএর প্রধানের সঙ্গে তালিবান নেতাদের বৈঠকের কয়েকদিন পরই আফগানিস্তানে তালিবান সরকারের গঠনের মতো ঘটনা নিছকই কাকলাতালীয় নাকি এর নেপথ্যে পাকিস্তানের কোনও অভিসন্ধি রয়েছে, সেই প্রশ্ন এদিন দিল্লি রাখতে পারে ওয়াশিংটনের সামনে।