অর্থনীতি তো বটেই! রাজনৈতিকভাবেও মুখ থুবড়ে পড়তে পারে পাকিস্তান, এখন উপায় কী?
ডুবতে বসেছে পাকিস্তান! ক্রমশ বাড়ছে ঋণের বোঝা। কীভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব? কী বলছেন বিশ্লেষকরা।
প্রবল অর্থনৈতিক ধাক্কা খেয়েছে পাকিস্তান! ঘাড়ে রয়েছে মোটা অঙ্কের ঋণ খেলাপির দায়। অন্যদিকে অর্থ সাহায্যের জন্য কঠিন কঠিন শর্ত দিচ্ছে আইএমএফ। বর্তমানে ইসলামাদের মূল লক্ষ ঋণ মেটানো। ইতিমধ্যে সাহায্য চেয়ে ওয়াশিংটনের দ্বারস্থ হয়েছে পাকিস্তান। অর্থ সাহায্যের জন্যে সুর নরম করার আর্জি জানিয়েছে তাঁরা।
বর্তমানে যা অবস্থা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবত শরিফকে বিদ্যুৎের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। আর সেটাই হতে পারে শরিদ সরকারের শেষ পেরেক। রাজনৈতিক ভাবে এমন একটি সিদ্ধান্তের সুযোগ নিতে পারে বিরোধী দলনেতা ইমরান খান। শুধুমাত্র অর্থনীতিই এই মুহূর্তে পাক সরকারের মাথাব্যাথার মূল কারণ নয়! রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক সমস্যা।
নিরাপত্তার অবস্থাও যে খুব একটা ভালো তা নয়। বিশেষত তালিবানদের চাপের বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। এক কথায় বলতে গেলে পাকিস্তান ডুবতে বসেছে। কিন্তু পাকিস্তানিরা মনে করছে তাঁরা এই অবস্থা কাটিয়ে উঠবে! অন্যান্য দেশ থেকে সাহায্য পাওয়ার কথাও ইতিমধ্যে ভাবতে শুরু করে দিয়েছে সে দেশের রাজনেতারা।
কিন্তু ওয়াকিবহালমহলের মতে, পাকিস্তানের যা অবস্থা তাতে আভ্যন্তরীণ সংস্কার সবার আগে প্রয়োজন। বর্তমানে যা পরিস্থিতি তাতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে অন্তত ১০ বিলয়ন ডলার প্রয়োজন সে দেশের। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, আইএমএফের মাধ্যমে পাকিস্তান সৌদি আরবের কাছ থেকে দু বিলিয়ন, আরব আমিরশাহীর কাছ থেকে এক বিলিয়ন, চিন থেকে দু বিলিয়ন জোগাড় করতে পারবে। কিন্তু সেটা দিয়ে কতদিন কাজ চলবে! বিশ্লেষকদের কথা অনুযায়ী তা চলবে মাত্র দুমাস।
আগামী অর্থ বছরের জন্যে পাকিস্তানের প্রয়োজন হবে ৩০ বিলয়ন ডলার। প্রশ্ন উঠছে, এই বিপুল টাকা কথা থেকে আসবে। এই সমস্ত দেশগুলি অফুরন্ত টাকা দিতে থাকবে পাকিস্তানকে? ইতিমধ্যেই আইএমএফ যে সমস্ত শর্ত চাপাতে শুরু করেছে তাতে পাকিস্তান অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যেতে পারে।
অনুমান করা হচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই মূল্যবৃদ্ধির হার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বেড়ে যাবে। এর মধ্যে ডলার প্রতি সে দেশের মূল্যের দাম পড়ছে। এর ফলে জ্বালানির দাম অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে শুরু করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এমনকি সাধারণ মানুষের বিপদ বাড়িয়ে গ্যাসের দামও বাড়তে শুরু করবে। মুখ থুবড়ে পড়বে পাকিস্তানের টাকার দাম। অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে পাকিস্তানকে সুদের হার বাড়াতে হবে। এর ফলে ব্যবসার খরচ অনেক বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষংরা।
আর তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পাকিস্তান যাতে অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক দিক থেকে মুখ থুবড়ে না পড়ে এজন্যে এখন থেকেই সচেতন হওয়া প্রয়োজন।