বালাকোট নিয়ে যতই হৈহৈ হোক, যুদ্ধ হলে পাক বায়ুসেনা এগিয়ে থাকবে ভারতের থেকে, জানাচ্ছে রিপোর্ট
গত ফেব্রুয়ারি মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক ভয়াবহ আত্মঘাতী জঙ্গিহানায় চল্লিশের উপরে ভারতীয় আধা-সেনা জওয়ান নিহত হওয়ার পরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তরজা তুঙ্গে ওঠে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক ভয়াবহ আত্মঘাতী জঙ্গিহানায় চল্লিশের উপরে ভারতীয় আধা-সেনা জওয়ান নিহত হওয়ার পরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে তরজা তুঙ্গে ওঠে। দুই দেশের বায়ুসেনার মধ্যে রেষারেষি হয় এবং দু'পক্ষ থেকেই বলা হয় যে তারা একে অপরের বিমান গুলি করে মাটিতে নামিয়েছে। ভারতের তরফ থেকে এও বলা হয় যে পাকিস্তানের বালাকোটে জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়ে এসেছে ভারতীয় বায়ুসেনা, যদিও এ ব্যাপারে রাজনৈতিক বিতর্ক চলতেই থাকে।
ভারতের যুদ্ধবিমান ও পাইলটের অনুপাত কম পাকিস্তানের থেকে
সামরিক শক্তিতে ভারত পাকিস্তানের থেকে যোজনখানেক এগিয়ে বলে জাতীয়তাবাদীরা ফের সরব হয় এই কাণ্ডের পরে। কিন্তু সম্প্রতি 'দ্য প্রিন্ট' পত্রিকা জানিয়েছে এক উদ্বেগজনক তথ্য। বলেছে যে একটি ব্যাপারে ভারতীয় বায়ুসেনা পাকিস্তানের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে এবং সেটা হল লোকবল।
ভারতীয় বায়ুসেনা অর্থাৎ আইএএফ-এর বর্তমানে প্রতিটি বিমানদের জন্যে বরাদ্দ বিমানচালকের সংখ্যা দেড়; সেখানে পাকিস্তানি বায়ুসেনা বা পিএএফ-এর সংখ্যাটি আড়াই, প্রতিরক্ষা মহলের উচ্চ সূত্রের তরফ থেকে 'প্রিন্ট'কে জানানো হয়েছে।
দিনরাত্তির যুদ্ধ হলে পাকিস্তান এগিয়ে থাকবে
লোকবলে এগিয়ে থাকা মানে যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পুরোদস্তুর যুদ্ধ বাধে, তাহলে পাকিস্তানের বায়ুসেনা ভারতের থেকে ভালো অবস্থায় থাকবে দিন-রাত্রি যুদ্ধ চালাতে। কম বিমানচালক মানে ভারতীয় বায়ুসেনা অনেক বেশি চাপে থাকবে পুরোদমে কাজ চালাতে; ক্লান্তি আসবে তাড়াতাড়ি।
ভারতের নেই বোমাবর্ষণ অনুশীলন করার যথেষ্ট সুযোগও
'প্রিন্ট'-এর প্রতিবেদন এও জানিয়েছেন যে ভারতের ওয়েস্টার্ন এয়ার কম্যান্ড, যা পাকিস্তান ও আংশিকভাবে চিনের আকাশপথের উপরে নজরদারি চালায়, তাদের একটিও 'ফায়ারিং রেঞ্জ' নেই যার দ্বারা যুদ্ধের সময়ে শত্রু নিশানার উপরে বোমা ফেলার অনুশীল করা যায়। ভারতীয় বায়ুসেনা এই ব্যাপারে নির্ভরশীল 'সিমুলেশন' বা কম্পিউটারে নকল যুদ্ধেক্ষেত্রে বোতাম টিপে বোমা ফেলার অনুশীলন করতে যা কখনওই সত্যিকারের অনুশীলনের বিকল্প নয় বলে স্বীকার করেছে খোদ বায়ুসেনার সূত্রই। এমনকী, চিনের সঙ্গে উত্তরে এবং পূর্বে প্রবল উচ্চতায় ভারতের সীমানা থাকলেও উচ্চতায় বোমাবর্ষণ করার অনুশীলনের রেঞ্জ বায়ুসেনার নেই যার ফলে যুদ্ধ লাগলে কতটা সাফল্য তারা পাবে সে ব্যাপারে সন্দেহ থেকেই যায়।
আইএএফ-এর মোট অনুমোদিত স্কোয়াড্রন শক্তি হচ্ছে ৪২ এবং অফিসারদের সংখ্যা ১২,৫০০। একেকটি স্কোয়াড্রনে ১৬-২০ যুদ্ধবিমান রয়েছে। যদিও প্রতি বছর গড়ে মাত্র দুই শতাংশ হারে অনুমোদিত অফিসারদের সংখ্যা কমেছে, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এই অভাব চলতে থাকার ফলে এখন সমস্যা বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া, এখন মিগ্-এর বদলে দুই-আসন বিশিষ্ট এসইউ৩০ এমকেই বিমান আসাতে প্রয়োজন হয়ে পড়েছে আরও বেশি বিমানচালকের আর সেখানেই লোকবলের অভাব টের পাওয়া যাচ্ছে বলে সূত্র থেকে জানা গিয়েছে বলে প্রতিবেদনটির বক্তব্য।