মাসুদ আজহার, হাফিজ সঈদের বিরুদ্ধে কেন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না পাকিস্তান সরকার? প্রশ্ন পাক মিডিয়ার!
ইসলামাবাদ, ১৩ অক্টোবর : জঈশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রধান তথা পাঠানকোট জঙ্গি হামলার মাথা মাসুদ আজহার এবং ২৬/১১ মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড হাফিজ সঈদ-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলে তা কেন পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার পক্ষে 'ভয়ঙ্কর' হবে? সরকার এবং সেনা প্রশাসনের উদ্দেশে এই প্রশ্নই ছুঁড়ে দিল পাকিস্তানের প্রথম সারির সংবাদপত্র 'দ্য নেশন'। [১৯৯৪ সালে সাংবাদিক সেজে ভারতে আসা যুবকই আজকের মাসুদ আজহার]
সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে অত্যন্ত কড়া ভাষায় সমালোচলা করেছে। পাকিস্তানে কট্টরপন্থা দমন ইস্যুতে সেনাবাহিনী ও সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব নিয়ে এক রিপোর্ট প্রকাশের পর ইংরেজি দৈনিক ডন-এর সাংবাদিক সিরিল আলমেইদার দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয় দ্য নেশন পত্রিকা। ['পাঠানকোটের মতো আরও হামলা হবে', খোলাখুলি 'ওয়ার্নিং' পাক সন্ত্রাসবাদী হাফিজ সঈদের!]
"হাউ টু লুস ফ্রেন্ড অ্যান্ড এলিয়েনেট পিওপল" (যাক অর্থ হল কীভাবে বন্ধু হারানো যায় এবং মানুষকে দুরে সরিয়ে দেওয়া) শীর্ষক এই সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, সরকার এবং সেনা মাসুদ আজহার এবং হাফিজ সঈদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে সংবাদমাধ্যমের সামনে ভাষণ দিচ্ছে।
পাকিস্তানে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে মাসুদ আজহার এবং হাফিজ সঈদ। সূত্রের খবর অনুযায়ী, পাক সেনার পুরো মদত পাচ্ছে এই দুই জঙ্গি নেতা। সম্পাদকীয়তে বলা হয়, "এই দিনটি পাকিস্তানের পক্ষে অস্বস্তিকর দিন যেদিন রাজনৈতিক নেতারা এবং সেনার শীর্ষ নেতৃতব মিডিয়ার সঙ্গে দেখা করে তাদের কীভাবে কাজ করা উচিত তা নিয়ে ভাষণ দিলেন।" [পাঠানকোট হামলা : যাবতীয় প্রমাণ সত্ত্বেও এফআইআরে নাম নেই মাসুদ আজহারের!]
সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়, "আলমেইদার রিপোর্টকে 'ভুয়া' এবং 'অতিরঞ্জিত' বলা হচ্ছে। কিন্তু সরকার বা সেনার শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে কোনও জবাব নেই কেন মাসুদ আজহার বা হাফিজ সঈদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হলে তা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে ভয়ঙ্কর? বা কেনই বা পাকিস্তানের একঘরে হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশই বেড়ে চলেছে?"
এই সব প্রশ্নের ব্যাখ্যা না দিয়ে সরকার বা সেনার শীর্ষ নেতৃত্বের এত সাহস কী করে হয় যে তারা মিডিয়ার কীভাবে কাজ করা উচিত তা নিয়ে ভাষণ দেয়। কী করে তারা একজন সাংবাদিককে অপরাধীদের মতো আচরণ করে। আর কোথা থেকেই বা তারা সাহস পান এটা ভাবার যে তাদেরই একমাত্র অধিকার আছে বা ক্ষমতা আছে কিংবা একাধিপত্য রয়েছে পাকিস্তানের "জাতীয় স্বার্থ" কি তা ঘোষণা করার। [ভারত বিরোধিতায় বাধা এলে ফল ভুগতে হবে পাকিস্তানকে, হুমকি মাসুদ আজহারের]
শুধু একটি দৈনিক নয়, আলমেইদার দেশ ছাড়ার উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পক্ষে আওয়াজ তুলেছে করাচি প্রেস ক্লাবও।