ভারতের লাগাতার প্রতিরোধ, আরও পিছু হঠল পাকিস্তান, জইশ-এর সদর দফতরের নিয়ন্ত্রণ নিল সরকার
'অ্য়াকশানেবল প্রুফ' দেওয়ার কথা ভারতকে বলেছিলেন ইমরান খান। এমনকী পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় আদৌ যে পাকিস্তানের মাটিতে চলা কোনও জঙ্গি সংগঠন জড়িত সেটাও মানতে চাননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।
'অ্য়াকশানেবল প্রুফ' দেওয়ার কথা ভারতকে বলেছিলেন ইমরান খান। এমনকী পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় আদৌ যে পাকিস্তানের মাটিতে চলা কোনও জঙ্গি সংগঠন জড়িত সেটাও মানতে চাননি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। বিবৃতি দেওয়ার সময় পাক প্রধানমন্ত্রী জইশের নামটাও মুখে পর্যন্ত আনেননি। নিরাপত্তা পরিষদ পুলওয়ামা হামলায় জইশ-এর নাম উচ্চাকণ করার পর ইসলামাবাদের আর বুঝতে দেরি হয়নি যে চাপটা আরও বাড়তে চলেছে। শেষপর্যন্ত শুক্রবার রাতে পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদের সদর দফতরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার দাবি করল পাকিস্তান সরকার।
পাকিস্তানের ইন্টেরিয়র মিনিস্টারের দফতর থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে পঞ্জাব প্রদেশের সরকার বাহাওয়ালপুরের মাদ্রেসসাতুল সাবির ও জামা-ই-মসজিদ সুবানাল্লা-র নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এই দুই মাদ্রাসাই জইশ-ই-মহম্মদ-এর সদর দফতর বলে বিবেচিত হয়। এখানেই মৌলবাদ এবং সন্ত্রাসের প্রাথমিক পাঠ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পাক সরকারের দেওয়া বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে যে এই মাদ্রাসার পরিচালনার দায়িত্বে অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নিয়োগ করা হয়েছে। ইন্টেরিয়র মিনিস্ট্রি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই মাদ্রাসা-তে মূলত ৭০ জন শিক্ষক আছে এবং এখানে ৬০০ জন ছাত্র আছে। পঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ এই মাদ্রাসার চারিদিকে এবং ভিতরে তাদের কর্মীদের মোতায়েন করেছে বলেও জানানো হয়েছে। বাহাওয়ালপুর এলাকা লাহোর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে। পাকিস্তানের ইনফরমেশন মিনিস্টার ফাওয়াদ চৌধুরি এই খবরকে নিশ্চিত করেছেন।
বৃহস্পতিবারই নিরাপত্তা পরিষদ পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করে প্রেস বিবৃতি দেয় এবং এই ঘটচনার পিছনে যে জইশ-ই-মহম্মদ জডিত তাও বলে। চিনও নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসাবে এই বিবৃতিকে মেনে নেয়। এতে আরও চাপে পড়ে পাকিস্তান। এর আগে সমানে আন্তর্জাতিক চাপের সামনে পড়ে লস্কর-ই-তইবার দুই সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তান।
এদিকে, এফএটিএফ বা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স-ও পুলওয়ামা হামলাকে অত্যন্ত একটা ভয়ানক পরিস্থিতি বলে মন্তব্য করে। এফএটিএফ মূলত সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহৃত আর্থিক লেনদেনের উপর নজরদারি চালায়। এফএটিএফ এক বিবৃতিতে জানায় জইশ-ই-মহম্মদ এবং লস্কর-ই-তইবা কীভাবে অর্থ সাহায্য জোগাড় করে তা বুঝতে পুরোপুরি ব্যর্থ পাকিস্তান। এমনকী এর জন্য পাকিস্তানকে 'গ্রে লিস্ট'-এ ফেলে দিয়েছে এফএটিএফ। যদিও, ভারত চেয়েছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এফএটিএফ যেন কড়া ব্যবস্থা নেয়। আপাতত 'গ্রে লিস্ট'-এ থাকায় অক্টোবর পর্যন্ত একটা লাইফ-লাইন পেয়েছে পাকিস্তান। জইশ-এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে গলার ফাঁসটা যে আরও দৃঢ় হবে তা বুঝতে পেরেছে পাকিস্তান। আর সেই কারণেই তড়িঘড়ি জইশ-এর সদর দফতরে নিয়ন্ত্রণের কথা ঘোষণা বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে ২০০২ সালে জইশ-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল পাক সরকার। কিন্তু লাভ হয়নি। একাধিক ছদ্মবেশী সংস্থার আড়ালে তাদের কাজ চালিয়ে গিয়েছেন জইশ।