অ্যান্টার্কটিকার থেকেও বড় হচ্ছে ওজোন স্তরের ছিদ্র, বায়ুদূষণের জেরেই ভয়ানক সঙ্কটে পৃথিবীর রক্ষাকবচ
অ্যান্টার্কটিকার থেকেও বড় হচ্ছে ওজোন স্তরের ছিদ্র, বায়ুদূষণের জেরেই ভয়ানক সঙ্কটে পৃথিবীর রক্ষাকবচ
সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মীর ভয়ঙ্কর প্রভাবের হাত থেকে প্রতিনিয়ত ধরিত্রীকে রক্ষা করে থাকে বায়ুমন্ডলের উপরিভাগে থাকা ওজোন স্তর। কিন্তু গ্রিন হাউস এফেক্টের কারণেই এই ওজন স্তরই এবার ভয়ানক বিপদের মুখে পড়েছে। এদিকে ওজোন স্তরের ক্ষয় ও এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী গণসচেতনতা তৈরিতে প্রতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস পালন করা হয়। সেই বিশ্ব ওজোন দিবসেই সামনে আসছে ভয়াবহ রিপোর্ট।
অ্যান্টার্কটিকার থেকেও বড় হয়ে যাচ্ছে ছিদ্র
সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টেই দেখা যাচ্ছে ওজোন স্তরের ছিদ্রের আকার অ্যান্টার্কটিকার থেকেও বড় হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। আর এখানেই বাড়ছে উদ্বেগ। যদিও করোনাকালে ওজোন স্তরের ছিদ্রের খানিকটা মেরামত হয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা। কিন্তু তারপরে ক্রমাণ্বয়ে যে অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে তাতে ভয় আরও বাড়ছে। এদিকে সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি যাতে পৃথিবীর মাটিতে পৌঁছাতে না পারে সেজন্য ঢাল হয়ে বায়ুমণ্ডলের উপরের দিকে রক্ষ কবচের মতো থাকে ওজোন স্তর। কিন্তু তাতেই বিগত কয়েক বছর ধরে ছিদ্র দেখা গিয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে উন্নত দেশগুলির ভূমিকা নিয়ে
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে মনুষ্যসৃষ্ট নানা কারণেই আজ বড় ক্ষতির মুখে ওজোন স্তর। এর ফলে পৃথিবী আরও বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে ১৯৮৭ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর সুরক্ষার জন্য মন্ট্রিল প্রটোকল মেনে চলার জন্য পৃথিবীর সকল রাষ্ট্র একমত হলেও উন্নত দেশগুলি তা বাস্তবায়ন করছে না বলে অভিযোগ উঠছে দীর্ঘদিন ধরেই। উন্নত, উন্নয়নশীল সহ সমস্ত দেশকেই দ্রুত ক্লোরোফ্লুরো কার্বন বা সিএফসি ব্যবহার বন্ধের উপর জোর দিতে হবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না।
বাড়ছে উদ্বেগ
এদিকে ওজোন স্তর না থাকলে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি সরাসরি পৃথিবীতে পৌঁছে প্রাণী জগত এমনকি উদ্ভিদের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারত। ত্বকের ক্যান্সার থেকে শুরু করে চোখেরও ক্ষতি হতে পারত। নষ্ট হতে পারত পরিবেশের ভারসাম্য। ওজনের কারণেই এই সমস্ত বিপদ থেকে এতদিন রক্ষ পাচ্ছিল মানু। কিন্তু বর্তমান যা অবস্থা তাতে কতদিন এই রক্ষাকবচ অক্ষুণ্ণ থাকে এখন সেটাই দেখার।
পৃথিবী থেকে কতটা উচুঁতে রয়েছে ওজোন স্তর?
এদিকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমণ্ডলের মধ্যে ১৫-৩০ কিমি (মতান্তরে ২০-৫০ কিমি) উচ্চতার মধ্যে ওজন গ্যাসযুক্ত যে বায়ুস্তরটি রয়েছে তাকে ওজোনমণ্ডল বা ওজোনস্তর (Ozonosphere Or, Ozone Layer) বলা হয়। এই স্তরটি মূলত ওজন গ্যাস (O3) দ্বারা গঠিত। সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করতে এই স্তরের জুড়ি মেলা ভার। পাশাপাশি জীববৈচিত্র রক্ষা, বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষাতেও এই স্তরের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। একইসাথে বায়ুমন্ডলীয় তাপের ভারসাম্য বজায় রাখতেও বিশেষ ভাবে সাহায্য করে ওজোন স্তর।