৯০ শতাংশ কার্যকারিতা সত্ত্বেও গলদ রয়েছে অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিনে, জেনে নিন সেই ত্রুটি
৯০ শতাংশ কার্যকারিতা সত্ত্বেও গলদ রয়েছে অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিনে, জেনে নিন সেই ত্রুটি
বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন প্রার্থীদের প্রতিযোগিতায় কোভিড–১৯ মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম এমন চারটে ভ্যাকসিন প্রার্থী আশা দেখাতে পেরেছে। ফাইজার–বায়োএনটেক এবং মর্ডেনা তাদের কোভইড–১৯ ভ্যাকসিন করোনার বিরুদ্ধে ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা দেখাতে সফল হয়েছে, অন্যদিকে রাশিয়ার ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি তাদের ভ্যাকসিন ট্রায়ালে ৯১ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। তবে এই সব ভ্যাকসিনের মধ্যে সবচেয়ে আশা রয়েছে যাকে নিয়ে সেই অ্যাস্ট্রাজেনেকা–অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কোভিড–১৯ ভ্যাকসিন প্রার্থী কার্যকারিতার দু’টি ব্যাপ্তি দেখিয়েছে।
একই ভ্যাকসিনের দু’ধরনের কার্যকারিতা
একটা কার্যকারিতার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ৯০ শতাংশ এবং অন্য রিপোর্টে দেখা গিয়েছে ৬২ শতাংশ। জানা গিয়েছে, ভারতে সরবরাহ করা হয়েছে কোভিশিল্ড ব্র্যান্ড নামে ভ্যাকসিনের মাঝারি ডোজ দেওয়া হয় একটি স্বেচ্ছাসেবীর দলকে, যেখান থেকে ৯০ শতাংশ কার্যকরের রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে। এবং আশ্চর্যজনকভাবে আরও ভালো কার্যকারিতা পাওয়া গেল ‘অজান্তে ভুল'-এর ফল হিসাবে। এই ভুলকে ব্যাখা করতে গিয়ে অ্যাস্ট্রা-জেনেকা ২৫ নভেম্বর একে লাভজনক বলে দায়ি করেছে।
অক্সফোর্ড কোভিড–১৯ ভ্যাকসিনের ভুল কি ছিল
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা কোভিড-বিরোধী ভ্যাকসিন যখন সরবরাহ করেছিলেন এপ্রিলের শেষের দিকে, তখন তারা এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে ক্লান্তি, মাথাব্যাথা এবং হাতে ব্যাথা অনুভব করছেন অনেকে। ভ্যাকসিনের ডোজ সেক্ষেত্রে প্রত্যাশার চেয়ে কমই দেওয়া হয়েছিল। এই ববিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছিল গবেষকদের। যা পরিকল্পনা করা হয়েছিল সেখান থেকে কোনও ত্রুটি হয়েছে কিনা তা দেখতে তাঁরা গোটা প্রক্রিয়াটির রেকর্ড দেখেন। গবেষকরা দেখেন যে যতটা ডোজ পাওয়ার কথা ছিল স্বেচ্ছাসেবকদের ততটা তারা পায়নি। অর্থাৎ প্রকৃত ডোজের তুলনায় অর্ধেক ডোজ পেয়েছিল তারা। প্রায় ৩ হাজার জনকে ইতিমধ্যে এই ডোজ দেওয়া হয়েছিল। দু'টি ডোজ দেওয়া হবে বলে পরকল্পনা করা হয়েছিল। এটা ভ্যাকসিনের বড় ত্রুটি হতে পারত। কিন্তু গবেষকরা সিদ্ধান্ত নেন যে এই ট্রায়াল চালু রাখবে এবং দু'টি ভিন্ন অংশগ্রহনকারীর ওপর এই ট্রায়াল চালাবে। তাহলে অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের প্রথম পুরো ডোজ ও পরে দ্বিতীয় বার পুরো ডোজ দেওয়া হবে চার সপ্তাহ পর। যে দলকে অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছিল তাদের চার সপ্তাহ পর পরো ডোজ দেওয়া হয়।
৯০ শতাংশ কার্যকারিতা মিলছে আধা ডোজে
ফল আসার পর দেখা গেল যে দলকে অর্ধেক ডোজ দেওয়া হয়েছিল তারা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দারুণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সফল হয়েছে। ৯০ শতাংশ অংশগ্রহণকারী সুরক্ষিত। দ্বিতীয় দল, যাদের পুরোমাত্রায় দেওয়া হয়েছিল, তাদের ৬২ শতাংশ কার্যকারিতা দেখা গিয়েছে। যদিও এই অনন্য ধরনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে গবেষকরা সেভাবে কিছু ব্যাখা করতে পারেননি। তবে গবেষকরা এটা জানান যে প্রথম ছোট ডোজটি হয়ত নোভেল করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছিল।
পদ্ধতিগত ত্রুটির কথা স্বীকার
এসবের পরই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার তরফে স্বীকার করে নেওয়া হয়, প্রতিষেধক উৎপাদনে পদ্ধতিগত ত্রুটি ছিল। ডোজের মাত্রা তাই ঠিকমতো নির্ধারণ করা যায়নি। এবার সেই ত্রুটি সংশোধন করে হয়ত নতুন করে ডোজের মাত্রা ঠিক করা হবে। ইতিমধ্যেই ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট এই ভ্যাকসিন ডোজ তৈরি করবে বলে চুক্তি করেছে।
'দেশের অগ্রগতির স্বার্থে’ ফের 'এক দেশ এক ভোটের’ পক্ষে জোরাল সওয়াল মোদীর