নেপালের সাধারণ নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত হিংসার বলি এক, ভোট পড়েছে ৬১ শতাংশ
নেপালে সাধারণ নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত হিংসায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নেপালে রবিবার লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়। রবিবার নেপালে প্রায় ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছে। নির্বাচনের সময় নেপালের একাধিক জায়গা থেকে বিক্ষিপ্ত হিংসা ও সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়। নেপালের বিক্ষিপ্ত হিংসা ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। নেপালে সকাল সাতটায় ২২,০০০ হাজার কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। বিকাল পাঁচটার সময় ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
নেপালের প্রধান নির্বাচন কমিশনার দীনেশ কুমার থাপালিয়া সাংবাদিদের বলেন, দেশব্যাপী ৬১ শতাংশ ভোট পড়েছেন। তবে ভোটের হার বাড়তে পারে। নেপালের বিভিন্ন প্রদেশগুলোতে এখনও বিস্তারিত তথ্য আসেনি বলে তিনি জানান। তবে যে পরিমাণ ভোট পড়বে বলে আশা করা হয়েছিল, তার থেকে কম ভোট পড়েছে। নেপালে বিগত দুটি নির্বাচনের তুলনায় উল্লেৎযোগ্যভাবে ভোটের হার কম পড়েছে। নেপালে ২০১৩ সালের নির্বাচনে ৭৭ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে।
নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি বলেছেন, যে তার সিপিএন-ইউএমএল নেতৃত্বাধীন জোট সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে এবং ১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার গঠন করবে। অন্যদিকে, সিপিন ও মাওবাদী কেন্দ্রের চেয়ারম্যান তথা নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল প্রচণ্ড বলেন, এই নির্বাচনে সম্ভবত নেপালি কংগ্রেসের নেতৃত্বে সরকার গঠন হবে। এনসি নেতা এবং প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ মান সিং বলেন, দেশের পাঁচ দলের যে জোট তৈরি হয়েছে, তারা সরকার গঠন করবে। পাঁচটা দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা নেপালের পরবর্তী সরকারের নেতৃত্ব দেবেন। ভবিষ্যতে দেশের কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ করতে দ্রুত তাঁরা বৈঠকে বসবেন বলেও প্রকাশ মান সিং বলেন।
নেপালের মোট ২৭৫টি সাংসদের মধ্যে ১৬৫জন সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। বাকি ১১০ জন আনুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমে নির্বাচিত হবেন। সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি ভোটররা সাতটি প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন।
নেপালের রাজনৈতির বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই নির্বাচনের পরেও নেপালের সরকারে কোনও স্থিতিশীলতা আসবে না। প্রায় এক দশক ধরে নেপালে মাওবাদী বিক্ষোভের অবসান হয়েছে। মাওবাদীরা সরাসরি মূল ধারার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু গৃহযুদ্ধ শেষ হওয়ার পরে ২০০৬ সাল থেকে নেপালে পূর্ণ মেয়াদের কোনও প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব পালন করেননি।
দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য দলগুলোকে দায়ী করা হয়। দলগুলোরে নিজেদের মধ্যে বিরোধের জেরেই ২০০৬ সালের পর কোনও প্রধানমন্ত্রী পূর্ণ মেয়াদের জন্য নেপালকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি। নেপালের পরবর্তী সরকারের প্রধান কাজ হবে, একটি স্থিতিশীল প্রশাসন গঠন করা, পর্যটন শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা এবং প্রতিবেশী চিন ও ভারতের সাথে সম্পর্কের ভারসাম্য রক্ষা করা।