পুরনো বন্ধুই এখন চিনের প্রধান শত্রু! কাজে এল না নেপালের উপর আধিপত্য কায়েম রাখার নয়া কৌশল
মানচিত্র বিতর্ক হোক বা সীমান্ত সমস্যা, চলতি বছরে চিনের উষ্কানিতে ভারতের বিরুদ্ধে একাধিকবার খড়গহস্ত দেখা গিয়েছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি। এবারই সেই ওলিই পাল্টা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে চিনের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে সরগরম আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক হল। এদিকে নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই ক্রমশ সেদেশের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ আরও হারিয়ে ফেলছে বেজিং। এমনকী বিশেষ ছাপ ফেলত পারল না কাঠমান্ডুতে আগত চিনের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলও।


উত্তপ্ত নেপালের রাজ্য-রাজনীতি
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলি ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহাল ওরফে প্রচন্ডর নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টির গোষ্ঠী দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত নেপালের রাজ্য-রাজনীতি। এমনকী ইতিমধ্যেই নেপালের সরকার ভেঙে নতুন করে নির্বাচনের ডাক দিয়েছেন কেপি শর্মা ওলি। যদিও এই সিদ্ধান্তের ফলে দলের অন্দরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওলি।

পুরনো বন্ধুই এখন চিনের শত্রু
এমনকী পুরনো সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না করা এলিকে দলের চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন প্রচন্ড ও তাঁর অনুগামীরা। এমনকী সরকার ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো সুপারিশটি প্রত্যাহার করার জন্য ওলি-কে নির্দেশ দিয়েছিল চিন। তাতেও বেঁকে বসেছেন ওলি। এমতবস্থায় বর্তমানে দীর্ঘদিনের বন্ধু ওলিই হয়ে উঠেছেন চিনের বর্তমান প্রধান শত্রু।

নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির ভাঙন কার্যত নিশ্চিত
এমতবস্থায় দাঁড়িয়ে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির ভাঙন নিশ্চিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই অবস্থায় কাঠমাণ্ডুর উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর আশঙ্কায় বেজিং থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলকে নেপাল পাঠানো হয় চিনের তরফে। যার নেতৃত্বে ছিলেন চিনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের ভাইস মিনিস্টার গুও ইয়েজো। কাঠমান্ডু পৌঁছেউ তিনি নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির নেতা পুষ্পকুমার দহল ওরফে প্রচণ্ডের সঙ্গে দেখা করেন বলে জানা যায়। দেখা হয়েছে ওলি ও কমিউনিস্ট পার্টির আর এক বড় মুখ মাধবরাওয়ের সঙ্গেও।

ভারত-নেপাল সম্পর্কের উন্নতিতে চাপে চিন
কিন্তু একাধিক বৈঠকের পরেও এখনও কওনও রফাসূত্র মেলেনি বলেই জানা যাচ্ছে। সমাধান তো দূর অস্ত, উল্টে বড় ধাক্কা খেতে হয়েছে চিন-কে। এদিকে নেপালকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের উপরে চাপ তৈরির কাজটি করে এসেছে বেজিং। কিন্তু বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে খানিকটা হলেও বেকায়দায় চিন। এদিকে ভারতও নেপালের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে অগ্রাধিকার দিয়ে কাঠমান্ডুর সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং সাংস্কৃতিক ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর চেষ্টা করেছে। গত কয়েক মাসে ভারতের গিয়েছেন একাধিক উচ্চপদস্থ সরাকারি আমলাও। আর তাতেই চাপে পড়েছে বেজিং।

ওলি বেঁকে বসাতে নতুন করে ঘুঁটি সাজাচ্ছে বেজিং
এদিকে ২০১৮ সালে নেপালি কমিউনিস্ট পার্টি (যুক্ত মার্কসবাদী - লেনিনবাদী) এবং অপর নেতা প্রচণ্ড-র নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি (মাওবাদী) একজো হয়ে তৈরি হয়েছিল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি বা এনসিপি। আর তাতে বড় ভূমিকা ছিল গুও ইয়েজোর। কিন্তু সেই রাস্তাও এখন প্রায় বন্ধের পথে। তাই এখন আলাদা ঘুঁটি সাজাচ্ছে বেজিং।

নয়া জোটে আদৌও কী সুবিধা করতে পারবে চিন ?
সূত্রের খবর, কে পি শর্মা ওলি বেঁকে বসলে কমিউনিস্ট পার্টির প্রচন্ড-মাধবরাও অংশের সঙ্গে নেপালি কংগ্রেস এবং জনতা সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট গড়ে দিয়ে সরকার তৈরিতে মদত দেওয়ার রাস্তায় হাঁটছে চিন। যদিও এই জোটে প্রচন্ডর উপস্থিতিই আগামীতে চিনকে চাপে ফেলবে বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ চিনের হাতের পুতুল হয়ে কাজ করার জন্য এর আগে একাধিকবার ওলির বিরুদ্ধে তোপ দাগতে দেখা গিয়েছে প্রচন্ডকে।
নন্দীগ্রাম হাসপাতালে শুভেন্দু, ফের গণ আন্দোলন হতে সময় লাগবে না, হুঙ্কার প্রাক্তন বিধায়কের