শুধু ভারত নয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের এলোপাথাড়ি মন্তব্যে চটে লাল আফগানিস্তানও
সোমবার, ২২ জুলাই, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প যা যা বক্তব্য পেশ করেছেন
সোমবার, ২২ জুলাই, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প যা যা বক্তব্য পেশ করেছেন, তাতে পিলে চমকে গিয়েছে কূটনীতির দুনিয়ার তামাম বিশেষজ্ঞের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নাকি তাঁকে সপ্তাহ খানেক আগে কাশ্মীর সমস্যার মধ্যস্থতা করতে বলেছেন থেকে শুরু করে "ইরান মিছে কথা বলে, পাকিস্তান নয়" ইত্যাদি নানা মন্তব্য করে ট্রাম্প একের পর এক বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। বিশেষ করে, ভারতের ক্ষেত্রে তাঁর মন্তব্যের জেরে কল্কে পেয়েছে নুইয়ে পড়া কংগ্রেসও। তাঁরা এখন মোদীর কাছে জবাবদিহি চাইছে।
ইতিমধ্যে আফগানিস্তানেও ট্রাম্পের কথার প্রভাব পড়েছে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে আফগানিস্তান সমস্যার সমাধানে পাকিস্তানের গুরুত্বের কথা বলে ট্রাম্প বলেন চাইলে তিনি এক সপ্তাহের মধ্যে আফগানিস্তানের যুদ্ধে জিতে দেখিয়ে দিতে পারেন কিন্তু তিনি ১০ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হতে চান না!
বলেন কী আমেরিকান প্রেসিডেন্ট?
আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি আশরাফ গনি মঙ্গলবার, ২৩ জুলাই, ট্রাম্পের এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা চান। আফগানিস্তানের অস্তিত্বই মুছে যেতে পারতো, এমন হুমকিমূলক কথা ট্রাম্পের কথা শুনে বেশ উদ্বিগ্ন বোধ করে কাবুল প্রশাসন। "আফগানিস্তানের যুদ্ধ জেতার জন্যে যদি আমি ঝাঁপাতাম, দেশটির অস্তিত্বই থাকতো না," এদিন বলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের এই সমস্ত শুনে আফগানিস্তানে বেশ শোরগোল পরে গিয়েছে। এমনিতেই যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটির মানুষজন তাঁদের ভবিষ্যৎ ভেবে উদ্বিগ্ন। মার্কিন সেনা তাঁদের দেশ থেকে বেরিয়ে গেলে এবং তালিবান ফের জাঁকিয়ে বসলে পরিণতি কী হতে পারে ভেবেই তাঁরা সন্ত্রস্ত।
ইমরান খানের সঙ্গে ট্রাম্পের আচমকা দহরম মহরম দেখে অবাক আফগানিস্তানও
রাষ্ট্রপতি গনির কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে যে ট্রাম্পের বক্তব্যের সারাংশ জানতে চাওয়া হয়েছে কূটনৈতিক রীতিনীতি মেনেই। এছাড়াও, আফগানিস্তান সমস্যা থেকে একমাত্র পাকিস্তানই আমেরিকাকে মুক্তি দিতে পারে, এমন কথা বলেও ট্রাম্প কাবুলের অস্বস্তি বেদম বাড়িয়েছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে আফগানিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। ভারতের মতো আফগানিস্তানও ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে তাদের দেশে জঙ্গিদের মদত দেওয়ার অভিযোগ এনেছে অনেকবার। আর তাই ট্রাম্প যখন দাবি করেন যে মার্কিন-পাকিস্তান সম্পর্কের সম্ভাবনা বিরাট, তখন কাবুল অহেতুক ক্ষুব্ধ হয় না।
তালিবানের সঙ্গে কথায় আফগান সরকার না থাকায় এমনিতেই ক্ষুব্ধ গনি
সম্প্রতি কাতারের রাজধানী দোহায় আফগানিস্তানে শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে তালিবানের সঙ্গে মার্কিন প্রতিনিধিরা বৈঠক চালাচ্ছেন একের পর এক। পাকিস্তানের সমর্থনও রয়েছে এতে। চিনও রয়েছে। কিন্তু আফগানিস্তানের নির্বাচিত সরকারেরই এতে কোনও ভূমিকাই নেই আর তাতেও রীতিমতো চটে রয়েছে গনি প্রশাসন। আফগানিস্তানের সরকারকে বাদ রেখে সেদেশের শান্তি আলোচনা কীভাবে চলতে পারে, তা নিয়ে বেজায় বিস্মিত রাষ্ট্রপতি গনি। আর এরই মাঝে ট্রাম্পের মুখে আফগানিস্তানের অস্তিত্ব নাও থাকতে পারতো জাতীয় উক্তি শুনে আফগানরা আরও খাপ্পা।