পরমাণু বোমা নিয়ে ফের ইরানকে হুঁশিয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের
নিষেধাজ্ঞা ও অভ্যন্তরীণ বিক্ষোভের জেরে ইরানের অবস্থা শোচনীয়। এমনটাই নাকি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানিয়েছেন তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। আর এই কথা জানিয়ে ট্রাম্প রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি ইরানকে মধ্যস্থতা করতে বাধ্য করব। তবে ওরা যদি মধ্যস্থতায় নাও আসে আমি ওদের বলে রাখতে চাই, কোনও পরমাণু বোমা নয়, আর নিজের দেশের বিক্ষোভকারীদের মারবেন না।'
'অনিচ্ছাকৃত' রকেট হামলার জেরেই ইউক্রেনের বিমান ভূপাতিত
প্রসঙ্গত, ইরান এর আগে মেনে নিয়েছিল যে তাদের 'অনিচ্ছাকৃত' রকেট হামলার জেরেই ইউক্রেনের বিমান ভূপাতিত হয়। সেই ঘটনায় ১৭৬ জনের মৃত্যু হয় যাদের সিংহভাগ ইরানের নাগরিক ছিলেন। বেশ কয়েকজন কানাডার নাগরিকও ছিলেন। এই ঘটনার পরেই সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছে ইরানের বিক্ষোভকারীরা।
প্রথমে মার্কিন দাবি নস্যাৎ করলেও পরে দোষ মেনে নেয় ইরান
এর আগে একাধিক মার্কিন আমলারা দাবি করতে শুরু করেন ইউক্রেনের বিমান দুর্ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ইরানই। তবে প্রথমে মার্কিন অভিযোগকে স্পষ্ট অস্বীকার করে ইরান। তবে তদন্তের রিপোর্ট সামনে আসতেই মোড় ঘুরে যায়। এই প্রসঙ্গে ইরানের সরকারি টিভি চ্যানেলকে সেদেশের রাষ্ট্রপতি হাসান রুহানি বলেন, 'সামরিক বাহিনী তাদের তদন্ত সম্পন্ন করেছে। তারা জানিয়েছে খুব দুর্ভাগ্যবসত এবং মানুষের ত্রুটির কারণেই এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। এতে ইউক্রেনের বিমানে থাকা ১৭৬ জনই প্রাণ হারিয়েছেন।'
ইরানের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়ানো
এদিকে ইরানের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়ানোর ফলে দেশটি ক্রমশই মধ্যস্থতার দিকে যেতে বাধ্য হবে বলে মত প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, 'তাদের উপর জারি করা আর্থিক নিষেধাজ্ঞার জেরে তারা চাপে রয়েছে। আর যখন রাস্তায় ছাত্ররা মিছিল করে স্লোগান তোলে, 'একনায়কের মৃত্যু চাই', তখন দেশের ক্ষমতাশীন মানুষেরা আরও চাপে পড়ে যায়। আর এই চাপের জেরেই ওরা আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হবে।'
এয়ারবেসে মুহুর্মুহু রকেট হামলা ইরানের
অবশ্য ট্রাম্প যাই বলুক ইরান যে এখনই আলোচনার পথে হাঁটছে তা স্পষ্ট হয়ে যায় রবিবারের রকেট হামলাতেই। রবিবার বাগদাদের উত্তারাংশে ইরাকি এয়ারবেসে মুহুর্মুহু রকেট হামলা ইরানের। সেখানেই রয়েছে আমেরিকার সেনা ঘাঁটি। এই হামলায় ৪ ইরাকি সৈন্য জখম হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ইরাকি সেনার তরফে বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, আটটি কাত্যিউশা রকেট নিয়ে হামলা চালানো হয় অল বাদাল এয়ারবেসে। বিগত কয়েক দিনে আমেরিকার সেনা ঘাঁটিগুলিতে বেশ কয়েকটি রকেট হামলা চালায় ইরান।
বিবাদের সূত্রপাত
এর আগে ৩ জানুয়ারি বাগদাদ বিমানবন্দরে আমেরিকার সেনার অভিযানে মারা যান ইরানের জেনারেল কাশেম সুলেমানি। বাগদাদের মার্কিন দূতাবাসে হামলার বড়সড় মূল্য দিতে হবে তেহরানকে এমনটাই ঘোষণা করেছিলেন অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, আর হলও তাই৷ দেশের বাইরে কর্মরত আমেরিকার নাগরিকদের রক্ষার জন্য সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে৷ পদক্ষেপ করা হয়েছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই৷ এই অভিযানের পর থেকেই ইরান ও আমেরিকার মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়।