আর নয় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড, চাপের মুখে পড়ে পিছু হটছে তালিবানেরা
আর নয় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড, নতুন নির্দেশিকা তালিবানদের
কাবুলের মসনদে বসার পর থেকেই ধীরে ধীরে স্বমহিমায় ফিরতে শুরু করে তালিবানেরা। নতুন করে মাথাচাড়া দেয় মধ্যযুগীয় বর্বরতা। সপ্তাহ খানেক আগেই দেখা যায় আফগানিস্তানের হেরাট প্রদেশে ক্রেন থেকে দড়ি দিয়ে ঝুলছে তিনটি দেহ। তিনটি গুলিতে ঝাঁঝরা, ক্ষতবিক্ষত। হেরাট প্রদেশে একটি বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগে এই তিনজনকে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল তালিবানেরা। এবার এই নয়া শাসনেই বেড়ি লাগাতে চলেছে নয়া আফগান সরকার।
বাড়ছে চাপ
এদিকে ক্ষমতা দখলের পর থেকে বারেবারেই একাধিক মধ্যযুগীয় আইন প্রণনয়ের পথে হাঁটতে থাকে তালিবানেরা। অন্যদিকে চোরেদের হাত কেটে নেওয়া, প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের মতো একাধিক কালা আইন প্রণয়ন করা হয়। এদিকে আজ থেকে ২০ বছর আগে যে সময় তালিবানেরা আফগানিস্তানের তখতে ছিল তখনও এই ধরণের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু ছিল। কিন্তু এবারে মসনদে বসে নিজেদের আগের থেকে অনেক বেশি নমনীয় বলে দাবি করেছিল তালিবরা। যদিও বাস্তব চিত্র অন্য কথাই বলছিল।
বর্হিবিশ্বের কাছে কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে তালিবানেরা
এদিকে হেরাতের ঘটনার পর ফের বর্হিবিশ্বের কাছে কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে তালিবানেরা। আর তাতেই তৈরি হয় নতুন চাপ। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা সমালোচনার মুখে পরেই প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের মতো ভয়াবহ বিধান থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে তালিবরা।এদিকে হেরাটের ঘটনায় মূল অভিযোগের তীর ওঠে ডেপুটি গভর্নর মৌলানা আহমেদ মুহাজিরের দিকে। তার ভূমিকা নিয়েও উঠতে শুরু করেছে একাদিক প্রশ্ন।
কী বলা হয়েছে নির্দেশিকায়
অন্যদিকে তালিবান সরকারের তরফে বর্তমানে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ বিনা কোনোভাবেই স্থানীয় ভাবে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিধান কার্যকর করা যাবে না। আদালত নির্দেশ দিলে তবেই এই নির্দেশ কার্যকরী হবে। এই প্রসঙ্গে তালিবানদের তরফে বলা হয়েছে, "প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড এবং মৃতদেহ ঝোলানোর মতো ঘটানো এড়িয়ে চলতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের তরফে কোনও নির্দেশ না মানলে এই ধরণের কোনও কাজই কার্যকর করা যাবে না।"
কী বলছেন তালিবান মুখপাত্র
এই প্রসঙ্গে তালিবান মুখপাত্র বলেন, "যদি এই নির্দেশ না মানার পরেও কোনও অপরাধীকে এই ধরণের শাস্তি দেওয়া হয়, তাহলে কেন এই কাজ করা হল তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঠিক কী অপরাধ করেছিল তার ব্যাখা অবশ্যই দিতে হবে জনস্বার্থের কথা মাথায় রেখেই। " প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকে তালিবান শাসিত আফগানিস্তানে অপরাধীদের প্রকাশ্যে সাজা দেওয়ার ঘটনা ছিল রোজকার ঘটা। একাধিক স্টেডিয়ামকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছিল মোল্লা মহম্মদ ওমরের আমলে।