ওমিক্রন রুখতে হবেই, নিজের বিয়ে বাতিল করলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী
করোনা ভাইরাস রুখতে প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ নিতে দেখা গিয়েছে নিউজিল্যান্ডকে। এখন বিশ্বকে নাস্তানাবুদ করছে ওমিক্রন। তাকে রুখতেও কড়া সিদ্বান্ত নিয়েছে এই দেশ।কিন্তু সে দেশের প্রধানমন্ত্রী এমন কান্ড করেছেন যা অনেকেই করতে পারবেন না। সবার আগে তো দেশের স্বার্থ। তাও প্রধানমন্ত্রী বলে কথা। দায়িত্ব আরও অনেকগুন বেশি। তাই নিজের বিয়ে বাতিল করলেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।

জাসিন্ডা আর্ডেন , তিনি নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। করোনা রুখতে নয়া নিয়ম জারি করেছে দেশ ৷ সেই বিধি মেনে আপাতত নিজের বিয়ে বাতিল করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ৷ বিয়ের অনুষ্ঠান বাতিল করার খবর নিজেই জানিয়েছেন তিনি ৷
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, 'এখন আমার বিয়ে হচ্ছে না ৷' রবিবার রাত থেকেই সেখানে জারি হচ্ছে নয়া কোভিডবিধি ৷ নয়া নির্দেশিকায় মাস্ক পরা ও জমায়েতকে সীমিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
আসলে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের পরই নিউজিল্যান্ডে একসঙ্গে ৯ জনের ওমিক্রন ধরা পড়ে। এমন ভাবে একসঙ্গে এতজন আক্রান্ত হয়েছেন তাও বিয়ে বাড়িতে, তাই গোষ্ঠী সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই সংক্রমণ উত্তর থেকে দক্ষিণের দ্বীপে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ৷
জানা গিয়েছে উত্তর দ্বীপের অকল্যান্ডে বিয়ে ও অন্যান্য কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিল একটি পরিবার। এরপর দক্ষিণ দ্বীপের নেলসনে ফিরেছে ওই পরিবার৷ ঘটনা হল যে বিমানে ফিরেছিল ওই পরিবার সেই পরিবারসহ বিমান সেবিকাও করোনা আক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। তাদের সবার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে ৷ এরপরেই সংক্রমণ রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেয় নিউজিল্যান্ডের প্রশাসন ৷
নিউজিল্যান্ডে মাস্ক পরার উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে ৷ ১০০ জনের বেশি জমায়েত করা যাবে না রেস্তোরাঁ, বার এবং অন্যান্য ঘরোয়া অনুষ্ঠানে। এমনই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ৷ যদিওবা কেই কোনও অনুষ্ঠান করেন সেখানে টিকার পাসের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। টাননা থাকলে অনুষ্ঠানে উপস্থিতির সংখ্যা ২৫-এর মধ্যে রাখতে হবে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী আর্ডেন ৷
নিউজ়িল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর বিয়ের তারিখ জানা যায়নি। শুধু জানা গিয়েছে দীর্ঘদিনের সঙ্গী তথা ফিশিং শো-এর উপস্থাপক ক্লার্ক গেফোর্ডকে তিনি বিয়ে করবেন। কিন্তু সব এখন বন্ধ। কবে হবে বিয়ে? নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, "এটাই জীবন ৷ আমি আলাদা কেউ নই ৷ অতিমারির ধ্বংসাত্মক প্রভাব পড়েছে হাজার হাজার নিউজিল্যান্ডবাসীর উপর ৷ ভালবাসার কোনও মানুষ অসুস্থ হলেও তাঁর পাশে থাকতে না পারাটা আরও কষ্টের ৷ এটা আমার কাছে অনেক বেশি বেদনার ৷"
করোনার সংক্রমণ রুখতে ২০২০ সালের মার্চ ল থেকেই বিদেশিদের জন্য দরজা বন্ধ করে রেখেছে নিউজিল্যান্ড ৷ জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ধীরে ধীরে সেই দরজা খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ৷ প্রতিবেশী অস্ট্রেলিয়াতে ওমিক্রনের বাড়বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখে বিদেশিদের জন্য সীমান্ত খোলার ভাবনা আপাতত ফেব্রুয়ারির শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ খুব ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে মানুষ নিউজিল্যান্ডে যেতে পারছেন, তবে সে ক্ষেত্রে সরকারের কোয়ারান্টিন পরিষেবা নেওয়ার জন্য আবেদন করতে হচ্ছে ৷ ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে আর সেই আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না ৷