চিনের চেষ্টা ব্যর্থ, নেপাল নিয়ে বড় 'কূটনৈতিক' জয় মোদী সরকারের! প্রধানমন্ত্রীকে বহিষ্কার করল দল
দল থেকে বহিষ্কার করা হল নেপালের প্রধানমন্ত্রী (nepal prime minister) কেপি শর্মা ওলিকে (kp sharma oli)। এদিন নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির একটি অংশের বৈঠকের পরেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। আরও জানা গিয়েছে পুষ্পকমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যায় স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতি! একনজরে জেলাগুলির অবস্থা

বাতিল করা হয়েছে সদস্যপদ
কমিউনিস্ট পার্টির স্প্লিন্টারগ্রুপের মুখপাত্র নারায়ণ কাজি শ্রেষ্ঠা ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দলীয় সদস্যপদ বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার পথে নেমেছিল দলেরই একাংশ
শুক্রবার দলে ওলির বিরোধী গোষ্ঠী পথে নেমেছিল। পাশাপাশি ওলির সদস্যপত বাতিল করার হুঁশিয়ারি দিয়েছিল। একমাসের কম সময়ের মধ্যে দ্বিতীয়বারের জন্য পথে নেমেছিল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির একটি অংশ। ২০ ডিসেম্বর নেপালের ২৭৫ আসনের সংসদ ভেঙে আগামী এপ্রিল মে মাসের নতুন করে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করেছিলেন ওলি। সেই সিদ্ধান্তেরই বিরোধিতা করেছিল দলের একটি অংশ। নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচনের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী।

আগেই সরানো হয়েছিল দলের চেয়ারম্যান পদ থেকে
নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির একটি অংশের নেতা মাধব নেপাল জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীকে দলীয় পদ থেকে সরানোর ব্যাখ্যা ওলির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে ওলিকে শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরানো হয়েছে। এছাড়াও ওলির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। তাই এই মুহুর্তে ওলির কমিউনিস্ট পার্টির পদে থাকার যোগ্যতা নেই বলেও দাবি করা হয়েছে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির একটি অংশের তরফে। তবে ওলি চিঠির কোনও উত্তর দেননি। যদি তিনি (ওলি) নিজের শেষ ভুলের কথা কবুল না করেন, তবে ওলির সঙ্গে সমঝোতার আর কোনও জায়গা নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির তরফে জানানো হয়েছে কারও মনে এই ধারণা থাকা উচিত নয় যে এনসিপি কেপি ওলির সামনে মাথা নত করবে। কেননা দল মূল্যবোধ ও বিশ্বাসের রাজনীতি করে। ১৫ জানুয়ারি প্রচণ্ডের নেতৃত্বাধীন অংশ ওলির বিরুদ্ধে দলের নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলেছিল। অন্যদিকে ওলি জানিয়েছিলেন দলের প্রচণ্ডের নেতৃত্বাধীন অংশ তার বিরুদ্ধে নে কনফিডেন্স মোশন আনতে চাওয়ার পাশাপাশি প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট মোশন আনতে চলেছেন। তাই তিনি সংসদ ভেঙে দিয়েছিলেন। ভারতের তরফে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে নেপালের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম চেয়ারম্যান হলেন পুষ্পকমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড। আর দ্বিতীয় চেয়ারম্যান হলেন মাধব নেপাল। ২০১৭-তে সাধারণ নির্বাচনে জয়ের পরে ২০১৮-র মে মাসে ওলির সিপিএম-ইউএমএল এবং প্রচণ্ডের এনসিপি মাওয়িস্ট সেন্টার একসঙ্গে হয়ে নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করে।

ওলির ঘোষণার পরেই দল দুভাগ
প্রসঙ্গ উল্লেখ্য ডিসেম্বরে নেপালের প্রধানমন্ত্রী ওলি সংসদ ভেঙে দিয়ে নতুন করে নির্বাচন ঘোষণার পরেই এনসিপি দুভাগে ভাগ হয়ে যায়। আর দুপক্ষই নিজেদেরকে আসল বলে দাবি করতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত নেপালের নির্বাচন কমিশনই ঠিক করবে এই দুভাগে কোন অংশ আসল। তবে এনসিপির মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে নিয়ে ডিসেম্বরেই চার সদস্যের উচ্চপর্যায়ের দলকে নেপালে পাঠিয়েছিল চিন। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ অবশ্য নেপালের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ভারতের কূটনৈতিক জয় হিসেবেই দেখছেন। কেননা ভারতের তরফে করোনার ভ্যাকসিন নেপালে পাঠানোর পরে এই সিদ্ধান্ত যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ।