শব্দের থেকে ৫ গুণ বেশি গতিতে পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়ল গ্রহাণু, তারপর কী ঘটল
শব্দের থেকে ৫ গুণ বেশি গতিতে পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়ল গ্রহাণু, তারপর কী ঘটল
পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণু, তা আগে থেকেই সতর্ক করছিল আন্তর্জাতিক মহারাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। পৃথিবীর কাছ দিয়েই যে চার গ্রহাণু ধেয়ে যাবে, তাদের নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বলেও জানানো হয়েছিল নাসার তরফে। তিনটি গ্রহাণু পৃথিবীর কান ঘেঁষে কোনওরকমে বেরিয়ে গেলেও চতুর্থ গ্রহাণুটি আছড়ে পড়ল পৃথিবীর উপর। কিন্তু তারপর কী ঘটল?
চতুর্থ গ্রহাণুটি আছড়ে পড়ে পৃথিবীর বুকে
গত ১১ মার্চের ঘটনা। লাইন দিয়ে চার গ্রহাণু ধেয়ে আসছিল পৃথিবীর দিকে। চারটি গ্রহাণুই পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে যাবে বলে জানানো হয়েছিল। সেইমতো এক এক করে তিনটি গ্রহাণু বেরিয়ে যায় পৃথিবীর পাশ দিয়ে। কিন্তু চতুর্থ গ্রহাণুটি আছড়ে পড়ে পৃথিবীর বুকে। গ্রিনল্যান্ডের পরিত্যক্ত অঞ্চলে গিয়ে পড় ওই গ্রহাণুটি। তার প্রভাবে কোনও মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি না হলেও, কোনও প্রভাব পড়বে কি না খতিয়ে দেখছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
পৃথিবীর কোথায় আছড়ে পড়ল গ্রহাণু
নাসা প্রথমে জানিয়েছিলেন পৃথিবী থেকে ২৮৯০ কিলোমিটার দূর দিয়ে বেরিয়ে যাবে গ্রাহণুটি। কিন্তু গ্রহাণুটি মাধ্যাকর্ষণের টানে গতিপথ খানিকটা পরিবর্তন করে। ফলে তা আরও পৃথিবীর কাছে চলে আসে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণকে উপেক্ষা করতে না পেরে গ্রহাণুটি গ্রিনল্যান্ডের উপর আছড়ে পড়ে। তা নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও রক্ষা এই যে গ্রহাণুটি এক গ্রিনল্যান্ডের পরিত্যক্ত স্থানে এসে পড়ে। তা না হলে বড় কোনও বিপদ ঘটতে পারত। তার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে পৃথিবী।
গতিও নিরীক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে গ্রহাণুটির
এ ব্যাপারে কানাডার ওয়াস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, 'ই-৮৫' নামে ওই গ্রহাণুটি শনিবার ভোররাতে আইসল্যান্ড উপকূলের কাছে পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করে। ভোররাতে ৩ টে ৫৭ মিনিট নাগাদ আইসল্যান্ড উপকূলের কাছে আছড়ে পড়ার সেই দৃশ্য ইনফ্রা-সাউন্ডে ধরাও পড়েছে। এবং তার গতিও নিরীক্ষণ করা সম্ভব হয়েছে।
গ্রহাণুটির প্রস্থ ছিল অনুমানের তিন থেকে চার
কানাডার ওই বিজ্ঞানী আরও জানান, গ্রহাণুটির প্রস্থ ছিল তিন থেকে চার মিটার অর্থাৎ ১০ থেকে ১৩ ফুট। আর তার গতিবেগও নেহাত কম ছিল না। প্রতি সেকেন্ড তার গতি ছিল ১৫ কিলোমিটার। নাসা এর আগে জানিয়েছিল গ্রহাণুটির প্রস্থ এক মিটার বা তিন ফুটের মতো হবে। কিন্তু আদতে দেখা যাচ্ছে তা সেই অনুমানের তিন বা চার গুণ।
পাঁচটি গ্রেনেড বিস্ফোরণের সমান শব্দ!
বিজ্ঞানীরা জানান, বাস্তবে আকার বড় হলেও, গ্রহাণুটির সবথেকে আশঙ্কাজনক বিষয় ছিল শব্দের থেকেও পাঁচগুণ বেশি ছিল গতিবেগ। এই গতিবেগ মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারত পৃথিবীর বুকে। ওই গ্রহাণুটি ফাঁকা স্থানে আছড়ে পড়ায় এ যাত্রায় রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানান, গ্রাহণুটি আছড়ে পড়ার পর বিরাট বিস্ফোরণ হতে পারত। সেই বিস্ফোরণ প্রায় পাঁচটি গ্রেনেড বিস্ফোরণের সমান, কিন্তু উপকূলবর্তী অঞ্চলে তা আছড়ে পড়ায় সেই ক্ষতি এড়ানো সম্ভবপর হয়েছে।