নাপা: ঔষধ সেবনে নয়, বরং বিষ প্রয়োগে মারা গেছে দুই শিশু, বলছে পুলিশ
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় তাদের মাকে আটক করে আদালতে উপস্থাপন করেছে পুলিশ।
বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায জেলার আশুগঞ্জের দুর্গাপুর ইউনিয়নে দুইটি শিশুকে বিষ প্রয়োগে হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শিশু দুটির মাকে আটক করেছে পুলিশ।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বিবিসিকে বলেছেন আটক হওয়া নারী পুলিশের কাছে পুরো ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং আজই তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হচ্ছে।
"আজ ভোরে তাকে আটক করেছি আমরা। তিনি সব কিছু স্বীকার করেছেন। তিনি ও তার কথিত প্রেমিক পরিকল্পিতভাবে দুই শিশুকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেন। পরে ফার্মেসি থেকে ঔষধ এনে মুখে ঢেলে দেন যাতে সবাই মনে করে ঔষধের বিষক্রিয়ায় এমনকি হয়েছে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।
শিশু দুটির বাবা তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাও দায়ের করেছেন।
গত দশই মার্চ নাপা ব্র্যান্ডের প্যারাসিটামল সিরাপ সেবনের পর সাত ও পাঁচ বছর বয়সী দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন খবরের পর সারা দেশ থেকে ঔষধটির একটি ব্যাচের নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
নাপা খেয়ে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ, সারা দেশ থেকে সিরাপের নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে
ভেজাল প্যারাসিটামলে শিশু মৃত্যু:আসামীরা খালাস
অতিমাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক খেলে কী ক্ষতি হয়
শিশুদের মধ্যে অটিজমের প্রথম লক্ষণগুলো কী
এছাড়া খবরটি প্রকাশিত পর জেলার সকল ঔষধের দোকানকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নাপা সিরাপ ও নাপা ড্রপ বিক্রি বন্ধ রাখার জন্য এক বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ জানিয়েছিলা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি।
বাংলাদেশের বড় ঔষধ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি প্যারাসিটামলের জনপ্রিয় ব্র্যান্ড নাপা।
এই ব্র্যান্ডের সাসপেনশন বা সিরাপ শিশুদের জ্বর বা ব্যথায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়।
পরে দেশের প্রায় সব জায়গা থেকে ওই ঔষধের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ওই ঔষধে কোন ধরণের ক্ষতিকর উপাদান না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।
ওদিকে দুই শিশুর বাবা তার স্ত্রী ও অপর একজনকে আসামী করে বুধবার খুনের মামলা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শিশু দুটির বাবা একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ব্যক্তি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলছেন যে আসামী অপর ব্যক্তির সাথে ওই নারীর প্রেমের সম্পর্ক ছিলো ও তারা বিয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন বলে ওই নারী জিজ্ঞাসাবাদে তাদের জানিয়েছেন।
"তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিশু দুটিকে মিষ্টির সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে দেন সেই নারী। তবে প্রথম থেকেই তার আচরণ ছিলো সন্দেহজনক," বলছিলেন তিনি।
তিনি জানান তারা এখন ওই 'নারীর প্রেমিক' ব্যক্তিটিকে আটকের চেষ্টা চালাচ্ছেন।