ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন্দ মুলচান্দানি সিআইএ’র সিইও নিযুক্ত হলেন, গর্বিত করলেন দেশকে
নন্দ মুলচান্দানি, একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি হিসেবে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি-র প্রথম জন বা চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হলেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত নন্দ মুলচান্দানি সিআইএর সিইও নিযুক্ত হলেন। এই প্রথম কোনও ভারতীয় এই পদে বসলেন। নন্দ মুলচান্দানি, একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি হিসেবে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি-র প্রথম জন বা চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নিযুক্ত হয়ে দেশকে গর্বিত করলেন নন্দ মুলচান্দানি।
সিআইএ ডিরেক্টর উইলিয়াম জে বার্নস রবিবার ঘোষণা করেছেন, নন্দ মুলচান্দানি সিআইএর সিইও হিসেবে নিযুক্ত করা হচ্ছে। সিআইএ-এর মতে, মুলচান্দানির সিলিকন ভ্যালিতে কাজ করেছেন। সিলিকন ভ্যালিতে তাঁর কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে ২৫ বছরেরও বেশি। তাঁর সেই দক্ষতাকে কাজে লাগাতেই সিআইএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ করা হয়েছে।
মুলচান্দানি দিল্লির ব্লুবেলস স্কুল ইন্টারন্যাশনালে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। মুলচান্দানি কর্নেল থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এবং ম্যাথ ডিগ্রি, স্ট্যানফোর্ড থেকে ম্যানেজমেন্টে মাস্টার অফ সায়েন্স ডিগ্রি এবং হার্ভার্ড থেকে পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
তারপর নন্দ মুলচান্দানি দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে সিলিকন ভ্যালিতে কাজে। সিআইএ-তেও তিনি যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। ব্যক্তিগত সেক্টর, স্টার্টআপ এবং বিভিন্ন পদের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি এসেছেন সিআইএ-র এই বড় পদে। মার্কিন সংস্থা সিআইএ একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এদিন নন্দ মুলচান্দানিকে নিয়ে এই বার্তা দিয়েছেন। সিআইএ জানিয়েছে, মূলচান্দানির নেতৃত্বে এজেন্সি অত্যাধুনিক উদ্ভাবনগুলিকে কাজে লাগাবে বলে তাদের আশা। এবং আগামীদিনের উদ্ভাবনগুলির জন্য আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সিআইএ'র মিশনের জন্য তার রূপরেখা তৈরি করবেন।
তাঁর নিয়োগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে, মুলচান্দানি বলেন, আমি সিআইএ-র ওই পদে যোগ দিতে পেরে সম্মানিত। এজেন্সির সব অসাধারণ প্রযুক্তিবিদ এবং এলাকা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কাজ করার জন্য অপেক্ষা করে আছি। যারা ইতিমধ্যেই বিশ্বমানের বুদ্ধিমত্তা এবং সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন, একটি সম্পূর্ণ জ্ঞান তৈরিতে সহায়তা করার জন্য কৌশল তৈরি করেছেন, তাদের সঙ্গে কাজ করব। এটা একটা রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা প্রদান করবে। আশা করি সকলের সঙ্গে একটা ভালো কাজ উপহার দিতে পারব।
সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি যা সিআইএ নামেও পরিচিত, তা হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আওতাধীন একটি বেসামরিক গোয়েন্দা সংস্থা। এটি একটি স্বাধীন সংস্থা যার দায়িত্ব হল যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং উচ্চপদস্থ নীতিনির্ধারকদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করা। এখন সেই গুরুত্বশালী কাজ হবে একজন ভারতীয় বংশোদ্ভুতের নেতৃত্বে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে গঠিত অফিস অফ স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেসের উত্তরসূরি হিসেবে সিআইএ'র জন্ম। এর কাজ ছিল যুক্তরাষ্ট্র সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন শাখা-প্রশাখার মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করা। ১৯৪৭ সালে অনুমোদিত হওয়া ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বা জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সিআইএ গঠন করা হয়, যাতে বলা হয় 'এটি কোনো পুলিশ বা আইন রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান নয়। দেশে কিংবা বিদেশে এই সংস্থা কাজ করতে পারে।
সিআইএ'র প্রাথমিক কাজ হচ্ছে বিদেশি সরকার, সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা এবং তা জাতীয় নীতিনির্ধারকদের কাছে তা সরবরাহ ও পরামর্শ প্রদান করা। সিআইএ এবং এর দায়বদ্ধতা ২০০৪ সালে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। ২০০৪-এর ডিসেম্বরের পূর্বে সিআইএ ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা; এটি শুধু নিজের কর্মকাণ্ডই নয়, বরং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ডও দেখাশোনা করতো। কিন্তু ২০০৪ সালে অনুমোদিত ইন্টেলিজেন্স রিফর্ম অ্যান্ড টেররিজম প্রিভেনশন অ্যাক্ট, ২০০৪ দ্বারা তা পরিবর্তিত হয়।