আমেরিকা-কানাডা সীমান্তে ভারতীয় পরিবারের রহস্যমৃত্যু
আমেরিকা-কানাডা সীমান্তে ভারতীয় পরিবারের রহস্যমৃত্যু
কানাডার ভীষণ শৈত্যপ্রবাহ সহ্য করতে পারেননি। সেই কারণেই নাকি কানাডা-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের কাছে মৃত্যু হল এক ভারতীয় পরিবারের৷ কিন্তু শুধুই কি শৈত্যপ্রবাহের কারণে মৃত্যু ঘটল ওই পরিবারের? ঘটনাজুড়ে রহস্যের গন্ধ কিন্তু পিছু ছাড়তে চাইছে না। কানাডা প্রশাসন জানিয়েছে, কিছু সময় পূর্বেই ওই পরিবার সীমান্তের কাছাকাছি অঞ্চলে বসবাস করতে শুরু করে। তাদের বক্তব্য , মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তি তাঁদের ওই অঞ্চলে বসবাস করতে বলেছিল।
জানা যাচ্ছে, ওই পরিবারের চারজনই গুজরাটের বাসিন্দা৷ এর মধ্যে ৩৯ বছর বয়সী বলদেবভাই প্যাটেল, ৩৭ বছর বয়সী বৈশালীবেন জগদীশকুমার প্যাটেল, ১১ বছরের শিশু ভিহাঙ্গি জগদীশকুমার প্যাটেল এবং ৩ বছর বয়সী শিশু ধার্মিক জগদীশকুমার প্যাটেলের মৃত্যু হয়েছে৷ গত ১৯ জানুয়ারি তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্তের মাত্র ১২ মিটার দূরে এমার্সন-মানিটোবা অঞ্চল থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁদের দেহ। মানিটোবা রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্ট পুলিশ তাদের দেহ উদ্ধার করে।
জানা গিয়েছে, এঁরা প্রত্যেকেই গুজরাটের বাসিন্দা। গুজরাটের কালোল তাঁদের আদি বাসস্থান৷ স্থানীয় প্রশাসন এর আগে জানিয়েছিল, মৃতদের মধ্যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও মহিলা, একজন কিশোর ও এক শিশু রয়েছে৷ তবে এখন জানা গিয়েছে, কিশোর নয়, এক কিশোরীর মৃত্যু হয়েছে৷ তাঁদের প্রত্যেকের অটোপসি করা হয় এবং ২৬ জানুয়ারি তাঁদের পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারে কানাডা প্রশাসন৷ মানিটোবার প্রধান মেডিক্যাল এক্স্যামিনারের দফতর জানিয়েছে, প্রবল শীতের জন্যই মৃত্যু হয়েছে ওই চারজনের৷ এই মর্মে বৃহস্পতিবার স্থানীয় প্রশাসন একটি বিবৃতিও দেয়। ওটাওয়াতে ভারতীয় হাই-কম্যান্ডও সাংবাদিক সম্মেলনে চারজনের অপমৃত্যু স্বীকার করে নিয়েছে৷ মৃত পরিবারের সমস্ত পরিজনকে সমবেদনা জানিয়েছে ভারতীয় হাইকম্যাণ্ড। এই রূপ মৃত্যুর জন্য শোকপ্রকাশও করা হয়েছে৷
কানাডা প্রশাসন জানিয়েছে, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি টরোন্টোতে এসে পৌঁছোয় প্যাটেল পরিবার৷ কানাডা-মার্কিন সীমান্তের দিকে ১৮ তারিখ এসে পৌঁছোয় তারা৷ এরপরই তাদের মৃত্যু ঘটে৷ একটি প্রেস বিবৃতিতে কানাডা প্রশাসন জানিয়েছে, অঞ্চলটির কাছে কোনও পরিত্যক্ত যানবাহন পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ এর থেকেই স্পষ্ট ধারণা করা যায়, কেউ তাঁদের ওই জায়গায় এনেছিলেন। কানাডা প্রশাসনের ধারণা, মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত দুষ্কৃতীরাই প্যাটেল পরিবারকে ওই অঞ্চলে এনেছিলেন। এই মুহূর্তে প্যাটেল পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে এমন ব্যক্তিদের খুঁজে বের মরার চেষ্টা করছে স্থানীয় প্রশাসন।