মুজিব ভাস্কর্য: 'বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিতর্ক চলবে না' - দেশজুড়ে আমলাদের সমাবেশ
শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য বিরোধী 'অপতৎপরতা'র প্রতিবাদে দেশজুড়ে সমাবেশে করছেন সরকারি কর্মকর্তারা। ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব।
ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশে সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা এসব সমাবেশ থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি করেছেন।
ঢাকায় বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে বিসিএসের সব ক্যাডারদের -সরকারি কর্মকর্তা ফোরাম- সমাবেশের আয়োজন করে যাতে সভাপতিত্ব করেছেন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব আহমদ কায়কাউস।
এতে পুলিশের আইজিপি বেনজির আহমেদসহ বিসিএস এর সবগুলোর ক্যাডারের অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবরাসহ প্রায় সব পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা যোগ দিয়েছেন।
এমন সময় তারা এই প্রতিবাদ করছেন, যখন একদিন আগেই খবর বেরিয়েছে, ভাস্কর্যের বিরোধীতাকারী বিভিন্ন ইসলামি সংগঠনের নেতাদের সাথে একটি সমঝোতা বৈঠকে বসতে রাজি হয়েছে সরকার।
সমাবেশে দেয়া বক্তৃতায় বিসিএস অডিট ও অ্যাকাউন্টস এসোসিয়েশনের মহাসচিব গোলাম সারোয়ার ভুঁইয়া বলেন, "জাতির পিতাকে যারা অসম্মান করেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করছি"।
বিসিএস কর অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ফজলে হায়াত কায়সার বলেন, "বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ হতোনা, আর বাংলাদেশ না হলে এত ক্যাডার সার্ভিস হতোনা। ভাস্কর্য যারা ভেঙ্গেছে তারা দেশবিরোধী, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি"।
বিসিএস শুষ্ক ও আবগারি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব কাস্টমস কমিশনার বলেন, "এখনো এ দেশে কিছু মানুষ দেখা যাচ্ছে যারা জাতির পিতাকে অশ্রদ্ধা করছেন। ভাস্কর্য ভাঙ্গার মতো দুঃসাহস দেখাচ্ছে। তাদের প্রতি তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি"।
তিনি বলেন, "অনেক মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে। আমরা কি তাহলে বেশি মুসলমান হয়ে গেছি। আসলে তারা স্বাধীনতার প্রতি আঘাত করতে চায়। স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, বঙ্গবন্ধু- এসব নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই"।
বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাংচুর
ভাস্কর্য ইস্যুতে 'অবস্থান পরিবর্তন করবে না' হেফাজত
মুজিব ভাস্কর্য: 'আওয়ামী লীগের নিজের ঘরেই সাপ ঢুকেছে'
শেখ মুজিবের ভাস্কর্য ভাংচুর: ভিডিও দেখে শনাক্ত, চারজন আটক
বিসিএস তথ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, "স্বাধীনতার বিপক্ষে যারা থাকবে তাদের বিপক্ষে সরকারি কর্মকর্তাদের কণ্ঠ সোচ্চার থাকবে"।
"ভাস্কর্য মোটেও ধর্মীয় বিষয় নয়, এটি শিল্পকর্মের অংশ। বাংলাদেশ এটি যুগ যুগ ধরে প্রচলিত। হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে এতো কথা কেন। এটি হলো রাজনীতি। কর্মকর্তাদের স্বাধীনতার প্রশ্নে অবস্থান থাকতে হবে"।
বিসিএস গণপূর্ত ক্যাডারের পক্ষে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, "যারা বাংলাদেশের চাকা পেছনে নিতে চায় সেই একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে বেছে নিয়েছে"।
"তারা রাতের অন্ধকারে ভাস্কর্য ভেঙ্গেছে । আমরা এটাকে সহজভাবে মেনে নিতে পারিনা"।
বিসিএস সড়ক ও জনপথে প্রকৌশলী সমিতি, বিসিএস টেলিকম সমিতি, বিসিএস কৃষি ক্যাডার, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার সহ প্রায় প্রতিটি সেক্টরে বিসিএস কর্মকর্তাদের অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন।
আরো খবর:
'জয় বাংলা' শ্লোগান আর ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে যেভাবে বিভক্তি এলো
ফেসবুকের বিভিন্ন পেজ আর গ্রুপ যে সুবিধা দিচ্ছে ব্যবসায়ীদের
মরক্কো-ইসরায়েল চুক্তি: উত্তর আফ্রিকায় নতুন সংঘাত-দলাদলির রেসিপি
আমেরিকার সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচনের ফল বদলানোর মামলা খারিজ