করোনা ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রযুক্তি নকলের অভিযোগ, ফাইজার ও বায়োএনটেকের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ মর্ডানা
করোনা ভ্যাকসিন তৈরিতে প্রযুক্তি নকলের অভিযোগ, ফাইজার ও বায়োএনটেকের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ মর্ডানা
মর্ডানা করোনা ভ্যাকসিন তৈরির প্রযুক্তির নকল করার অভিযোগে ফাইজার ও বায়ো এনটেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। মর্ডানার তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্ত দুই সংস্থা ২০১০ ও ২০১৬ এর মধ্যে পেটেন্ট করা বা সত্ত্ব নেওয়া প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে। তার সাহায্যেই করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। মর্ডানা তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য তার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই সংস্থার কাছে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। তবে দুই সংস্থার করোনা ভ্যাকসিন বাজার থেকে তুলে নেওয়ার বিষয়ে মর্ডানা আগ্রহী নয় বলেই জানিয়েছে।
করোনা ভ্যাকসিন থেকে ফাইজারের আয়
অনুমান করা হচ্ছে মর্ডানার থেকে নকল করা প্রযুক্তির সাহায্যে ফাইজার ও বায়োএনটেক ব্যাপক অঙ্কের লাভ করেছে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা অনুমান করেছে, ফাইজার ও বায়োএনটেকে ২০২২ সালের শেষের দিকে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বিক্রি করে ১০৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে। বর্তমানে ওমিক্রনকে মাথায় রেখে বুস্টার ডোজ আনার চেষ্টা করছে ফাইজার ও বায়োএনটেক। যার ফলে এই আয়ের পরিমান আরও বাড়বে। সেখানে মর্ডানা আয় করবে ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এমআরএনএ প্রযুক্তিতে সত্ত্ব
মর্ডানার প্রধান কার্যনির্বাহী স্টিফেন ব্যানসেন জানিয়েছেন, 'করোনা মহামারীর আগে দশকে এমআরএনএ প্রযুক্তির আবিষ্কার আমরা করেছিলাম। এই গবষেণার জন্যা বহু অর্থ খরচ করেছি। এই এমআরএনএ প্রযুক্তির ওপর আমাদের সত্ত্ব রয়েছে। আমরা এই কাজ ২০১০ সালে তৈরি করেছিলাম। ২০১৬ সালে আমরা এমআরএনএ প্রযুক্তির ওপর নিজেদের সত্ত্ব আরোপ করি। করোনা ভাইরাস হানা দেওয়ার পর এই প্রযুক্তির মাধ্যমে নিরাপদ একটি ভ্যাকসিন তৈরির সম্ভাবনা দেখতে পাওয়া যায় এবং আমরা করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে একটি বিশেষ ভ্যাকসিন তৈরি করি।'
মর্ডানার প্রতিশ্রুতির ফাঁদ
ফাইজারের তরফে জানানো হয়েছে, মর্ডানা এখনও মামলা দায়ের করেনি। বায়োএনটেকের তরফে মর্ডানার অভিযোগের ভিত্তিতে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে বিপত্তি শুরু হয় মর্ডানার একটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে। ২০১৯ সালের শেষের দিকে চিনে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়। তারপর দ্রুত করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ২০২০ সালে অক্টোবরে সারা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে মর্ডানা ও ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন নিয়ে আসে। এই ভ্যাকসিন আসার দুই মাস আগে অর্থাৎ অগাস্টে মর্ডানার তরফে জানানো হয়, এমআরএনএ প্রয়ুক্তির ওপর নিজেদের সত্ত্ব রাখবে না। তারফলে যে কেউ এমআরএন প্রযুক্তি ব্যবহার করে করোনার ভ্যাকসিন তৈরি করতে পারে। যদিও সেই সময় সমালোচকরা বলেছিলেন, ভবিষ্যতে এমআরএনএ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য মামলা দায়ের করতে পারে। কিন্তু মর্ডানাকে বিশ্বাস করে ফাইজার-বায়োএনটেক করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করে।
বিপাকে ফাইজার ও বায়োএনটেক
২০২১ সালে মার্চ মাসে মর্ডানা সত্ত্ব তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সংস্থার তরফে জানানো হয়, বিশ্বে নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোতে এই সত্ত্ব কার্যকর হবে না। সেখানে বাসিন্দারা করোনা ভ্যাকসিনের নির্দিষ্ট ডোজ নিতে পারবেন। কিন্তু তার আগেই ফাইজার- বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিন তৈরি হয়ে গিয়েছে। এবং বিভিন্ন দেশে সেই ভ্যাকসিন করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ৯২ টি দেশে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হয়েছে। মর্ডানা বর্তমানে ৯২টি দেশে ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ব্যবহারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়েছে।
দেশব্যাপী ২১টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ভুয়ো ঘোষণা ইউজিসির, তালিকায় বাংলার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান