আফ্রিকায় মীরাকেল, যেন কোনও জাদু বলে উঠাৎ উধাও করোনা সংক্রমণ
আফ্রিকায় মীরাকেল, যেন কোনও জাদু বলে উঠাৎ উধাও করোনা সংক্রমণ
এই সপ্তাহের ঘটনা, জিম্বাবোয়ের শহর হারারেতে আনাজপাতি কিনছিলেন ন্যাশা নদৌ। স্বভাব বশতই মাস্ক খুলে পকেটে রাখলেন তিনি। শুধু তাঁর কথা বললে ভুল বলা হবে অবশ্য, বাজারের শ'য়ে শ'য়ে মানুষের কারুর মুখেই নেই মাস্ক। কোভিডের কথা জিজ্ঞেস করলে সবার মুখে উত্তর, 'কোভিড তো অতীত। শেষ কবে শুনেছেন যে কোভিডে মারা গেছেন কেউ?'
গোটা জিম্বাবোয়ে জুড়ে একই চিত্র। মানুষজন অতীতের পর্যায়ে ফেলে দিয়েছে কোভিডকে। কাজেই স্বাস্থ্যবিধি, মাস্ক, স্যানিটাইজেশনও এখানে একেবারেই উধাও। ন্যাসা বলেন, ' কোভিডের জন্য নয়, আমরা মাস্ক পরি পুলিশের ভয়ে। এখানে মাস্ক না পরলে পুলিশ ঘুষ চায়।' সরকারি তথ্যও অবশ্য কোভিডের অতীত হওয়ারই প্রমাণ দিচ্ছে। গোটা সপ্তাহে জিম্বাবোয়েতে মাত্র ৩৩ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, জুলাই মাস থেকেই সেখানে সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে।
এমন উন্নতি হয়ত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও ভাবেননি কখনও। ২০২০ সালে যখন মারণ ভাইরাস আছড়ে পড়েছিল বিশ্বজুড়ে, তখন মনে করা হয়েছিল আফ্রিকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে৷ বিশ্বের তাবড় তাবড় নেতা মাথায় হাত দিয়েছিলেন সেখানের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কথা ভেবে৷ তবে এমনটা বাস্তবে হয়নি,বাকি মহাদেশগুলির মতোই সেখানেও কোভিড থাবা বসালেও মারাত্মক কোনও ক্ষতি করে ফেলতে পারেনি৷
আর এই কারণেই আশ্চর্যচকিত হতে বাধ্য হচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াফা এল সাদর বলেন, 'আফ্রিকার কাছে সম্পদ নেই, রোগ মোকাবিকার জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামোও নেই। কিন্তু বাকি দেশের তুলনায় ভাল অবস্থা সেখানে।' হু অবধি বলছে, আফ্রিকা সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত মহাদেশ৷ অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে এই কম ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণ গড় বয়স। আফ্রিকার গড় বয়স ২০বছর, সেখানে পশ্চিম ইউরোপের সেই গড় ৪৩ বছর। উগাণ্ডার কিছু বিজ্ঞানী আবার বলছেন, মহাদেশে ম্যালেরিয়ায় ভোগা মানুষরা কোভিড আক্রান্ত হলে সেভাবে সমস্যাই হচ্ছে না তাঁদের। একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়া বা মৃত্যু কোনওটাই ঘটছে না।