লক্ষ লক্ষ মানুষ ফিরছেন ঘরে, সন্ত্রাস চোনা ফেলেছে ঢাকার ইদ-উৎসব চিত্রে
লক্ষ লক্ষ মানুষ ঢাকা ছাড়ছেন, কারণ তারা পরিবারের সঙ্গে ইদের ছুটি কাটাতে চান।
প্রত্যেকবারের মতোই ইদের খুশিতে মেতে উঠছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। বাস, ট্রেন, নৌকায় উপচে পড়ছে ভিড়। সবাই পরিবারের সঙ্গে দিনটা কাটাতে চান। কাজেই হাজার হাজার মানুষ শহর ছেড়ে পারি দিচ্ছেন পারিবারিক বাড়ির দিকে। যেমন করেই হোক তারা বাড়ি ফিরতে চান। পথশ্রম তাদের কাছে তুচ্ছ।
আশ্চর্যজনকভাবে মূল শহরে সারা বছর যে গাড়ির-রিক্সার ভিড় লেগে থাকে, তা হঠাৎ করেই অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। তুলনায় রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকাই বলা চলে। সব ভিড় শহরের বাইরে যাওয়ার বাস টার্মিনাস, রেল স্টেশন বা ফেরিঘাটে। আর শহরেই যারা থাকছেন, তাদের যাবতীয় গাড়ির ভিড় গিয়ে লেগেছে শপিং মলের রাস্তায়। শেষ মুহুর্তের ভিড় এড়াতে অনেকেই আবার কয়েকদিন আগেই ঘরে ফিরে গিয়েছেন।
ঢাকায় প্রায় ২ কোটি মানুষের বাস। কোনও সরকারি হিসেব নেই, তবে অনুমান করা হয়, বছরে দুটি বড় উৎসব - ইদ উল ফিতর ও ইদ উল আধার সময়ে এই সংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ শহর ছাড়েন। উৎসবের দিনগুলো পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে আবার শহরে ফিরে আসেন। ফলে এই বিপুল সংখ্যক লোক একসঙ্গে শহর ছাড়তে চাওয়ায় প্রতিবারই ট্রেনের কামড়ায় ঝুলন্ত অবস্থায়, বা ট্রেন-বাসের মাথায় চড়ে বা নৌকার স্বাভাবিক যাত্রী ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি সংখ্যায় নৌকায় চড়ে প্রায় জীবন বাজি রেখেই তাদের ঘরে ফেরার এই ছবি চোখে পড়ে।
এই উৎসবের আবহে মিশেছে আতঙ্কও। শুক্রবারই শহরের এক মসজিদের সামনে জঙ্গিদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন আওয়ামী লিগের নেতা ফরহাদ হোসেন। অথছ মাত্র একদিন আগেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছিল, এবছর ইদে সন্ত্রাসবাদী হানার আশঙ্কা নেই। এদিনের ঘটনা ঢাকাবাসীকে মনে করিয়ে দিচ্ছে ২০১৬ সালের কথা। ওই বছর ১ জুলাই তারিখে ঢাকার অভিজাত রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে ১৮ জন বিদেশী-সহ মোট ২২ জনকে হত্যা করেছিল আইএস জঙ্গিরা। এর ঠিক এক সপ্তাহের মাথায় ইদের উৎসবের দিনেই ঢাকার ঠিক পাশে কিশোরগঞ্জ জেলায় শোলাকিয়া ইদগায় বোমা বন্দুক নিয়ে বামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে দুই পুলিশ অফিসার সহ ৪ জন মারা গিয়েছিলেন।