১০১ বছর বয়সে কর্মজীবনে অবসর নিয়েছেন এক জাপানি বৃদ্ধ
দীর্ঘসময় ধরে কাজ করা, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা, এসবের সঙ্গে জাপানিরা অভ্যস্ত। তবে এই বয়সে ফুকুতারো ফুকুই যা করে দেখিয়েছেন তা জাপানিরা কেন, পৃথিবীর কেউই কল্পনা করতে পারবেন না। বলা যায়, একেবারে বলে বলে গোল দিয়েছেন সবাইকে। [জেনে নিন জাপানিরা কেন হয় দীর্ঘায়ু]
জানা গিয়েছে, যে বয়সে মানুষ তাদের অবসর জীবনের অনেকটা কাটিয়ে ফেলেন, সেই ৭০ বছর বয়সে নতুন করে কাজ শুরু করেন ফুকুই। তিনি আগে নিরাপত্তা এজেন্সিগুলিতে এক্সিকিউটিভের কাজ করতেন। আর তারপরে টোকিওয় নতুন কেরিয়ার শুরু করেন লটারির সেলস ব্রোকার হিসাবে। এবং সেখানে ঝাড়া ৩১ বছর কাজ করে তিনি অবসর নিয়েছেন ১০১ বছর বয়সে। [প্রতি বছর 'লিঙ্গ' উৎসবে মেতে ওঠেন জাপানিরা!]
এটা অবশ্যই এক অন্য রেকর্ড। এই বয়সে প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে যাতায়াত করতে হতো ফুকুইকে। এই বয়সে অফিসে কাজ করে তিনি জাপানের অন্যতম বয়স্ক কর্মজীবী মানুষের খেতাব পেয়েছেন। [জাপানের এই রেস্তরাঁয় যেতে হবে নগ্ন হয়ে! মোটা হলে প্রবেশ নিষেধ]
আপাতত ১০৪ বছর বয়সে দিব্যি সুস্থ রয়েছেন ফুকুই। তিনবছর অবসর জীবনও উপভোগ করে ফেলেছেন তিনি। তাঁর কথায়, তিনি কাজ করতে ভালোবাসেন বলে এটা সম্ভব হয়েছে। টাকা রোজগারের উদ্দ্যেশে তিনি কাজ করতে যাননি। ['শতায়ু যুবতী' সাঁতরে পার করলেন ১৫০০ মিটার]
ফুকুই জানিয়েছেন, লটারি এজেন্সিতে যখন তিনি কাজ করতেন, তাঁকে সিড়ি বেয়ে অনেকটা উঠতে হতো। যুবক ছেলেরা তত বেগে উঠতে পারত না যতটা তাড়াতাড়ি তিনি সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে যেতেন। এখন টোকিওর শহরতলি ছিগাসাকির বাড়িতে বসে স্মৃতিচারণ করে চলেছেন ফুকুই।
ফুকুই চেয়েছিলেন অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে গবেষণা করতে। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ তাঁর সেই স্বপ্নকে শেষ করে দেয়। পড়াশোনা আর হয়নি। বদলে দেশের হয়ে সেনাদলে যোগ দিতে হয় তাদের। যুদ্ধ শেষে এসে তিনি একটি নিরাপত্তা এজেন্সিতে যোগ দেন। সেখান থেকে পরে লটারি সেলস ব্রোকারের কাজ করেন।
ফুকুই নামে এই বৃদ্ধ একটি বইও লিখেছেন। যার নাম 'এজ ১০০ : দ্য পার্সন নিডেড ফরএভার'। সেই বইটি জাপানি ভাষায় ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণ কোরিয়া ও তাইওয়ানে বিক্রি হয়েছে অনুবাদ সহ।
প্রসঙ্গত জাপানিদের উপরে হওয়া ২০১৫ সালের একটি গবেষণা বলছে, সেদেশে অবসর নেওয়ার পরে সেই কর্মীকে ফের একবার কাজে নিযুক্ত করা হয়। জাপানে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী এমন ৬৮ লক্ষের বেশি কর্মী রয়েছেন বলে সমীক্ষায় উঠে এসেছে। ফুকুতারো ফুকুই তাঁদেরই প্রতিনিধি সন্দেহ নেই।