রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর হামলায় ক্ষতি হিন্দুদেরও, বাংলাদেশে আশ্রয় বহু হিন্দুর
মায়ানমারের রাখিন প্রদেশে গত ২৫ তারিখ থেকে শুরু হওয়া হিংসায় শুধু রোহিঙ্গা মুসলিমরাই নয়, ঘরছাড়া হয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে বহু হিন্দুও, বাংলাদেশের কক্সবাজারে তারা আশ্রয় নিয়েছে
মায়ানমারের রাখিন প্রদেশে গত ২৫ তারিখ থেকে শুরু হওয়া হিংসায় শুধু রোহিঙ্গা মুসলিমরাই নয়, ঘরছাড়া হয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে বহু হিন্দুও। ইতিমধ্যেই ৫০০-র বেশি হিন্দু সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এদিকে মায়ানমারে হিংসার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪০০ -র বেশি মানুষ।
গত ২৫শে অগাস্ট রোহিঙ্গা জঙ্গিরা মায়ানমারের রাখিন প্রদেশে সেনা ও পুলিশ পোস্টগুলিতে হামলা চালায়। এরপরই পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটে মায়ানমারের সেনাও। রোহিঙ্গা মুসলিমদের টার্গেট করে এখনও চলছে হত্যালীলা। বাদ পড়ছে না মহিলা, শিশুরাও। এই সেনা অভিযানের হাত থেকে বাঁচতে ইতিমধ্যেই প্রায় ৯০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশ ও ভারতে ঢুকে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু এই শরণার্থীদের মধ্যে শুধু যে রোহিঙ্গা মুসলিমই নেই, রয়েছে অন্তত ৫০০ জন হিন্দুও। এই ৫০০ হিন্দু সীমান্ত বেরিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের ঐক্য পরিষদ নামে একটি সংগঠন কক্সবাজারের উথিয়া কুটুপালং এলাকায় গিয়ে এই হিন্দু পরিবারগুলির সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছে। ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী রাণা দাশগুপ্ত জানিয়েছন, মায়ানমারে যা হচ্ছে তাকে গণহত্যা বলা যায়। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশের উপকূলে ৫৩টি দেহ ভেসে উঠেছে। পালানোর সময়ে জলে ডুবেই তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। রানা দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, রাখিন প্রদেশে নিহতদের মধ্যে ৮৬জন হিন্দুও রয়েছে।
বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বছর পঞ্চাশের রমণী শীল জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে জনা ২০ মুখোশধারী তাদের গ্রামে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে নির্বিচারে খুন করে। এমনকী তাঁদের বাড়ি-ঘরও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। রাখিন প্রদেশে কয়েক প্রজন্ম ধরে তাঁরা বসবাস করছিলেন বলে জানিয়েছেন রমণী।
ঘরছাড়া যাতে ফিরতে পারে, তার ব্যবস্থা মায়ানমার সরকারকেই করতে হবে বলে দাবি তুলেছেন রাণা দাশগুপ্ত। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রতিনিধি দলকে দিয়েও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তিনি।