যক্ষা রোগের টিকা নীতি রয়েছে যে দেশে সেখানে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু কম
যক্ষা রোগের টিকা নীতি রয়েছে যে দেশে সেখানে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু কম
নতুন এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে সব দেশে যক্ষা প্রতিরোধের জন্য প্রতিষেধকের নীতি বাধ্যতামূলক সেখানে করোনা ভাইরাসের মৃত্যুর হার অনেক কম তুলনায় যে সব দেশে এই নীতি নেই।
বিসিজি টিকা নীতি রক্ষাকবচ
অপ্রকাশিত মেডিকেল গবেষণার জন্য একটি সাইট মেডআরসিভে পোস্ট করা প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন বা বিসিজি প্রতিষেধক যে সব দেশের নাগরিকদের জন্য বাধ্যতামূলক সেখানে করোনা ভাইরাস নিশ্চিত কেসের সংখ্যা কম ও মৃত্যুর হারও অনেক কম। ব্যাসিলাস ক্যালমেট-গুউরিন বা বিসিজি যথেষ্ট জনপ্রিয় মেডিক্যাল দুনিয়ায়। এই প্রতিষেধক শুধুমাত্র যক্ষা থেকে রক্ষা করে তা নয়, অন্য রোগ থেকেও মুক্তি দেয়। পরীক্ষামূলকভাবে এই বিসিজি ছ'টি দেশের সামনের সারিতে থাকা স্বাস্থ্যকর্মী ও প্রবীণ মানুষদের ওপর প্রয়োগ করা হবে এবং দেখা হবে যে এটা কোনওভাবে নতুন করোনা ভাইরাস থেকে এঁদের রক্ষা করতে পারে কিনা।
জাপানে অনেক কম করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা
নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির সহ-অধ্যাপক ও এই গবেষণার প্রধান লেখক গনজোলা ওটাজু লক্ষ্য করেছেন যে জাপানে করোনার কেস অনেক কম। দেশটি চিনের বাইরে হওয়া অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম করোনা আক্রান্তের সংখ্যা পাওয়া গিয়েছে এবং এখানে লকডাউনেরও প্রয়োজন হয়নি। ওটাজু জানিয়েছেন যে তিনি গবেষণা করে দেখেছেন যে বিসিজিএনএসই-এর ৩.২৩ শতাংশ প্রতিষেধক শুধু যে যক্ষা থেকে রক্ষা করে তাই নয় এটা অন্যান্য রোগ ও জীবাণু থেকে শরীরকে বাঁচায়। তাই তাঁর পুরো দল কোন কোন দেশে এই বিসিজি টিকা নীতি রয়েছে এবং তা কখন প্রতিস্থাপন হয়েছিল তার তথ্য একত্রিত করতে শুরু করেছে। এটার সঙ্গে তাঁরা কোভিড-১৯-এর নিশ্চিত কেস ও মৃত্যুর সঙ্গে তুলনা করবে।
অনেক দেশেই নেই বিসিজি টিকা নীতি
উচ্চ-আয়যুক্ত দেশগুলির মধ্যে করোনায় আক্রান্ত আমেরিকা ও ইতালি একমাত্র বিসিজির প্রস্তাব দিয়েছে, তবে শুধুমাত্র ঝুকি রয়েছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে। অন্যদিকে জার্মানি, স্পেন, ফ্রান্স ও ব্রিটেনে বিসিজি টিকা নীতি ছিল কিন্তু তা বহু দশক আগে। চিনে যেখানে মহামারির শুরু হয়েছিল, সেখানে বিসিজি টিকা নীতি ছিল কিন্তু ১৯৭৬ সালের আগে পর্যন্ত তা খুব ভালোভাবে মেনে চলা হয়নি। তবে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এই করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণ করতে সফল হয়েছে কারণ বিসিজি টিকা নীতি রয়েছে তাদের।
যক্ষার টিকা দেহে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
নিউ ইয়র্ক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি কলেজ অফ অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিনের পক্ষ থেকে বলা হয়, পৃথিবীর যে সব দেশে বিসিজি টিকাদান কর্মসূচি নেই যেমন ইতালি, নেদারল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তবে দীর্ঘস্থায়ী টিকাদান কর্মসূচি যে সব দেশে চালু আছে ওইসব দেশের মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কম। মেলবোর্ন স্টাডি পরিচালনাকারী নাইজেল কার্টিস, যিনি ইনফেকসিয়াস ডিজিসের প্রধান, তিনি জানিয়েছেন যে এই বিসিজি ড্রাগ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে ও আরও সাধারণ উপায়ে যে কোনও সংক্রমণ, ভাইরাস ও জীবাণুকে এটি প্রতিরোধ করতে পারে।