করোনা কাটিয়ে ওঠার আগেই বিষ ফোঁড়া লাসা জ্বর! প্রথম বলি ইংল্যান্ডে
লাসা জ্বরের প্রথম বলি
একে করোনায় রক্ষে নেই আবার তার উপর দোসর হল লাসা জ্বর। গোটা পৃথিবী এই মুহূর্তে হিমসিম খাচ্ছে করোনার ঠেলা সামলাতে সামলাতে। এই মারণ ভাইরাসের প্রকোপ কাটিয়ে বিশ্বকে করোনা মুক্ত করার জন্য চালানো হচ্ছে গ্লোবাল ভ্যাকসিনেশন। পাশাপাশি আরও বেশিকরে করোনা প্রতিরোধ করতে অধিকাংশ দেশ হেঁটেছে করোনার বুস্টার ডোজ প্রদানের পথেও। কিন্তু এরই মাঝে এবার জুড়ে বসল লাসা জ্বর। মূলত ইঁদুর বাহিত এই জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার খবর সামনে এসেছে। আর এই ঘটনার পরেই ফের বিশেষজ্ঞদের কপালে চিন্তার ভাঁজ দেখা দিল।
লাসা প্রসঙ্গে 'হু'
করোনার মতই লাসা জ্বর নিয়ে প্রথম থেকেই বেশ সচেতন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই ইঁদুর বাহিত ভাইরাস প্রসঙ্গে 'হু' জানিয়েছে, এই ভাইরাস প্রধানত আফ্রিকা মহাদেশের পশ্চিমভাগে ইঁদুরের দেহে পাওয়া যেত। কিন্তু বর্তমানে এই ভাইরাস পশ্চিম আফ্রিকার সীমানা ছাড়িয়ে বেনিন, ঘানা, গিনি, টোগো, সিয়েরা লিওন, নাইজেরিয়া, লাইবেরিয়ার মত একাধিক দেশে ছড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, সেইসব দেশে এই মুহূর্তে এই ভাইরাস এন্ডেমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাই তা চিন্তার বিষয়।
লাসা কি ছোঁয়াচে?
লাদা জ্বর কি করোনার মতই ছোঁয়াচে? এই প্রশ্নের উত্তরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, তাঁদের হাতে যা তথ্য আছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে এই লাসা ভাইরাস পার্সন টু পার্সন অর্থাৎ একজনের দেহ থেকে অন্য একজনের দেহে ছড়িয়ে পড়তে সক্ষম। তার উপর যদি এই সংক্রমণ ঠেকানোর জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকে তাহলে সেটি অন্যদের দেহে ছড়াতে পারে।
লাসার বলি ১
এখনও পর্যন্ত লাসাতে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন। তাঁরা ব্রিটেনের বাসিন্দা বলে খবর। ইউনাইটেড কিংডম হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, লাসা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে একজনের মৃত্যু হয়েছে। লাসায় আক্রান্ত রোগী লন্ডনের উত্তর বেডফোর্ডশায়ারের একটি হাসপাতালে মারা যান। সংক্রামিত তিনজনই পূর্ব ইংল্যান্ডের একই পরিবারের সদস্য বলে খবর। এবং জানা গিয়েছে সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকা ভ্রমণ করেছিলেন। এবং যারা ওই মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে প্রশাসন। পাশাপাশি প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থার উপর বিশেষ পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও জানিয়েছে সেই দেশের প্রশাসন।
লাসা জ্বরের প্রাথমিক উপসর্গ
১৯৬৯ সালে প্রথম আবিষ্কার করা এই রোগ প্রধানত ইঁদুরের দেহ থেকে আসে। এই রোগের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ হল জ্বর, ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথাব্যথা ইত্যাদি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগের লক্ষণ অনেক সময় গুরুতরও হতে পারে। সেক্ষেত্রে রক্তপাত, শ্বাসকষ্ট, লাগাতার বমির মত অবস্থাও হতে পারে রোগীদের। তাই এই মুহূর্তে এই রোগ থেকে বাঁচার প্রধান উপায় হল ইঁদুর থেকে সাবধানে থাকা।