মুদ্রাস্ফীতিতে নাজেহাল আমেরিকা, বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে লম্বা লাইন মার্কিন নাগরিদের
মুদ্রাস্ফীতিতে নাজেহাল আমেরিকা, বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে লম্বা লাইন মার্কিন নাগরিদের
মুদ্রাস্ফীতির হাত থেকে রেহাই পেল না আমেরিকা। নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রদের আর্থিক অবস্থার আরও অবনতি হতে শুরু করেছে। আমেরিকায় বিভিন্ন শহরের খাদ্য ব্যঙ্কগু বা ফুড ব্যাঙ্কগুলোতে লম্বা লাইন দেখতে পাওয়া গিয়েছে। বহু মার্কিন নাগরিক বহু দূর হেঁটে ব্যাঙ্কগুলোতে লাইন দিয়েছে বিনামূল্যে খাবার সংগ্রহের জন্য।
আমেরিকার খাদ্য ব্যাঙ্ক
আমেরিকার বিভিন্ন শহরের প্রান্তে খাদ্য ব্যাঙ্ক বা ফুড ব্যাঙ্ক থাকে। সেখানে দরিদ্র মার্কিন নাগরিদের বিনমামূল্যে খাবার দেওয়া হয়। মার্কিন প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, করোনা মহামারীবা লকডাউনের সময় দেশের মানুষের সার্বিক অর্থিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। সেই সময় আমেরিকার খাদ্য ব্যাঙ্কগুলোতে লম্বা লাইন দেখা যেত। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে খাদ্য ব্যাঙ্কগুলোর ওপর থেকে সাধারণ মানুষের নির্ভরতা কমে যেতে থাকে। তবে চলতি বছর নতুন করে খাদ্য ব্যাঙ্কগুলোর ওপর মার্কিন নাগরিকদের লাইন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। কখনও দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে, কখনও আবার গাড়ি করে মার্কিন নাগরিকরা খাদ্য ব্যাঙ্কগুলোর সামনে লম্বা লাইন দিচ্ছেন।
আমেরিকায় মুদ্রাস্ফীতিতে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ
করোনা মহামারীর সময় অনেক নাগরিক কাজ হারিয়েছিলেন। অনেক নাগরিকের বেতন অর্ধেক হয়ে গিয়েছিল। যার ফলে সাধারণ মানুষকে খাদ্য ব্যাঙ্ক বা ফুড ব্যাঙ্কের ওপর নির্ভর করতে হয়েছিল। কিন্তু মহামারীর প্রকোপ কমার সঙ্গে সঙ্গে সাধারণ মানুষ নিজেদের অভ্যস্ত জীবনে ফিরতে থাকে। আয়ের আলাদা আলাদা পথ বেছে নেয়। যার জেরে খাদ্য ব্যাঙ্কের ওপর নির্ভরতা কমতে থাকে। কিন্তু সম্প্রতি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দামের সঙ্গে গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে মার্কিন নাগরিকদের অনেককে খাদ্য ব্যাঙ্কের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে।
ফুড ব্যাঙ্কে খাদ্য সঙ্কটের সম্ভাবনা
মার্কিন প্রশাসনের খাদ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, খাদ্য ব্যাঙ্কগুলর চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছে। সেন্ট মেরির মুখপাত্র জেরি ব্রাউন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ফিনিক্সের ফুড ব্যাঙ্কের প্রধান বিতরণ কেন্দ্রে জুনে তৃতীয় সপ্তাহে ৪,২৭১ পরিবারকে খাবারের প্যাকেজ বিতরণ করা হয়েছে। গত বছর এই সময়ে ২,৩৯৬ পরিবারকে খাবারের প্যাকেজ বিতরণ করা হয়েছে। ব্রাউন জানিয়েছেন, প্রতিদিন ৯০০টির মতো পরিবারকে খাবার দিয়ে সাহায্য করা হচ্ছে। মূলত টিনজাত খাবার, চিনে বাদামের মাখন ও চাল বা চাল জাতীয় খাদ্যপণ্যের চাহিদা সব থেকে বেশি। ফুড ব্যাঙ্ক থেকে সুপার মার্কেটের থেকে কম দামে পাউরুটি, গাজর, শূকরের মাংস বিক্রি হচ্ছে। এই খাদ্য দ্রব্যের চাহিদা অনেক বেশি। তবে ফুড ব্যাঙ্কগুলোর তরফে জানানো হয়েছে, এখনও খাবারের মজুত রয়েছে। যে হারে চাহিদা বাড়ছে, খাদ্যপণ্যের সঙ্কট দেখা দিতে পারে।
মার্কিন নাগরিকদের বক্তব্য
মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছেন, প্রায় ১০ শতাংশ নাগরিক ফুড ব্যাঙ্কে প্রথমবারের জন্য আসছেন। অনেকেই গাড়ি ত্যাগ করেছেন। দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে ফুড ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। ফুড ব্যাঙ্কের সামনে অপেক্ষারত মার্কিন নাগরিকরা বলছেন, খরচ বাঁচাতেই তাঁরা গাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, এখান থেকে শিশুদের খাবার, ডাইপার, চাল জাতীয় শষ্য পাওয়া যায়। যার ফলে সংসার খরচ সামাল দিতে সুবিধা হয়। অনেক প্রবীণ মার্কিন নাগরিককে ফুড ব্যাঙ্কের লম্বা লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে।
দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান! সৌদি আরবের সঙ্গে লোহিত সাগরের দ্বীপ হস্তান্তরের চুক্তিতে অনুমোদন ইজরায়েলের