করোনা ভাইরাসের জেরে লকডাউন, চাকরি নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন বহু তথ্য–প্রযুক্তি কর্মী
করোনা ভাইরাসের জেরে লকডাউন, চাকরি নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন বহু তথ্য–প্রযুক্তি কর্মী
তথ্য–প্রযুক্তি সংস্থার কর্মীরা সমস্যার মুখোমুখি বসে রয়েছেন। কারণ আমেরিকা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুরে চলছে লকডাউন।
লকডাউনের পর কাজ হারাতে পারেন অনেকে
তথ্য-প্রযুক্তি সংস্থার সংগঠনের পক্ষ থেকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে যে স্বাক্ষরিত নতুন প্রজেক্ট নয় পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে নয়তো বা অনেক সংস্থা সঙ্কটে রয়েছে বলে তা বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। শোলিংনাল্লুর একটি নামী সংস্থার এক কর্মচারী জানিয়েছেন, বিমান ও অটো সেক্টরের সংস্থাগুলি তাদের প্রকল্পগুলিকে বাতিল করে দিয়েছে। তবে তাঁর সংস্থা থেকে কোনও কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়নি। ওই কর্মী বলেন, ‘আমাদের এই লকডাউনের সময় খুব সাবধানে চলতে হবে কিন্তু লকডাউনের পর কি হবে তা জানা নেই।' সিআইইএল এইচআর সার্ভিসের সিইও আদিত্য নারায়ণ মিশ্র ভবিষ্যৎ বাণী করেছেন যে বড় ও ছোট উভয় আইটি সেক্টরে ১,০০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ ছাঁটাই হতে পারে। মিশ্র জানিয়েছেন যে এই সঙ্কটের কারণে মোটামুটি ৫ থেকে ১০ শতাংশ শ্রমশক্তি প্রভাবিত হতে পারে। তিনি বলেন, ‘সংস্থাগুলি পরবর্তী ৬০ সপ্তাহে কিভাবে এই সঙ্কটকে সামলাবেন এটা তার ওপর নির্ভর করছে।'
বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছে আইটি সংস্থাগুলির
চেন্নাইয়ের আইটি সংস্থা ফিউশন গ্লোবাল সলিউশনের কর্ণধার পি আর ভিগনেশ রাজা জানিয়েছেন যে এই লকডাউনের প্রভাব পড়েছে পূর্ব আমেরিকার ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ ব্যবসাতে। তিনি বলেন, ‘আমরাও সেই কারণে ক্লায়েন্টের কাছ থেকে রাজস্ব নিতে পাপিনি। যার ফলে আমাদের বিক্রেতাকে চুক্তি অনুযায়ী টাকা দিতেও পারছি না।' তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনওভাবে মার্চটা চালিয়ে নেব কিন্তু এপ্রিল মাসটা কঠিন মাস হবে। এটা অবশ্যই নির্ভর করছে আমেরিকা কত দ্রুত এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারে।' ভিগনেশ বলেন, ‘যেহেতু প্রকল্পগুলি স্থবির হয়ে পড়েছে, এখন কর্মীদের জন্য আমাকে যে অর্থ প্রদান করতে হবে, তার জন্য ব্যাঙ্কের রাস্তাই আমার কাছে একমাত্র বিকল্প। তবে ঋণ পাওয়া সহজ নয়। সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে এবং আমাদের সহায়তা করতে হবে।'
তথ্য–প্রযুক্তি কর্মী সংগঠন সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে
চেন্নাই ভিত্তিক একটি শীর্ষ আইটি সংস্থায় কর্মরত একজন আইটি পেশাদার জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক এবং স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহকারী সংস্থাগুলি এখনও অর্ডার পাচ্ছেন যদিও পরবর্তী ছয় মাসের জন্য বন্ধ রয়েছে পার্শ্ববর্তী কাজগুলি। তথ্য-প্রযুক্তি সংগঠনের সভাপতি পরিমলা জানিয়েছেন যে আই কর্মীরা দারুণ চাপের মধ্যে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আইটি শিল্প হল আনুষ্ঠানিক ক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটি যা ৪০ লক্ষেরও বেশি কর্মী নিযুক্ত করে। এমনকি চাকরির ৫-১০ শতাংশ ক্ষতি হল বিশেষত এই লকডাউন সময়কালে এবং আগামী দিনগুলিতে মারাত্মক সামাজিক প্রভাব পড়বে। এর পাশাপাশি শত শত কর্মীরা অপেক্ষা করে রয়েছেন নতুন প্রজেক্টের জন্য যা লকডাউনের আগেই সংস্থার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। তিনি জানান, তাঁদের সংগঠন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার উভয়ের কাছে দাবি জানিয়েছে যে আইটি সংস্থাগুলিকে বেঞ্চ চাকরিতে জোরপূর্বক পদত্যাগ না করা এবং কোভিড-১৯-এর লকডাউন বিবেচনা করে নতুন চাকরির প্রস্তাবের জন্য ভার্চুয়াল অনলাইন যোগদানের বিধান নিশ্চিত করা।