জর্জ ফ্লয়েডের হত্যা, কীভাবে পুলিশি নৃশংসতার জেরে উত্তাল হয়ে উঠল আমেরিকা!
করোনা সংক্রমণের মধ্যেই কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে উত্তাল আমেরিকা। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন মার্কিন নাগরিকরা। প্রতিবাদ চলে হোয়াইট হাউজের সামনেও। প্রতিবাদ থেকে বাঁচতে দুইদিন আগেই বাঙ্কারে লুকোতে বাধ্য হয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তবে আদতে কী হয়েছিল সেদিন?

হত্যা করা হয় জর্জ ফ্লয়োডকে
৮ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের নৃশংসতা ভরা সেই ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল কিছুদিন আগে। জর্জ ফ্লয়েডের ঘাড়ের উপর হাঁটু দিয়ে চেপে রয়েছে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মী। আর শ্বাস নেওয়ার জন্য কাতড়াচ্ছেন জর্জ। মৃত্যু হয় তাঁর। আজ তাঁর অটোপ্সি রিপোর্ট আসে। ঘাড়ে আঘাতের বা নেক কম্প্রেশনের কারণেই তাঁর মৃত্যু। এই মৃত্যুকে 'হত্যা', হোমিসাইড বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

জর্জ ফ্লয়েডের অটোপ্সি
হেনেপিন কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনার ইন মিনেপলিসের তরফে তাঁর অটোপ্সি রিপোর্ট জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। 'কার্ডিওপালমোনারি অ্যারেস্ট ল এন্ফোর্সমেন্ট সাবডুয়াল' এবং ঘাড়ে আঘাত ৪৬ বছরের জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর কারণ। তাঁর মৃত্যু আসলে হোমিসাইড বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

কীভাবে মারা যান জর্জ?
এছাড়ারও জর্জের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে উল্লেখ করে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে তাঁর হৃদরোগ ছিল। শরীরে ফেনটানিল ইনটক্সিকেশন এবং সম্প্রতি মেথামফেটামাইনের ব্যবহারের প্রমাণও পাওয়া গিয়েছে।

উত্তাল হয়েছে আমেরিকা
মিনিয়াপোলিস পুলিশি হেপাজতে জর্জ ফ্লয়েডের খুনের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পরেই উত্তাল হয়েছে আমেরিকা। প্রতিবাদের স্লোগান মুখর মিনিয়াপোলিস, ওয়াশিংটন, সান ফ্রান্সিসকো-র মতো বড় বড় শহর। মোতায়েন হয়েছে সেনা। জারি হয়েছে কার্ফু। কিন্তু দমানো যায়নি সাধারণ মানুষকে। 'আমার দমবন্ধ হয়ে আসছে, আমায় শ্বাস নিতে দাও'- পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে অ্যামেরিকার রাজপথ। রাস্তায় নেমে ভাঙচুর, লুটপাটও চালান বিক্ষোভকারীরা। কয়েক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। পরিবর্তে ফেরে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, ট্যাঙ্কার ট্রাক এবং আরও পুলিশি অত্যাচার।

ট্রাম্পের হুমকিতে পিছু হটেননি বিক্ষোভকারীরা
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের হুমকিতে পিছু হটেননি বিক্ষোভকারীরা। পরবর্তীকালে জানা যায়, শুক্রবার রাতে হোয়াইট হাউসের গোপন বাঙ্কারে সরানো হয়েছিল প্রেসিডেন্টকে। কারণ সেই রাতে হোয়াইট হাউসের সামনে শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ। ফ্যাসিবাদ বিরোধী দল 'অ্যান্টিফা'-র দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন প্রেসিডেন্ট। তারাই বিক্ষোভে উসকানি দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। অ্যান্টিফা-কে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী ঘোষণা করার পদক্ষেপও করা হয়।

নেভেনি প্রতিবাদের আগুন
ভয় দেখিয়ে, হুমকি দিয়ে কিংবা আশ্বাস দিয়ে কোনওভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি বিক্ষোভকারীদের। সেখানে এখনও নেভেনি প্রতিবাদের আগুন। জর্জের খুনের বিচার চেয়ে মিছিলে হাঁটছেন বহু মানুষ। সেই মিছিলে বর্ণ বিদ্বেষ নেই। করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক নেই। নিয়ন্ত্রণ নেই। জোর জুলুম নেই। অন্যায়ের বিরোধিতা আছে, ধৃত পুলিশ কর্মী ডেরেক শভিনের শাস্তির দাবি আছে। আর আছে স্লোগান, 'ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার'।

কোথায় অবস্থিত লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল? ভারত-চিন বিবাদটা ঠিক কী নিয়ে, জানুন বিস্তারিত