সন্তানরা খেলছে, স্ত্রী ফোনে ব্যস্ত, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিচ্ছিন্ন থাকার অভিজ্ঞতা জানালেন ট্রুডো
তাঁর সন্তানরা তাদের ঘরে লিগো খেলছে, তাঁর স্ত্রী ফোনে কথা বলেই অধিকাংশ সময় কাটিয়ে দিচ্ছেন। কানাডার প্রথম পরিবার হিসাবে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুক্রবার থেকে করোনা ভাইরাসের আশঙ্কায় গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন। আতঙ্কিত দেশবাসীকে তিনি আশ্বস্ত করেছেন যে তিনি দেশ শাসন চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী সোফি ট্রুডোরও পরীক্ষা করা হয়েছিল এবং তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ এসছে। এরপরই প্রধানমন্ত্রী প্রথমবার জনসমক্ষে বলেন, 'আমি ঠিক আছি। আমার শরীরে কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি। আমি সুস্থ রয়েছি। প্রযুক্তির কারণে আমি বাড়ি বসেই কাজ করতে পারছি।’ ওটায়াতে তাঁর সরকারি বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেন। যেখানে ছোট ইঁটের কটেজে তিনি একা দাঁড়িয়ে রয়েছেন, সাংবাদিকরা তাঁর থেকে বেশ কিছু মিটারের দুরত্বে দাঁড়িয়ে।
বৃহস্পতিবার রাতেই ঘোষণা করা হয়েছিল যে ৪৮ বছরের কানাডিয়ান নেতা ও তাঁর ৪৪ বছরের স্ত্রী এবং ৬ থেকে ১২ বছর বয়সের তিন সন্তানকে ১৪ দিনের জন্য বিচ্ছিন্ন করে রাখা হবে সংসদ থেকে কিছু কিলোমিটার দূরে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এটি একটি অসুবিধা এবং কিছুটা হতাশার কারণ’। তিনি আরও বলেন, 'যতই হোক আমরা সামাজিক ভাবে মিশে অভ্যস্ত, কিন্তু এটা আমাদের করতে হয়েছে।’ জনস্বাস্থ্য আধাকারিকরা কানাডিয়ানদের উদ্দেশ্যে জানিয়েছেন যে যদি জ্বরের মতো অনুভব করেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে কোভিড–১৯–এর পরীক্ষা করার এবং স্বেচ্ছায় একঘরে হয়ে যান। বিশেষ করে যদি তাঁরা সম্প্রতি অন্য দেশ থেকে ঘুরে আসে। ট্রুডো বলেন, 'আমরা মেডিক্যাল পরামর্শ মেনে চলছি কানাডিয়ানদেরও তা করা উচিত।’
বুধবার সোফি গ্রেগয়ার ট্রুডোর ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল সঙ্গে ছিল হাল্কা জ্বর। তিনি সম্প্রতি লন্ডন থেকে ফিরেছেন। তাঁর স্বামী তথা জাস্টিন ট্রুডো বলেন, 'সোফির উপসর্গ হালকা আছে। ডাক্তারদের পরামর্শ মতো আমি এখন কিছুদিনের জন্য বিচ্ছিন্ন থাকব। আমরা ঠিক আছি। সবরকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছি।’
বাড়ি থেকে কাজ করলেও ট্রুডো খুবই ব্যস্ত রাখছেন নিজেকে। এমানুয়েল ম্যাকরন, ডোনাল্ড ট্রাম্প, কানাডার বিভিন্ন মন্ত্রক ও আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে তিনি ফোনে কথা বলে চলেছেন। তিনি বলেন, 'আমি শুক্রবারও এবং শনিবারও খুব ব্যস্ত ছিলাম। কানাডা বাসীকে নিরাপদে রাখার জন্য বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমায় নিঃশব্দে করতে হবে।’ কানাডায় এখনও পর্যন্ত ১৩০টি নিশ্চিত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঘটনা সামনে এসেছে। যার জেরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সরকারি স্তরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসার ফলে সংক্রমণের আশঙ্কায় গত কয়েকদিনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক রাজনৈতিক নেতা স্বেচ্ছায় নিজেদের বন্দি করার পথ বেছে নিয়েছেন। এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাঁচ জন বর্ষীয়ান রিপাবলিকান নেতা এবং কানাডার পাঁচ জন ক্যাবিনেট মন্ত্রী আছেন।