ব্রিটেনের জেলেই মৃত্যু হতে পারে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ানের, দাবি ৬০ চিকিৎসকের
ব্রিটেনের জেলেই মৃত্যু হতে পারে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ানের, দাবি ৬০ চিকিৎসকের
উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত ব্রিটেনের জেলেই কারাবন্দী অবস্থায় মারা যেতে পারেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করে সোমবার ৬০ জন চিকিৎসক চিঠি লিখেছেন। তাঁরা জানিয়েছেন যে জুলিয়ানের শারীরিক অবস্থা মোটেও ভালো নেই। ৪৮ বছরের এই অস্ট্রেলিয়ানকে ব্রিটেন থেকে আমেরিকা নিয়ে আসার জন্য লড়ে চলেছে মার্কিন প্রশাসন। মার্কিনী জেলে তাঁকে গুপ্তচরবৃত্তির আইনে ১৭৫ বছর থাকতে হতে পারে। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব প্রীতি প্যাটেলকে চিকিৎসকরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে লন্ডনের বেলমার্শ কারাগার থেকে ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালে স্থানান্তর করা হোক।
চিকিৎসকরা লন্ডন আদালতে গত ২১ অক্টোবর 'প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ’ এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ নীল মেলজারের ১ নভেম্বর নির্যাতন সংক্রান্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে জুলিয়ানের রিপোর্ট তৈরি করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের এক স্বাধীন অধিকার বিশেষজ্ঞ বলেন, 'জুলিয়ানের স্বেচ্ছাচারিতার প্রকাশ এবং তার অপব্যবহার শীঘ্রই তাঁর জীবন কেড়ে নিতে পারে।’ জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে আফগানিস্তান ও ইরাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বোমা বিস্ফোরণ সম্পর্কে উইকিলিকসে প্রকাশ করেন। যা আমেরিকাকে অত্যন্ত লজ্জার মুখে ফেলে দেয়। যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাঁকে গুপ্তচরবৃত্তিসংক্রান্ত আইনে অভিযুক্ত করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
৬০ জন চিকিৎসক তাঁদের ১৬ পাতার চিঠিতে বলেন, 'জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা খুব গুরুতর উদ্বেগ থেকেই এই চিঠি লিখছি।’ তাঁরা জানিয়েছেন যে তাঁরা জুলিয়ানের স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে চলবে জুলিয়ানের গুপ্তচরবৃত্তি মামলার শুনানি। চিকিৎসকরা চিঠিতে বলেছেন, 'মিস্টার অ্যাসাঞ্জের এখন জরুরি ভিত্তিতে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। জেলের মধ্যে সেই চিকিৎসা হওযা সম্ভব নয়, আমরা সত্যিই খুব উদ্বেগে রয়েছি, কারণ সম্প্রতি আমাদের কাছে এমন এক প্রমাণ এসেছে যে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জেলের মধ্যেই মারা যেতে পারেন। তাই খুব জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন। সময় নষ্ট করার মতো সময়ও নেই।’ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, বিটেন, সুইডেন, ইটালি, জার্মানি, শ্রীলঙ্কা ও পোলাণ্ড থেকে চিকিৎসকরা এই চিঠি লিখেছেন।
গত মাসে আদালতে শুনানির সময় অ্যাসাঞ্জকে অনেক দুর্বল মনে হয়েছিল। তিনি ছ’মাস পর প্রথমবার জনগণের সামনে এসেছিলেন। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যখনই তাঁকে কথা বলতে বলা হয়েছিল তখনই তিনি বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছিলেন। এমনকী তিনি তাঁর জন্মের তারিখও ভুলে গিয়েছিলেন এবং আদালতে কি হচ্ছে তা তিনি বুঝতেও পারছিলেন না। বেলমার্শে তাঁকে যে পরিস্থিতিতে রাখা হয়েছে, সে সম্পর্কে তিনি অভিযোগ করেছিলেন শুধু। এ বছরের এপ্রিল মাসে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ইকিউডর দূতাবাস থেকে টেনে নিয়ে আসা হয়। সেটাই ছিল তাঁর প্রথম প্রকাশ্যে উপস্থিতি। সুইডিশ আইনজীবী গত মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন যে জুলিয়ানের ওপর ২০১০ সালে ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত আর করা হচ্ছে না, যদিও যিনি দাবি করেছিলেন তাতে বিশ্বাসযোগ্যতা ছিল।
I