লাগলো পাঁচটি ট্রাক! এই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর বাজেয়াপ্ত হওয়া সম্পত্তির পরিমাণ জানেন
শুক্রবার মালয়েশিয় পুলিশ জানিয়েছে সেদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে গয়না ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ বিভিন্ন বিলাসবহুল পন্য মিলেছে।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল শাসনকালে ৭০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আশঙ্কা করা হয়েছিল সেই মামলা এড়াতে দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন। তাই, গত সপ্তাহে নির্বাচনে হারের পরই মালয়েশিয়ায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ও তাঁর স্ত্রীয়ের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। শুক্রবার মালয়েশিয় পুলিশ জানিয়েছে তাঁর বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমাণে গয়না ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ বিভিন্ন বিলাসবহুল পন্য মিলেছে।
ঠিক কী তার পরিমাণ? জানলে চমকে যেতে হয়। জহরত এবং নগদে ঠাসা ৭২টি স্যুটকেস, বেশ কয়েকটি সিন্দুক, এবং প্রচুর ডিজাইনার হ্যান্ডব্যাগ, যেগুলির একেকটির দাম কয়েক হাজার ডলারও হতে পারে। পুলিশের দাবি সব সম্পত্তি নিয়ে যেতে তাঁদের পাঁচটি ট্রাক লেগেছে। কারণ এই ডিজাইনার ব্যাগ ভরা বাক্সই ছিল ২৮৪ টি। এর মধ্যে অনেকগুলিই বিশ্বখ্যাত ব্যাগ প্রস্তুত কারক সংস্থা 'হার্মিস'-এর। কমলা রঙের বাক্সগুলির কোনটার এপর লেখা ছিল, 'প্যারিস, এইচ ব্যাগ গ্রে ক্রোকো স্কিন হার্মিস' (অর্থাত প্যারিস থেকে কেনা হার্মিসের কুমীরের চামড়ার তৈরী ধুসর রঙের হ্যান্ডব্যাগ), আবার কোনটার ওপর লেখা ছিল, 'সুইজারল্যান্ড, ব্যাগ ব্লু ডায়মন্টে ক্রোকো স্কিন, হার্মিস' (অর্থাত সুইজারল্যান্ড থেকে কেনা নীল রঙের কুমীরের চামড়ার তৈরী হ্যান্ডব্যাগ)।
সেদেশের কমার্শিয়াল ক্রাইম ইনভ্স্টিগেশন ইউনিটের প্রধান অমর সিং বলেন, বাজেয়াপ্ত জিনিসপত্রের মধ্যে ২৮৪ টি ডিজাইনার হ্যান্ডব্যাগ ওয়ালা বাক্স আছে। এছাড়া, অনেক ব্যাগে রিঙ্গিত (মালয়েশীয় টাকা), মার্কিন ডলার, দামি ঘড়ি ও জুয়েলারি মিলেছে। এরকম প্রায় ৭২টি ব্যাগ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কাজেই মোট গয়নার পরিমাণ কত, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। গত কয়েকদিন ধরেই নাজিবের বাড়ি, অফিস ও অন্যান্য মালিকানাধীন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। নাজিবের বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ মালয়েশিয় সরকারের বিনিয়োগ তহবিল ওয়ানএমডিবি থেকে তিনি দেদার অর্থ নয়ছয় করেছেন।
মূলত এই দুর্নীতির অভিযোগেই মালয়েশিয়ার বর্ষীয়ান নেতা মাহাথির মোহাম্মদের কাছে নাজিব হেরে যান। যদিও তাঁর শাসনকালে মালয়েশীয় কর্তৃপক্ষ তাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছিল। আমেরিকার মতো কয়েকটি দেশ অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চালিয়ে গেছে। নির্বাচনের আগে বিরোধী জোট প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা ক্ষমতায় এলে নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্ত শুরু করবেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর, ১০ মে শপথ নিয়েই মাহাথিরের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার নাজিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পুনর্তদন্তের নির্দেশ দেয়।