দুই দিনেই চিনকে ছাপিয়ে যাবে ইতালি! পরিসংখ্যানে উঠে আসছে করোনার বিভীষিকাময় চিত্র
ইতালিতে ক্রমেই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ চিনকেও ছাপিয়ে যেতে চলেছে। প্রতিদিন প্রায় ৩০০-র উপর মানুষ মারা যাচ্ছে সেদেশে। এই পরিস্থিতিতে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে ইতালি। আর ইতালি থেকে গোটা ইউরোপে এখন করোনা মহামারীর আকার ধআরন করেছে। যা নিয়ে খুবই চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। আর প্রতিদনি ইতালি থেকে আসা করোনা সংক্রান্ত পরিসংখ্যান আরও বিভীষিকাময় চিত্র তুলে ধরছে।
তিন দিনে হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু ইতালিতে
গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত ইতালিতে করোনা সংক্রমণে আক্রান্তের মৃতের সংখ্যা ছিল ১৪৪১। এর তিন দিনের মধ্যেই সেদেশে এক হাজার জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ মার্চ সেদেশে করোনায় মারা যায় ৩৬৮ জন। ১৬ মার্চ সেদেশএ সংক্রমণে মারা যায় আরও ৩৪৯ জন। গতকাল, অর্থাৎ ১৭ মার্চ করোনা ভাইরাসের প্রকোপে প্রাণ হারান আরও ৩৪৫ জন। এর জেরে ১৭ মার্চ পর্যন্ত সেদেশে মৃতের সংখ্যা ২৫০৩। এই হারে চলতে থাকলে চিনকে ছাপিয়ে যেতে ইতালির আর মাত্র দুই দিন সময় লাগবে।
রোজ নতুন করে প্রায় ৩ হাজার জন সংক্রমিত হচ্ছে কোরনায়
এদিকে রোজই আরও নতুন সংক্রমিতের খোঁজ মেলায় করোনা রোখার বিষয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সরকার। প্রতিদিনিই ৩ হাজারের উপর নতুন সংক্রমিত যোগ হচ্ছে তালিকায়। ১৫ মার্চ নতুন করে সংক্রমিত হন ৩৫৯০ জন। ১৬ তারিখে সেই সংখ্যাটা ছিল ৩২৩৩। ১৭ মার্চ আরও ৩৫২৬ জন নতুন করে সংক্রমিত হন করোনায়।
খুব কম লোকই সুস্থ হয়ে উঠছেন ইতালিতে
এদিকে চিন্তার বিষয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হুহু করে বাড়লেও সেদেশের লোক সেরে উঠছেন না। গত তিন দিনে হাজারেরও কম জন সেরে উঠেছেন ইতালিতে। ১৫ মার্চ মাত্র ৩৬৯ জনকে সুস্থ হিসাবে ঘওষণা করা হয়। ১৬ তারিখ সেই সংখ্যাটা আরও একটি বাড়ে। সেদিন ৪১৪ জনকে সুস্থ বলে ঘোষণা করা হয়। তবে ১৭ তারিখ সুস্থ হন মাত্র ১৯২ জন। এখনও পর্যন্ত সেদেশে ৩১ হাজার ৫০৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। তার মধ্যে মাত্র ২৯৪১ জন সেরে উঠেছেন। এখনও ২০৬০ জন খুব খারাপ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বয়স্ক রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না
এদিকে এই পরিস্থিতি তে যারা আগে থেকেই অসুস্থ ও বয়স্ক রোগী, যাদের সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা খুব কম, তাদের চিকিৎসা না দিয়ে অপেক্ষাকৃত স্বাস্থ্যবান ও কম বয়সীদের চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যার জেরে মৃতের সংখ্যা আরও লাফিয়ে বাড়ছে ইতালিতে। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ইতালিতে সবচেয়ে বেশি বয়স্ক মানুষের বসবাস।
শীঘ্রই চিনকে ছাপিয়ে যাবে ইতালি
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটার এর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার গড়ে ৩.৬৯ শতাংশ। তবে ইতালিতে এ হার ৬.৭২ শতাংশ। চিনের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের সংখ্যাও ইতালিতে। তবে বর্তমান হারে চিনকে ছাপিয়ে যাবে ইতালি।
আরও বাড়বে আক্রান্তের সংখ্যা
ইতালিতে করোনা ভাইরাসে মৃদুভাবে আক্রান্ত হয়েছেন, এমন মানুষদেরকে শনাক্ত করা কিংবা আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত করা হয়নি। সেক্ষেত্রে প্রকৃত আক্রান্তের সংখ্যা জানা যাচ্ছে না। মারাত্মকভাবে আক্রান্তদের সংখ্যাই কেবল জানা যাচ্ছে। তাই আক্রান্তের যে সংখ্যার কথা বলা হচ্ছে, তার অনুপাতে মৃত্যু হার বেড়েই চলেছে।