হিজাব পরতে নারাজ মার্কিন সাংবাদিক, সাক্ষাৎকার বাতিল করলেন ইরানের প্রসিডেন্ট
হিজাব পরতে নারাজ মার্কিন সাংবাদিক, সাক্ষাৎকার বাতিল করলেন ইরানের প্রসিডেন্ট
বর্তমানে ইরানে হিজাব বাধ্যতামূলক আইনের প্রতিবাদে জোর বিক্ষোভ হচ্ছে। এই পরিস্থিতি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বিশ্বের জনপ্রিয় সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরকে সাক্ষাৎকার দিতে অস্বীকার করেছিলেন। ইরানের প্রেসিডেন্ট আমানপুরকে সাক্ষাৎকারের সময় হিজাব পরার শর্ত দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই শর্তে আমনপুর রাজি হননি। সেই কারণেই ইব্রাহিম রাইসি সাক্ষাৎকারের অনুষ্ঠানটি বাতিল করে দিয়েছেন।
সিএনএন-এর প্রধান আন্তর্জাতিক অ্যাঙ্কর আমানপুর নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের মাঝে মাঝে সাক্ষাৎকার নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে সাক্ষাৎকারের জন্য অনুরোধ করেন। সেই ইব্রাহিম রইসির এক সহযোগী তাঁকে মাথা ঢাকার কথা বলেন। তিনি বলেছিলেন, আমপুরকে সাক্ষাৎকার নিতে গেলে চুল ঢেকে রাখতে হবে। টুইটারে আমনপুরা লিখেছেন, এটা নিউ ইয়র্ক, এখানে মাথায় স্কার্ফ পরা বা হিজার পরার কোন ঐতিহ্য নেই। তাই আমি ইব্রাহিম রইসির সাক্ষাৎকার তিনি নিতে অস্বীকার করেন। আমানপুরার জন্ম ব্রিটিনে। তাঁর বাবা ইরানের নাগরিক ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
টুইটারে আমনপুর লেখেন, আমি আগেও ইরানের একাধিক নেতার সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তাঁদের সাক্ষাৎকার যখন আমি ইরানের বাইরে নিয়েছি, আমার চুল ঢাকার বা স্কার্ফ পরার কোনও প্রয়োজন পড়েননি। ইরানের আগের প্রেসিডেন্টরাও এই বিষয়ে জোর করেননি। ইরানি প্রেসিডেন্টের এক সহযোগী বলেছিলেন, দেশের পরিস্থিতির কারণে চুল ঢেকে যেতে হবে। আমি এই ধরনের প্রস্তাবে রাজি হইনি। এরপর আমপুরা একটি ছবি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি স্কার্ফ ছাড়া বসে রয়েছেন। তাঁর সামনে একটা খালি চেয়াপ রয়েছে। যেখানের ইরানের প্রেসিডেন্টর বসার কথা ছিল।
ইরানে এক তরুণীর মৃত্যুকে ঘিরে নতুন করে দেশ জুড়ে প্রতিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। হিজাব না পরার জন্য ইরানের নীতি পুলিশ এক তরুণীকে গ্রেফতার করে। ওই তরুণীর মৃত্যুর পর ইরানের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বিক্ষোভে মহিলারা হিজাব খুলে প্রতিবাদ দেখায়। সেখানে 'ইসলামিক গণতন্ত্রের মৃত্যু' বলে স্লোগান দিতে থাকেন। অনেক মহিলাকে রাস্তায় স্কার্ফ পোড়াতে দেখা যায়। আন্তর্জাতিক সংবাদসংস্থা জানিয়েছে, সোমবার ইরানে মহিলাদের বিক্ষোভের ওপর পুলিশ গুলি চালায়। ঘটনায় পাঁচ মহিলার মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ইরানের বেসরকারি সংবাদমাধ্যমগুলো অভিযোগ করেছে, ইরানে কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করেছে। পুলিশের অত্যাচারের জরে আটক হওয়া ৩৯জন বিক্ষোভকারীর মৃত্য হয়েছে। যদিও ইরানি প্রশাসন এই দাবি অস্বীকার করেছে।