প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, বিশ্বকাপে ইরানের খেলোয়াড় দেশের নাগরিকদের সমর্থন প্রতিবাদ করবেন?
দেশের জনগণের বিক্ষোভকে সমর্থন ইরানের ফুটবল দলের,
২২ বছরের ইরানি তরুণী আমিনির পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু হয়। সঠিকভাবে হিজাব না পরার কারণে আমিনিকে তেহরান পুলিশ গ্রেফতার করে। আমিনির পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন ইরানের বাসিন্দারা। ইরান জুড়ে বিক্ষোভ হয়। ইরানের প্রশাসন কঠোর হাতে এই বিক্ষোভ দমন করার চেষ্টা করে। কিন্তু ক্রমেই তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি ইরানের ফুটবল দল ও ফুটবল অনুরাগীরা ইরানের বিক্ষোভ সমর্থন করেছেন। যার জেরে আরও চাপে তেহরান প্রশাসন।
সেপ্টেম্বরে ইরানের সঙ্গে সেনেগালের একটি ফুটবল ম্যাচ ছিল। সেখানে ইরানের জাতীয় সঙ্গীতের সময় দেশের ফুটবল দলের সদস্যরা কালো জ্যাকেট পরেন। ইরানের নারী স্বাধীনতা ও বিক্ষোভকে সমর্থন করতে ফুটবল দলের সদস্যরা কালো রঙের জ্যাকেট পরেছিলেন। বিতর্ক এড়াতে ইরান প্রশাসন সেনেগালের সঙ্গে ফুটবল ম্যাচটি অস্ট্রিয়া স্থানান্তরিত করে। দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে করায়। তবে তারপরেও ইরানের ফুটবল দলের সদস্যদের আটকানো যায়নি। তাঁরা নানাভাবে দেশের মধ্যে চলা বিক্ষোভকে সমর্থন করেছেন।
ইরানের ফুটবল দলের কিংবদন্তি আলি করিমিও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিক্ষোভেপ সমর্থনে সোচ্চার হয়েছেন। সরদার আজমাউনও ইরানের বিক্ষোভ ও নারী স্বাধীনতাকে সমর্থন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট দেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পষ্ট জানান, ইরান প্রশাসনের লাল চোখকে তিনি মোটেও ভয় পান না। ইরানের ফুটবল দলের ডিফেন্ডার এহসান হাজসাফি ইংল্যান্ডের দলে খেলার আগে বলেন, তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে রয়েছেন। তিনি বলেন, বিক্ষোভকারীদের জানা উচিত আমরা তাঁদের সঙ্গে রয়েছি। আমরা তাঁদের দাবির সঙ্গে সহমত। সাংবাদিক সম্মেলনে হাজসাফি বলে, আমাদের অস্বীকার করার জায়গা নেই, আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতি ঠিক নেই। আমাদের দেশের জনগণ সুখী নয়। আমরা এখানে এসেছি মানে এই নয় আমারা তাঁদের সমর্থন করি না। আমরা বিক্ষোভকারীদের সমর্থন করি। আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি।
ইরানের ফুটবল দলের সদস্য করিম আনসারিফার্ড এবং মোর্তেজা পৌরালিগঞ্জি বিক্ষোভ সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন। ইরানের ফুটবল টিমের ম্যানেজার কার্লোস কুইয়েরোজ জানিয়েছেন, তাঁর দলের সদস্যদের দেশের বিক্ষোভকে সমর্থন জানানোর অধিকার রয়েছে। বিশ্বকাপে প্রত্যেকের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি আগে ম্যানেচস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে খেলতেন। ইরানের মিডফিল্ডার সামান ঘোদ্দোস বলেন, ইরানের পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিদিন আন্তর্জাতিক সতীর্থদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, 'যা হচ্ছে দেশে তাতে নাগরিকরা খুশি নয়। নাগরিকরা পরিবর্তন চান। দেশের মানুষের চাহিদা খুব সামান্য। কিন্তু সেটার আধিকার তাঁরা কবে পান, সেটাই দেখার।'