For Quick Alerts
ALLOW NOTIFICATIONS  
For Daily Alerts
Oneindia App Download

বিনিয়োগ: বাংলাদেশে কোন কোন খাতে পুঁজি রয়েছে ভারতের?

ভারত সফরে গিয়ে সেদেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু বাংলাদেশে এখন ভারতের কোন কোন খাতে কেমন বিনিয়োগ রয়েছে?

  • By Bbc Bengali

বাংলাদেশের বস্ত্রখাতে ভারতের ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ রয়েছে
BBC
বাংলাদেশের বস্ত্রখাতে ভারতের ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ রয়েছে

ভারত সফরে গিয়ে সেদেশের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদেশের একজন শীর্ষ শিল্প উদ্যোক্তার সঙ্গে আলাদা বৈঠকও করেছেন।

ভারতের সঙ্গে প্রতি বছর বাংলাদেশের ১০০০ কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে প্রতিবেশী দেশ হলেও বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ এখনো বেশ কম।

ভারতের বিনিয়োগ আসলে কতটা?

প্রতিবেশী দেশ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থাকার পরেও গত ৫০ বছরে ভারত বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে মাত্র ৬৫ কোটি ডলার।

আরও পড়তে পারেন:

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এক হাজার কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়ে থাকে
Getty Images
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এক হাজার কোটি ডলারের বেশি বাণিজ্য হয়ে থাকে

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের বিশাল ভূমিকা থাকলেও পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভারতীয় বিনিয়োগ আসেনি।

দেশটিতে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন খাতে ভারতের বিনিয়োগ আসতে শুরু করে।

কিন্তু গত ২৬ বছর ভারত থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ হয়েছে ৬৫২.৩৮ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় সাড়ে ৬৫ কোটি ডলার।

গত আর্থিক বছরে নতুন করে বিনিয়োগ এসেছে মাত্র দেড় কোটি ডলার।

রামপালের মতো বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পে ভারতের বিনিয়োগ রয়েছে
BBC
রামপালের মতো বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পে ভারতের বিনিয়োগ রয়েছে

এই পটভূমিতে ভারতের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশকে বিনিয়োগের সবচেয়ে উদার দেশ হিসাবে বর্ণনা করে তিনি এদেশের অবকাঠামো, শিল্প-কারখানা, জ্বালানি ও পরিবহন খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

কোন কোন খাতে ভারতের বিনিয়োগ?

বাংলাদেশের বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক আরিফুল হক বলছিলেন, বাংলাদেশের বস্ত্র, জুয়েলারি, কেমিক্যাল, ওষুধ, পাওয়ার, এগ্রোবেইজড ইন্ডাস্ট্রি, মেশিনারি - এই খাতগুলোতে ভারতীয় বিনিয়োগ রয়েছে।

'’আমরা আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে ভারতীয় বিনিয়োগ আরও বাড়বে। বিশেষ করে আইসিটি খাত, দক্ষতা উন্নয়ন এই খাতগুলোতে বিনিয়োগ আরও বাড়বে। যেহেতু দুই দেশের সম্পর্ক উত্তরোত্তর বাড়ছে, আমরা আশা করছি সেই সঙ্গে বিজনেস, ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট আরও ব্যাপ্তি পাবে,’’ তিনি বলছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক বিনিয়োগের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে ভারতের ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছেন। এই খাতে ভারতের বিনিয়োগ হয়েছে ১৭৮ মিলিয়ন ডলারের।

এরপরেই রয়েছে টেক্সটাইল খাত। সেখানে নানা ধরনের ভারতের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগ করেছেন ১২০ মিলিয়ন ডলারের

বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ রয়েছে ৯৫ মিলিয়ন ডলারের।

খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে ১৮ মিলিয়ন ডলার, বাণিজ্যে ১৪ মিলিয়ন ডলার, রাসায়নিক ও ওষুধ শিল্পে ২৯ মিলিয়ন ডলার, চামড়া শিল্পে ৩০ লাখ ডলার, কৃষি ও মৎস্য খাতে ৮০ লাখ ডলার, নির্মাণ খাতে ৪০ লাখ, বীমা খাতে ৭০ লাখ ডলার।

অন্যান্য খাতে ভারতের বিনিয়োগ রয়েছে ১৭২ মিলিয়ন ডলার, যার মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি, পণ্য পরিবহন, মোবাইল, ধাতব শিল্প, ভোজ্য তেল, সিমেন্ট, যন্ত্রপাতি, মোটরসাইকেল সংযোজন ইত্যাদি খাত রয়েছে।

কিন্তু বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতো বৈদেশিক বিনিয়োগ রয়েছে, তার মুলনায় ভারতের বিনিয়োগের হার মাত্র তিন দশমিক তিন শতাংশ। উৎপাদনমুখী খাতের চেয়ে বাণিজ্য খাতেই বেশি বিনিয়োগ রয়েছে।

বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ কেন এতো কম?

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট শোয়েব চৌধুরী বলছেন, "ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিনিয়োগের বিষয়টা এখন একটা আস্থার মধ্যে এসেছে। কিন্তু বিনিয়োগ হয়তো অনেক বাড়ছে না। এর পেছনে কতগুলো বিষয় রয়েছে।

"ভারত ও বাংলাদেশ - উভয় দেশেই বিনিয়োগে কিছু জটিলতা থাকে। তারাও এখানে এসে সেটা ফেস করে, আমরাও তাদেরও ওখানে বিনিয়োগ করতে গেলে সেটার মধ্যে পড়ি। মাইন্ড সেটের (মানসিকতার) কিছু বিষয় আছে। তাদের কিছু শর্ত থাকে, যা আমরা ঠিকভাবে কমপ্লাই করতে পারিনা, ফলে বিনিয়োগ বাড়ে না," বলছেন তিনি।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সানোমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান বলছেন, "শুধু ভারত নয়, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ কম। এমনকি যেসব দেশ-বিদেশি বিনিয়োগ করেছে, তারা সুনির্দিষ্ট কয়েকটি খাতে বিনিয়োগ করেছে। ভিয়েতনাম, কোরিয়ার মতো অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলনা করি, বাংলাদেশ কিন্তু সেভাবে বিদেশি বিনিয়োগ কখনো আকৃষ্ট করতে পারেনি।"

ড. রায়হান বলছেন, বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশী অন্যান্য দেশেও ভারতের বড় ধরনের বেশি বিনিয়োগ নেই। তারা বিনিয়োগ করেছে এই অঞ্চলের বাইরে। হয়তো রাজনৈতিক পরিস্থিতি, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ব্যবসার খরচ- ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে এক ধরনের দ্বিধা কাজ করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সম্পর্কের কারণে একসময় ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসতে স্বস্তি বা নিরাপদ বোধ করতেন না। কিন্তু গত কয়েক বছরে সেই প্রবণতা বদলেছে। এখন আস্তে আস্তে বিনিয়োগ বাড়লেও তারা বেশি গুরুত্ব দিতে শুরু করেছেন জ্বালানি, বাণিজ্যের মতো তুলনামূলক নিরাপদ খাতে।

এবছরের এপ্রিলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের সাথে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বিশেষ ভারতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির চুক্তি করে আদানি গ্রুপ-এর সাবসিডিয়ারি কোম্পানি আদানি পোর্টস। যেখানে ভারতীয় কোম্পানি পণ্য প্রাধান্য পাবে।

ভারতীয় বিনিয়োগের ওপর গুরুত্ব

প্রতিবছর ভারত থেকে বাংলাদেশে এক হাজার কোটি ডলার মূল্যে পণ্য আমদানি করা হলেও বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা হয় মাত্র দু'শ কোটি ডলারের। বড় এই বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কোন চেষ্টাই পুরোপুরি সফল হয়নি।

ভারতের সঙ্গে যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি বা সেপা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে, তার ফলে উভয় দেশ পণ্য প্রবেশে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।

অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, দ্বিপাক্ষিক মুক্ত বাণিজ্য এই ঘাটতি আরও বাড়িয়ে দেবে। আর সেখানেই ভূমিকা রাখতে পারে ভারতীয় বিনিয়োগ।

"এটাকে পূরণের একটা বড় টুল (উপায়) হতে পারে ভারতীয় বিনিয়োগকে বাংলাদেশে নিয়ে আসা। যদি সামনের দিনগুলোয় বিভিন্ন খাতে ভারতের বিনিয়োগ আসে, বাংলাদেশের জন্য একটা সহায়ক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করবে। বাণিজ্য ঘাটতির যে চাপটা থাকবে, সেটা কিছুটা কমাতে সহায়তা করবে," বলছেন ড. সেলিম রায়হান।

সানোমের নির্বাহী পরিচালক বলছেন, সেই আশঙ্কা থেকেই ভারতের বিনিয়োগ আনার ওপর জোর দিতে চাইছে বাংলাদেশের সরকার।

"কিন্তু সেজন্য ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে হবে যে, এখানে বিনিয়োগের পরিবেশ রয়েছে। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে। জমির প্রাপ্যতার নিশ্চয়তা, অবকাঠামোর উন্নয়ন- ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরতে হবে। ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করা গেলে তারা হয়তো এগিয়ে আসতে শুরু করবে। সেটা দুই দেশের জন্যই একটা উইন-উইন সিচুয়েশন তৈরি করবে," তিনি বলছেন।

ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে মোংলা এবং চট্টগ্রামে দুটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশের সরকার।

ভারত সফরে সেদেশের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানির সঙ্গেও আলাদা করে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে বৈঠককে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন ভারতের পর্যবেক্ষকরা। যার মাধ্যমে ভারতীয় বিনিয়োগ বাংলাদেশে আনার ব্যাপারে বাংলাদেশের আগ্রহের বিষয়টি ফুটে উঠেছে বলে তারা মনে করছেন।

English summary
Investment: Which sector of India has capital in Bangladesh?
চটজলদি খবরের আপডেট পান
Enable
x
Notification Settings X
Time Settings
Done
Clear Notification X
Do you want to clear all the notifications from your inbox?
Settings X